ওজন হোক বা ডায়াবেটিস দুটোই পালাবে এই এক গ্লাস জলেই
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
পাঁচফোড়ন এর মধ্যে এক ফোড়ন হল মেথি। খাবারের গন্ধ আর স্বাদ বাড়াতে এমন কোনও তরকারি নেই যাতে মেথির ব্যবহার হয় না। তবে শুধু স্বাদ বা গন্ধ নয়, মেথির স্বাস্থ্য উপকারিতা অঢেল। তবে কখন এবং কীভাবে গ্রহণ করলে মেথি আমাদের শরীরের জন্য উপকারি হবে তা জানাটা খুবই জরুরী।
এই ভেষজ গাছ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, দক্ষিণ ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার কিছু অংশে পাওয়া যায়। রান্না ছাড়াও চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। বিশেষ করে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় এটির ব্যবহার সর্বাধিক। ব্লাড সুগার, ঋতুস্রাবের সময় পেটে ব্যথা, খুশকি, ব্রণ, ত্বক ও চুলের সমস্যা, হার্টের সমস্যা, পেটের সমস্যা, বাতের ব্যথা, ইত্যাদি দূর করতে মহৌষধ হিসেবে ব্যবহার হয় মেথি। কিন্তু কীভাবে ব্যবহার করবেন? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে খালি পেটে ভেজানো মেথির জল খেলেই যেকোনও সমস্যা থেকে অনায়াসেই মুক্তি পেতে পারবেন। হ্যাঁ, খালি পেটে এক গ্লাস মেথির জল, এটিই শরীরকে রোগমুক্ত করতে রামবানের মতো কাজ করবে।
তবে চলুন, এক গ্লাস মেথির জল আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারি তা জেনে নেওয়া যাক।
১) ডায়াবেটিস রোধে ডায়াবেটিস এমন এক মারাত্মক অসুখ, যা শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলিকে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আর মেথিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে। মেথি, টাইপ টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই রোজ খান মেথির জল।
২) ওজন কমাতে নিয়মিত মেথি জল খেলে আপনার শরীরের ওজন কমবে। পেটে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বির হাত থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।
৩) কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন নিয়মিত মেথির জল খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল। মেথির মধ্যে দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া মেথিতে থাকে গ্লেকটোম্যানান নামক একটি উপাদান যা হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে এই উপদানে উপস্থিত পটাশিয়াম, রক্তে লবণের পরিমাণ কমায়, ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার কারণে হার্ট অ্যাটাক এবং অন্যান্য হার্টের রোগ থেকে অনায়াসেই মুক্তি পাওয়া যায়।
৪) বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইস্ট্রোজেনের ওপরে মেথির প্রভাব এতটাই বেশি যে, চিকিৎসকেরা মেথির ব্যবহারকে ইস্ট্রোজেন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির সঙ্গে তুলনা করছেন। মেথির বীজে থাকা লিনোলেনিক এবং লিনোলেইক অ্যাসিড থাকে, যা দেহের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আর্থ্রাইটিসের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতেও এর ভূমিকা অতুলনীয়।
৫) মাসিকের ব্যথা দূর করতে ইউট্রাসে মৃত টিস্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকলেই পিরিয়ডস-এর ব্যথা শুরু হয়। তাই পিরিয়ডস-এর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে খান মেথি জল। মাসিকের এই দিনগুলিতে মেথির চা ব্যথার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার মোক্ষম দাওয়াই।
১) হজম ক্ষমতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
২) ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে।
৩) মাতৃদুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৪) কিডনির কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে।
৫) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৬) লিভারের ক্রিয়াকলাপ বাড়ায়।
৭) চুল ও ত্বক ভাল রাখে।
কীভাবে খাবেন
১) আগের দিন রাত্রে এক গ্লাস জলে দুই চা চামচ মেথি ভিজিয়ে রেখে দিন। পরের দিন সেই জল ছেঁকে খালি পেটে পান করুন।
২) এক গ্লাস গরম জলে এক চা চামচ মেথি গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। দশ মিনিট পর জল ছেঁকে পান করুন খালি পেটে।
৩) এভাবে সরাসরি খেতে ভালো না লাগলে এই মিশ্রণের সাথে এক টেবিল চামচ মধু ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে আরও বেশি উপকার পাবেন। এছাড়া, ঠান্ডা লাগা এবং যেকোনও ব্যথা থেকে মুক্তি পেতেও মেথির চা পান করতে পারেন।