November 22, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

চমকে যাবেন বিস্ময় নগরী দুবাই এর এই সত্যি জেনে !

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

সারা বিশ্বে দুবাই পরিচিতি লাভ করেছে উঁচু উঁচু বিল্ডিং, নামী-দামী গাড়ি, বাড়ি এবং তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য। বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের ধারণা দুবাই একটি দেশ। কিন্তু আসল কথা হলো দুবাই কোনো দেশ না।

এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি শহরমাত্র। মধ্য প্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত এই শহরটির এমন অনেক বিষয়ই রয়েছে যেগুলো সাধারণ মানুষের একেবারেই অজানা। স্বপ্নের দুবাই সম্পর্কে চমকপ্রদ সব তথ্য নিয়েই আজকের ফিচার-

দুবাই। এ যেন এক বিস্ময় নগরী। চাকচিক্য আর বিলাসিতার অপর নাম। আপনারা ভিডিওর শুরুতেই জেনে গেছেন যে দুবাই কোনো দেশ নয়। এবার জানুন আরেকটি তথ্য দুবাই কিন্তু আরব আমিরাতের রাজধানীও নয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী হচ্ছে আবুধাবি।

আর দুবাই বিশ্বের সেরা পাঁচ পর্যটন নগরীর একটি। দুবাইয়ের রাস্তাঘাট খুবই উন্নত। এর জন্য দুবাই এর রাস্তায় আপনি সব সময় দামি অত্যাধুনিক গাড়ি দেখতে পাবেন। যেমন ল্যাম্বরঘিনি, ফেরারি, বিএমডাব্লিউ ইত্যাদি।

যেখানে অন্য দেশে ২/১ টা স্টেশন তৈরি করতে বছরের পর বছর পার হয়ে যায় সেখানে দুবাই মাত্র ১৮ মাসে ৪২ টি মেট্রো স্টেশন তৈরি করেছে। দুবাইয়ের ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টটি পৃথিবীর তৃতীয় ব্যস্ততম এয়ারপোর্ট।

আরব সাগরের গা ঘেঁষা এই শহরের একটি তথ্য আপনাকে চমকে দেবে। সেটি হচ্ছে- দুবাই শহরে কোন অপরাধ সংঘটিত হয় না বললেই চলে। জিরো ক্রাইম সিটি হিসেবে দুবাইর রয়েছে দারুন সুনাম। এটিকে পৃথিবীর অন্যতম নিরাপদ শহর মনে করা হয়। তাছাড়া দুবাই এর আইনকানুনও খুব কড়া।

ইসলামী আইনের বেশ বাস্তবায়ন আছে। অবশ্য দুবাইয়ের মানুষ নৈতিকভাবেই উত্তম চরিত্রের অধিকারী। আর দুবাইতে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালানো প্রায় অসম্ভব। কারণ, দুবাই পুলিশের ভাঁড়ারে রয়েছে ল্যামবর্ঘিনি, বেন্টলি এবং ফেরারির মতো ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস গাড়ি।

গৃহিণীর জন্য ১৫ হাজার মার্কিন ডলারের উপহার কিনতে হবে? হাতে সময়ও নেই? চিন্তিত হওয়ার কিচ্ছু নেই। এই দেশে আছে গোল্ড এটিএম। হ্যাঁ, ঠিক বলেছি সোনা। সেই এটিএম-এ টাকা ঢোকালেই মিলবে দামি গয়না ও সোনার ঘড়ির মতো জিনিস।

আপনি যদি পৃথিবীর সবথেকে বৃহৎ আকৃতির স্বর্ণের চেইন দেখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে দুবাইতে যেতে হবে। এটি ১৯৯৯ সালে প্রায় ৯,০০০ মানুষের মালিকানায় তৈরি করা হয়। এটি লম্বায় প্রায় ৪ কিলোমিটার।

এটা সবারই জানা যে পৃথিবীর সবথেকে বড় টাওয়ারগুলো দুবাইতে অবস্থিত। তার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু হল বুর্জ খলিফা। এটি উচ্চতায় ২,৭১৭ ফুট লম্বা। এখানেই রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচুতম মসজিদ, রেস্টুরেন্ট, হোটেল-মোটেল ও নাইট ক্লাবসহ নানান ডিপার্টমেন্ট।

আরব দুনিয়ার এই দেশের এক শীর্ষ মৌলবির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের উচ্চতম বিল্ডিং বুর্জ খলিফার ৮০ তলার উপরে যারা বাস করেন তাদের রমজানের সময় অতিরক্তি ২-৩ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় ইফতারের জন্য। কারণ, উঁচুতে সূর্যকে বেশ কিছুক্ষণ দেখতে পান তাঁরা।

টাকা খরচ করলে যে পৃথিবীতেও চাঁদ নামিয়ে আনা যায় তা মিডেল ইস্ট এর দেশগুলোকে না দেখলে বুঝা যেত না। দুবাইতে ২২,৫০০ মিটার জায়গা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে আর্টিফিসিয়াল আকাশ। চারদিকে তারায় পরিপূর্ণ এক নয়নাভিরাম অবস্থা।

এছাড়াও রয়েছে অতি প্রাকৃতিক একটি স্নো পার্ক। ৩০০০ মিটার জায়গা জুড়ে তৈরি এই পার্কে আপনি ইচ্ছে করলেই ঘুরে বেড়াতে পারবেন মনের আনন্দে। দুবাইতে বাস করতে হলে আরবি শিখতে হবে না। ইংরেজি এই শহরে একটি খুব সাধারণ কথ্য ভাষা।

