রাগও ভীষণ উপকারী, কখন জানেন ?
কলকাতা টাইমস :
রাগ হলে আপনি কী করেন? বিভিন্ন উপায়ে রাগ প্রকাশ করেন নাকি মনের ভেতর সেই রাগ পুষে রাখেন? রাগকে ক্ষতিকর বিষয় বলেই আমরা অনেকে মনে করি। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাগ সব সময় খারাপ নয়। কখনো কখনো রাগ উপকারী বিষয়ও হয়ে উঠতে পারে। তবে সে জন্য জেনে রাখতে হবে রেগে যাওয়ার এবং তা প্রকাশ করার সঠিক উপায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বিশ্বখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টোটল বলেছিলেন, ‘যে ব্যক্তি সঠিক বিষয়ের ওপর এবং সঠিক ব্যক্তির ওপর ও আরও স্পষ্টকরে বলতে হলে সঠিকভাবে প্রয়োজনমতো বিষয়ের ওপর রেগে যায় তিনি প্রশংসিত হন।’
রাগ বনাম আগ্রাসন
রাগ কথাটি সঠিকভাবে কোনো উদ্দেশ্য বহন করে না। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি আপনার হৃদযন্ত্রকে ঝুঁকির মাঝে ফেলে। রাগের কারণে আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি যেমন বাড়ে তেমন শরীর দুর্বল হয় ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে। এ কারণে রেগে গেলে আপনার শুধু মন নয়, শরীরও খারাপ হতে পারে। তবে রাগ ও আগ্রাসন দুটি ভিন্ন বিষয়। আগ্রাসন মূলত রাগের থেকে কিছুটা ভিন্ন। আপনি কারো ওপর বিরক্ত হয়ে যদি এমন সব কাজ করেন যা সঠিক নয়, তা আগ্রাসনে পরিণত হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর রাগ
রাগ কখনো কখনো ভালো হতে পারে। যেমন আপনি পরীক্ষায় ফেল করে রেগে গিয়ে ভালো করে পড়াশুনা করলেন এবং ভালো রেজাল্ট করলেন। আর তাই রাগের প্রতিক্রিয়ার ওপরেই বহু বিষয় নির্ভর করছে।
অল্প পরিবর্তনেই বড় পার্থক্য
আপনার যদি রেগে যাওয়া অভ্যাস থাকে তাহলে তা সঠিক উপায়ে ব্যবহার করুন। সামান্য পরিবর্তনেই এ রাগ ব্যবহার করে আপনি উপকৃত হতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেগে থাকলে আপনার কোনো মেইল কিংবা মেসেজ লেখা উচিত নয়। কারণ এটি অন্যদের দুঃখের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া রেগে যাওয়ার সঙ্গে মৃত্যুর হারেরও সম্পর্ক রয়েছে। আর তাই রেগে গেলেও তা যেন নিয়ন্ত্রণের মাঝে থাকে সে জন্য মনোযোগী হতে হবে।
আপনার রাগ কি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে?
রেগে গেলে আপনার নার্ভাস সিস্টেম থেকে শক্তিশালী রাসায়নিক নির্গত হয়। আর এতে হৃৎস্পন্দন যেমন বেড়ে যায় তেমন শ্বাস-প্রশ্বাসও দ্রুত হয়ে যায়। এ ছাড়া রক্তচাপ বাড়ে এবং মাংসপেশিও টানটান হয়। তবে এ প্রক্রিয়াগুলো যদি নিয়ন্ত্রণের মাঝে না থাকে তাহলে তা আপনার ক্ষতি করতে পারে। এ ক্ষেত্রে কী করা উচিত?
প্রথমেই জেনে রাখা উচিত আপনি কী রেগে যান? এ ক্ষেত্রে জেনে নিতে হবে আপনার সঙ্গীরা কী বলেন। তারা যদি বলে আপনি রাগী ও বিরক্তিকর তাহলে বুঝতে হবে এ ক্ষেত্রে আপনার সমস্যা রয়েছে।
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আপনি অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ প্রয়োগ করেন কিংবা এমন সব কর্মকাণ্ড করেন যা অন্যরা আশা করে না।
আপনার সম্পর্ক ভেঙে যায়। যার অন্যতম কারণ আপনার রাগ।
রাগের কারণে আপনার চাকরিতেও সমস্যা হয়।
যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন
১. রেগে গেলে কোনো কাজ করার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।
২. কী কারণে আপনি শান্ত হবেন? কারণ আপনার হঠাৎ করে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা ভুল হতে পারে। আপনার হয়ত সব তথ্য জানা নেই।
৩. যার ওপর আপনি রাগছেন, তিনি কি সঠিকভাবে কাজের জন্য দায়ী? এটি কি আপনার দায়িত্ব?
৪. লিখে রাখুন। কী কারণে আপনি রেগে গিয়েছেন, তা ভাবুন।
৫. আপনার এ রাগের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী কোনো বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন। একটি সময়সীমা নির্দিষ্ট করুন