সহকর্মীর টিফিন চুরি, পরের ঘটনায় তাজ্জব বনে যাবেন!

কলকাতা টাইমস :
চিংড়ি আর ফ্রায়েড রাইস। তা দিয়েই টিফিন। সেই টিফিন রাখা ছিল অফিসের ফ্রিজে। দিনে দুপুরে সেই টিফিনই চুরি হয়ে গেছে। কিন্তু সেই টিফিন কে চুরি করেছেন, আর তার পর যা ঘটেছে, সেই ঘটনা জানলে আপনিও তাজ্জব বনে যাবেন।
আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসের কমেডিয়ান জ্যাক তোস্কানি পুরো ঘটনার লাইভ বিবরণ দিয়েছেন টুইটারে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে গেছে।
কিন্তু ঠিক কী ঘটেছে? জ্যাকের এক সহকর্মী চিংড়ি-ফ্রায়েড রাইস অর্ডার দিয়েছিলেন। ডেলিভারি হওয়ার পর সেই খাবার প্লাস্টিকের টিফিন বক্সে ঢুকিয়ে রেখেছিলেন অফিসের ফ্রিজে। কিন্তু দুপুরে খাবার সময় ফ্রিজ খুলে তিনি দেখেন, তার লাঞ্চবক্স উধাও। হন্যে হয়ে খুঁজেও তিনি তা পাননি।
অফিসে সবার কাছে জানতে চাইলেও, কেউই তার টিফিন চুরির কথা স্বীকার করেননি। কেউ টিফিন দেখেননি বলেই দাবি করেন। অথচ ঘণ্টা খানেক আগেই তিনি সেই বাক্সটি রেখেছিলেন।
পরে অফিসের নিরাপত্তারক্ষীরা জ্যাকের সহকর্মীকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখাতে রাজি হন। সেখানে দেখা যায়, অন্য একজন মহিলা সহকর্মী সেই টিফিন চুরি করছেন। কিন্তু সেখানেই গল্পে আসে টুইস্ট।
ঘটনাক্রমে সেই মহিলা সহকর্মী বসেন জ্যাকের পাশেই। ক্যামেরায় ওঠা ছবিতে দেখা যায়, সেই মহিলা ফ্রিজ থেকে ফ্রায়েড রাইসের বাক্সটা বের করছেন।কিন্তু অদ্ভুতভাবে তিনি ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে নিজে তা খাননি। তিনি ডাস্টবিনে ফেলে দেন খাবারটি। যার টিফিন চুরি হয়েছিল, তিনি বিষয়টি দেখে অবাক হয়ে যান।
যখন এটা জানাজানি হয়, ততক্ষণে সেই মহিলা সে দিনের মতো বাড়ি চলে গেছেন। যার টিফিন চুরি হয়েছিল, তিনিও আর কোনো অভিযোগ দায়ের করতে চাননি। তবে অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়ে রাখেন। সেখানেই ঘটনাটি শেষ হয়নি। গল্পে আসে আরো টুইস্ট।
সঙ্গে সঙ্গে এইচআর থেকে প্রত্যেক কর্মীকে ইমেইলে জানানো হয়, এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু ভবিষ্যতে যেনো টিফিন চুরির মতো ঘটনা না ঘটে।
এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু জ্যাক ও তার সহকর্মীরা সেই মহিলার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। পরের দিন যখন সেই মহিলা অফিসে আসেন, তখন গোটা অফিসেই চাপা উত্তেজনা। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেই মহিলা সহকর্মী ইমেইল খুলে এইচআর-এর বার্তা দেখে নিজেই অবাক হয়ে যান। নির্বিকার চিত্তে তিনি বলে ওঠেন, ও বাবা! কেউ আবার টিফিন চুরি করেছে নাকি! এরকম কাজ কে করতে পারে?
জ্যাক বলেন, তখন তার ঘর ছেড়ে ছুটে বেরিয়ে যেতে ইচ্ছে করছিল। যার টিফিন চুরি গিয়েছিল, তিনি তো দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার কাজে মন দেন। এরপর জ্যাক মজা করার জন্য তিন জনের জন্য সেই চিংড়ি-ফ্রায়েড রাইস অর্ডার দেন। এক প্লেট খেতে দেন সেই মহিলা সহকর্মীকে। আমি চিংড়ি ফ্রায়েড রাইস খেতে বড় ভালবাসি বলে তিনি দিব্যি সাবাড় করে দেন সেই খাবার।
দুর্ভাগ্যের বিষয় জ্যাক বা তার ‘আক্রান্ত’ সহকর্মী কেউই আর জানতে পারেননি, কেন ওই মহিলা টিফিন চুরি করলেন এবং খেলেন না। টিফিন-চুরি কাণ্ড নিয়ে জ্যাকের এই রুদ্ধশ্বাস লাইভ টুইট তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছেন তার ফলোয়াররা। তবে রহস্যের পুরো কিনারা না হওয়ায়, অনেকেই হতাশ।
জ্যাক শুধু বলছেন, ভাবতে পারেন, একজন ঠাণ্ডা মাথার টিফিন-চোরের পাশে বসে আমাকে সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করতে হয়!