রিজার্ভে প্রায় ৪ বিলিয়ন ব্যারেল তেল রয়েছে দুবাইএ! এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রিজার্ভ। যদিও এই পরিমাণটি অনেক, তবে পরবর্তী ২০ বছরে এটি শেষ হয়ে যাবে। দুবাই প্রতিদিন ১১২.৫ মিলিয়ন লিটার তেল উৎপাদন করে। এটি ২ কোটি ৯৭ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ গ্যালন তেল সমান।

এ পরিমান তেল ধারণ করতে পাঁচটি অলিম্পিক সুইমিংপুল লাগবে। যা এক প্রকার অবিশ্বাস্য! পৃথিবীতে এমন কোন দেশ পাওয়া দূরহ যেখানে ইনকাম ট্যাক্স দিতে হয় না। দুবাইতে যত খুশি উপার্জন করা যাবে কিন্তু কোন ট্যাক্স দিতে হবে না। এজন্যই দুবাইয়ের মানুষের জন্য বড়লোক হওয়া খুব সহজ কেননা সরকার কোন বাধ্যবাধকতা আরোপ করে না কারো আয়ের উপর।

দুবাই কেনাকাটা করার জন্য বিখ্যাত। দুবাই মল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শপিং সেন্টার। এতে ৫,৪০০,০০০ বর্গফুট এলাকা এবং ১২০০ এর বেশী স্টোর রয়েছে। এখান থেকে আপনি প্রায় সবকিছু কেনাকাটা করতে পারেন।

দুবাইএ বিলাসবহুল গাড়ির কবরস্থান আছে। ফেরারী, পোর্শে, জাগুয়ার, অডি, বিএমডব্লিউ এই বিরল গাড়িগুলো পাওয়া যাবে পরিত্যক্ত অবস্থায়। বিস্ময়করভাবে, আপনি এখনও সেই গাড়িগুলোর ইগনিশনে চাবিগুলো ঝুলে আছে দেখবেন।।

দুবাই এ একটি কৃত্রিম দ্বীপ আছে। অবাক হলেন? না, আমি মজা করছি না। এর নাম পাম জুমিরাহ। এটা পারস্য উপসাগরের মধ্যে নির্মিত। এই দ্বীপটি এত বিশাল যে এটি মহাকাশ থেকে দেখা যায়।আপনি হয়তো মনে করেন দুবাইতে অ্যালকোহল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ কারণ এটি একটি মুসলিম দেশ।

কিন্তু না, যদি আপনি অ্যালকোহল লাইসেন্স পান তবে এই শহরটি আপনাকে পান করতে দেবে। যদিও কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সটি সবসময় পরীক্ষা করে না। তাই প্রাপ্তবয়স্ক যে কেঊ এখানে মদ্যপান করতে পারে। শুধু মাতাল হয়ে কোন গন্ডগোল না করলেই হল। না হলে বড় বিপদে পরবেন।

আপনি কি কখনও কোন ড্রাইভারহীন ট্যাক্সি ডেকেছেন যা আপনার বাড়ির দোরগোড়ায় আসে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড়তে শুরু করে? মনে হয় না। দুবাই এই সেবা চালু করা প্রথম দেশ। এটি মূলত একটি দুই আসন বিশিষ্ট ড্রোন ট্যাক্সি যা যাত্রীকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আকাশ পথে নিয়ে যাবে।

এটা শুনে অবাক হবেন যে, দুবাইয়ে বসবাসকারী জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ভারতীয় নাগরিক। তথ্যমতে দুবাই শহরে মাত্র ১৭% লোক হল প্রকৃত দুবাইয়ের নাগরিক। আর বাদবাকি সব বহিরাগত। বাংলাদেশেরও অনেক শ্রমিক দুবাইতে রয়েছেন।

দুবাইকে বালির শহরও বলা হয়। দুবাইতে প্রচুর পরিমান বালি থাকার কারণে সেখানে উট চলতে দেখা যায়। সেখানকার মানুষ প্রায়ই উঠ দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু মজার বেপার হলো সেখানে রোবট চালিত উট দেখা যায়। মাঝে মধ্যে উট যখন দিশাহীন হয়ে পরে তখন উটকে সঠিক দিশা দেখাতে এবং শান্ত করতে এই রোবটিকে ব্যবহার করা হয়।

ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য দুবাই একটি বিশেষ শহর। তাই অধিকাংশ মানুষ দুবাইয়ে কাজকর্মের জন্য নিজের দেশ থেকে পারি দেয়। আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে দুবাইয়ে মাত্র ২০ শতাংশ জনগণই প্রকৃত পক্ষে দুবাইয়ের বাসিন্দা।

আর বাকি ৮০ শতাংশ জনগণই অন্য দেশের। অধিকাংশ মানুষ মনে করেন যে দুবাই এর অর্থনীতি তেলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে দুবাই এর মাত্র ৭ থেকে ৮ শতাংশ ইনকাম তেল থেকে আসে।  আর বাকিটা আসে ব্যবসাবাণিজ্য এবং পর্যটকদের থেকে।

দুবাই এর ধনী ব্যক্তিরা বনের পশুদের পোষ মানতে ভালোবাসেন। সিংহ এবং চিতাবাঘকে তারা নিজেদের সাথে নিয়ে রাস্তায় ঘোরা ফেরা করেন। সেখানকার ধনী বেক্তিরা উদার মনের হয়ে থাকে যার কারণে প্রকৃত অর্থে যারা গরিব তাদেরকে বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে বিল্ডিং বেশি তৈরি করা হয় দুবাইয়ে। এবং প্রচুর পরিমান তেলের খননও করা হয় সেখানে। তাই ধারণা করা হয় পৃথিবীর ২৫ শতাংশ ক্রেন এই দুবাইয়ে ব্যবহার করা হয়।

Related Posts

Leave a Reply