September 29, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

আপনি ‘অ্যাসেক্সুয়াল’ শ্রেণীতে পড়েন না তো ?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

মার বয়স তখন ২১। প্রেমিক আমার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে দিলো। কারণ আমি তার যৌন চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়নি। বিষয়টি এমন না যে সামাজিক মূল্যবোধের কারণে এমনটা করিনি। আমার আসলে কোনো আগ্রহই ছিল না। আগে আমি ভাবতাম যে আমার যৌন আকাঙ্ক্ষা অনেক কম। ইন্টারনেট থেকে জানি, এমন সমস্যা অনেক মানুষের রয়েছে যাকে বলা হয় ‘অ্যাসেক্সুয়াল’। নিজের অবস্থা বিবেচনা করে দেখেছি, আমি কখনোই প্রেমিকের সঙ্গে রোমান্টিকভাবে জড়িত ছিলাম না’। এভাবে এক অজ্ঞাত মহিলা যৌনতার প্রতি তার বিতৃষ্ণার কথা জানালেন।

এ বিষয়ে জানিয়েছেন ভারতের খ্যাতিমান সেক্সোলজিস্ট ড. প্রকাশ কোঠারি । বলেন, অ্যাসেক্সুয়াল ব্যক্তি তিনিই যিনি যৌন অনুভূতি অনুভব করেন না। এটি দুটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়- আকাঙ্ক্ষা এবং  উত্তেজনা। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে, এ দুটো বিষয়ের অনুপস্থিতি থাকে অ্যাসেক্সুয়াল মানুষের মধ্যে। অথচ এই মানুষগুলোর যৌনাঙ্গ পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারে। যৌন চাহিদা তাদের মাঝে তৈরি হয় না। মহিলাদের যোনিপথে কোনো অনুভূতি আসে না এবং পুরুষের যৌনাঙ্গে উত্তেজনা আসে না।

যত ভুল ধারণা : ‘দ্য ইনভিজিবল ওরিয়েন্টেশন: এন ইন্ট্রুডাকশন টু অ্যাসেক্সুয়ালিটি’ বইয়ে এ সংক্রান্ত নানা প্রচলিত ভুল ধারণার জানান দিয়েছেন জুলি সন্দ্রা ডেকার। অনেকেই মনে করেন, সঠিক মানুষটির দেখা পেলে এ সমস্যা চলে যায়। আসলে তা ঘটে না। যৌন আকাঙ্ক্ষা কম থাকার বিষয় নয় এটি। আবার একে মানসিক রোগ বলা যায় না। আবার কেউ ছোটকালে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার কারণেও যে এমনটা ঘটে তার কোনো প্রমাণ মেলেনি।

মানসিক অবস্থা : অনেক অ্যাসেক্সুয়ালের আবেগপ্রবণ অবস্থার প্রয়োজন হয়। এদের মধ্যে এক ধরনের মানুষ আছেন যাদের মধ্যে রোমান্টিক সম্পর্কের চাহিদা থাকে না। অনেকের কাছে মতের মিল না হলে এমনটা হয়। আবার অনেকে ভাবেন, সঠিক যৌনসঙ্গী না পেয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্গাজমের সময় অক্সিটোসিন হরমোনে ক্ষরণ ঘটে। এতে দুজনের মধ্যে আবেগগত সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। আবার দৈহিক অন্তরঙ্গতার অভাবে মানুষ মানসিকভাবে কাছাকাছি আসতে পারে না। সম্পর্কের অধঃপতনে দৈহিক অন্তরঙ্গতা অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে। অধিকাংশ অ্যাসেক্সুয়াল মানুষ সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চান না।

অ্যাসেক্সুয়ালিটির নানা ধরণ রয়েছে। এগুলো হলো-

১. ডেমিসেক্সুয়াল : এরা তারাই যারা কারো সঙ্গে সম্পর্কে জুড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অ্যাসেক্সুয়াল থেকে যান। পরে মানসিক বন্ধন তৈরি হয় এবং তারা যৌন অনুভূতি অনুভব করেন। সামাজিক অবস্থা এবং মানসিক অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের যৌন আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়।

২. গ্রাইসেক্সুয়াল : এ ধরনের মানুষ মাঝে মাঝে যৌন অনুভূতি অনুভব করেন। তারা যৌন বিতৃষ্ণা এবং যৌন আকাঙ্ক্ষার মাঝামাঝি কোনো স্থানে পড়ে যান। এরা আসলে সম্পর্কে জড়িত থাকা অবস্থাতেও যৌনতা খোঁজেন না। আবার এসব না করে তাদের কোনো আক্ষেপ নেই।

বিজ্ঞান যা বলে : কোথারি বলেন, মানুষে যৌন আকাঙ্ক্ষা অনুভব করেন না এমন মানুষদের সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো  ব্যাখ্য দিতে পারেনি বিজ্ঞান। তাই বলা যায়, কিছু মানুষ এমন বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম নেয়।

সচেতনতার অভাব : অ্যাসেক্সুয়ালিটি নিয়ে মানুষের সচেতনতার অভাব রয়েছে। এ সংক্রান্ত শিক্ষা গ্রহণ করা জরুরি। এমন মানুষরা যৌন অনুভূতির সঙ্গে সুপরিচিত নন। তারা এতে অস্বস্তিবোধ করেন। অনেক সময় নিয়ে ভুল চিন্তা করে বসেন। এ অবস্থাকে গ্রহণ করে নিয়ে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

Related Posts

Leave a Reply