আদা আছে তো, উচ্চ রক্তচাপকে ভয় কিসে
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
রোগ হওয়ার জন্য এখন আর কোনও বয়স লাগে না। আমাদের জীবনযাত্রা, খাওয়াদাওয়া সবকিছুর অনিয়মে রোগ আমাদের ভিতরেই বাসা বেঁধে আছে। একটা সময় ছিল, যখন নিয়ম মেনে খাওয়া, ঘুম সবকিছুই হতো। সময় পাল্টেছে। পাল্টেছে ব্যস্ততার ধরন, পাল্টেছে জীবনযাত্রা। আর তাই কখনও হাজার কাজে নিজেকে ডুবিয়ে রাখা, আবার কখনও কেরিয়ারের পিছনে ইঁদুরদৌড়ে সামিল হতে গিয়ে আমরা রোগভোগে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছি। অসময়ে খাওয়া এবং ঘুমের কারণে ওজনবৃদ্ধি তো খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এর সঙ্গে হাত ধরে আসে আরও দুরারোগ্য সব শারীরিক সমস্যা। যেমন- উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার। উচ্চ রক্তচাপের ফলে রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়। এর ফলে চাপ পরে হৃদযন্ত্রের ওপরে। ফলে সম্ভাবনা বাড়ে হৃদরোগ এবং কিডনির অসুখের। যার অনিবার্য পরিণতি মৃত্যু।
সাধারণভাবে রক্তচাপের পরিমাণ ১২০/৮০ হওয়া উচিৎ। এর থেকে বেশী রক্তচাপের পরিমাপ হওয়া মানেই তা উচ্চরক্ত চাপ। বিদেশে তো বটেই, এদেশেও বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রত্যেকেই তাই বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে সাধারণ মানুষকে এই ঘাতক রোগের সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল করার চেষ্টা করছে। উচ্চরক্ত চাপের প্রধান কারণ হল অতিমাত্রায় অ্যালকোহল সেবন করা, নুন বেশী পরিমাণে খাওয়া, দুশ্চিন্তা, ঘুমের অভাব প্রভৃতি। এখন যুবসমাজের মধ্যেও উচ্চ রক্তচাপ একটি সাধারণ ঘটনা। কারণ হিসাবে অবশ্যই অনয়মিত জীবনযাত্রা এবং হাইপার টেনশন। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে যেমন আমাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করা দরকার, তেমনি দরকার যখন তখন ইচ্ছামতো ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস বদলানো। আমাদের চারপাশে এমন বহু ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ উপাদান আছে, যার দ্বারা আমরা বহুরকম রোগকে সহজেই বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে পারি। আর তার মধ্যে অন্যতম হল আদা।
আদায় একাধিক ভেষজ গুণ রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সঙ্গে রক্ত প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখে এবং রক্তনালীর চারিপাশে থাকা পেশী মজবুত করতে সাহায্য করে। সেই কারণেই তো আদার ব্যবহার আমাদের দেশ তথা এশিয়া মহাদেশে সেই প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। আদাকে ব্যবহার করে কিভাবে উচ্চ রক্তচাপের মতো ঘাতককে নির্মূল করবেন, তার হদিশ থাকল আজ থাকল বোল্ডস্কাই বাংলায়। তাহলে আর অপেক্ষা কেন দেখে নেওয়া যাক, কিভাবে আদার সাহাজ্যে বানাতে হয় বিভিন্ন জীবনদায়ী ঘরোয়া ওষুধ।
১. আদা এবং হলুদ মিশ্রিত চাঃ এই বিশেষ চায়ে হলুদ থাকার জন্য এটি কারকুমিন সমৃদ্ধ, যা আমাদের রক্তনালী এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে এটি হাইপার টেনশনের মতো সমস্যারও নিবারণ করে।
উপাদান:
১. একটি ছোট গ্রিন টি-এর ব্যাগ।
২. এক চা চামচ আদার রস।
৩. চার ভাগের এক ভাগ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো।
৪. এক চা চামচ মধু।
পদ্ধতিঃ
১. একটি কাপে গ্রিন টি মেশান।
২. গ্রিন টি- এর সঙ্গে আদার রস এবং হলুদ গুঁড়ো মেশান।
৩. মধু মেশান।
৪.প্রতিদিন এই চা পান করলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দূর হবে।
২. আদা, বিট, সেলেরি পাতা এবং আপেলের রস: বিট নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন করতে পারে, যা রক্তনালীর প্রসারণে সাহায্য করে। সেলেরি পাতায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় এটি অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীর থেকে দূর করে। আর আপেলে ক্যুয়েরসেটিন থাকে, যা হাইপার টেনশন রোধ করে।
উপাদান:
১. ১/২ ইঞ্চি আদা
২. একটি বিট
৩. একটি আপেল
৪. চারটি সেলেরি স্টক পদ্ধতি: ১. আদা, বিট এবং আপালের খোসা ছাড়িয়ে নিন।
২. ব্লেন্ডারে সেলেরির সঙ্গে আদা, বিট এবং আপেল বেটে নিন।
৩. মিশ্রণটি ছেঁকে নিতে হবে
৪. প্রতিদিন এটি পান করতে হবে।
৩. আদা এবং এলাচ: গবেষণায় দেখা গেছে যে এলাচ হাইপার টেনশনের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকরী। আর এর সঙ্গে আদা মেশানোতে এটি আরও গুনসম্পন্ন হয়ে ওঠে।
উপাদান: ১. ১ টেবিল চামচ ভাঙা এলাচের দানা।
২. ২-৩ টেবিল চামচ কোরানো আদা।
৩. ১ টেবিল চামচ কালো চা। ৪. ১ কাপ জল। পদ্ধতি: ১. উপরোক্ত সমস্ত উপাদান একসঙ্গে এক কাপ জলে মেশাতে হবে।
২. তৈরি করা তরলটি ছেঁকে নিতে হবে। ৩. একটু মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে মধুও মেশাতে পারেন।