সিঁদুর থেকে ট্রাফিক, লাল মানেই নিষেধ আর নিষেধ, কেন জানেন?
কলকাতা টাইমস :
আবহমানকাল ধরে আমরা লাল রংকে নিষেধের রং হিসেবে জেনে এসেছি। জেনে এসেছি, লাল দেখলে থেমে যেতে হয়। ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে খেলার মাঠের লাল কার্ড, সিঁদুর থেকে অপারেশন থিয়েটারের লাল আলো— সর্বত্রই নিষেধ আর নিষেধ। কীভাবে লাল রং আর নিষেধ একাকার হয়ে গেল, সে কাহিনিকে দেখা যাক।
• লাল রং ‘চরম’-এর প্রতীক। আবার একই সঙ্গে লাল প্যাশন, যৌনতা, ভায়োলেন্স, রাগ ইত্যাদিরও প্রতীক। কিন্তু সব কিছুকেই ছাপিয়ে যায় লালের নিষেধ-প্রতীক।
• রক্ত এবং আগুন— এই দুইয়ের লালবর্ণকে লক্ষ করত আদিম মানুয। সে দেখেছিল, রক্তপাত মনুষকে মেরে পেলতে পারে। সে দেখেছিল, লাল আগুন সব কিছুকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে। লাল সম্পর্কে তার একটা সমীহ গড়ে ওঠে।
• আদিম মানুষ এ-ও দেখেছিল নারীর ঋতুকাল সহবাসের পক্ষে অযোগ্য এক সময়। আর রক্তের অনুষঙ্গে অবশ্যই লাল রংকেই মনে পড়েছিল তার।
• আদিম সমাজে উর্বরাশক্তির কাল্টই প্রচলিত ছিল ‘ধর্ম’ হিসেবে। ফলত, ঋতু-সংক্রান্ত ভাবনা অন্যত্রও প্রযুক্ত হতে শুরু করে। লাল রংও ছড়িয়ে পড়ে নিষেধের অনুজ্ঞা নিয়ে।
• লালকে একটা সীমানা-চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয় আদিকালেই।
• সেই সীমানা অতিক্রম করলে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে, এমন এক বার্তা অঘোষিতভাবে বলা থাকে।
• ক্রমে লাল হয়ে ওঠে সর্বজনমান্য বিপদের রং।
• গণপতি কাল্টে গণেশের লাল গাত্রবর্ণের পিছনেও এই নিষেধের বিষয়টাই কাজ করছে। আদিকালে গণেশ সিদ্ধিদাতা নন, ‘বিঘ্নকারী’ হিসেবেই চিহ্নিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন দার্শনিক দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়-সহ অসংখ্য বিদ্বজ্জন। সেকারণেই গণপতিকে লাল রঙে চিহ্নিত করার প্রথা শুরু হয়।
• লাল এসে বসে বিবাহিতা মহিলাদের সিঁথিতে। এই মহিলা তার স্বামী ব্যতীত অন্যের কাছে কাম্য নয়— একথা জানাতেই সিঁদুরের উৎপত্তি বলে জানাচ্ছেন নৃতত্ত্ববিদরা।