হাত কেটে গেছে কিংবা পুড়ে, সমাধান এখানেই
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
সবজি কাটতে কাটতে একটু অন্যমনস্ক হয়েছেন, গেল আঙুলটা কেটে। কিংবা সাঁড়াশি দিয়ে না ধরে হাত দিয়েই ধরতে গেলেন গরম কড়াটা, ব্যস জ্বলতে শুরু করল। রান্নাঘরে এরকম দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে। একটু হাত কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে কী করবেন বুঝে উঠতে পারেন না অনেকে। রান্নার ব্যস্ততার মাঝে অনেকে চোটের দিকে নজরও দেন না। সেই হাতেই কাজ করতে থাকেন। কিন্তু এটা করলে বিপদ আপনারই! একটু ক্ষত পরে বড় আকার নেবে। বিশেষ করে কেটে গেলে ইনফেকশনের ভয় থাকে। তাই কেটে-পুড়ে গেলে ফাস্ট এড করা খুব দরকার।
জেনে নিন কীভাবে –
কেটে গেলে সবজি কাটার ছুরি যথেষ্ট ধারালো হয়। অনেক সময় ছুরিতে হাত কেটে যায়। বঁটিও খুব সাঙ্ঘাতিক। একটু হাত ফসকে গেলেই কেটে যায় হাত। তারপর রক্ত বের হতেই থাকে। এইসময় রক্ত থামানো যেমন দরকার তেমন কাটা জায়গার শুশ্রুষা দরকার। কাটা জায়গাটা সাবান জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজের কাপড় দিয়ে কাটা জায়গাটা চেপে রাখুন কিছুক্ষণ। এতে রক্ত বের হওয়া বন্ধ হবে। বেশি রক্ত বেরোলে কাপড় পাল্টে নিন। রক্ত থামলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল কোনও মলম লাগান। মলম লাগিয়ে কাটা জায়গা ব্যান্ডেজের কাপড় দিয়ে ব্যান্ডেজ করে নিন, তারপর একটা ব্যান্ড এড লাগিয়ে নেবেন। কেটে যাওয়ার পাঁচ থেকে ২০ মিনিট পরও যদি রক্ত না থামে, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যান। চোট মারাত্মক হতে পারে।
পুড়ে গেলে কী করবেন অসাবধানতায় অনেক সময় গরম জল বা চা উল্টে যায় গায়ে। অনেক সময় গরম তেল ছিটকে হাতে, মুখে লাগে। পুড়ে গেলে প্রথমে বুঝতে হবে পোড়াটা কী ধরণের।
ফার্স্ট ডিগ্রি পোড়া : যদি পোড়া জায়গাটা লাল হয়ে যায়, জ্বালা করতে থাকে, পোড়া জায়গায় আঙুল দিয়ে চাপলে সাদা মতো হয়ে যায় তাহলে বুঝবেন ওটা ফার্স্ট ডিগ্রি পোড়া। সেক্ষেত্রে প্রথমে পোড়া জায়গায় যাতে কোনও কাপড় বা অন্য জিনিস না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কাপড় আটকে যায়, টেনে খোলার চেষ্টা করবেন না। পোড়ার জায়গায় ঠান্ডা জল ঢালতে থাকুন কম করে ৩-৫ মিনিট। তারপর অ্যান্টি-বায়োটিক মলম লাগান। বরফ, তেল জাতীয় কিছু ভুলেও লাগাবেন না। মলম লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখুন জায়গাটা। ৩-৬ দিনের মধ্যে সেরে যাবে।
সেকেন্ড ডিগ্রি পোড়া : পোড়া জায়গা যদি লাল হয়ে যায়, ফোসকা পড়ে ফুলে যায় এবং ব্যাথা করতে থাকে তাহলে বুঝবেন স্কিনে লেগেছে। ১৫-৩০ মিনিট পোড়া জায়গায় জল ঢালুন। তারপর অ্যান্টি-বায়োটিক ক্রিম লাগান। এক্ষেত্রে জীবাণুমুক্ত ড্রেসিং কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে পোড়া জায়গা। প্রতিদিন ড্রেসিংয়ের কাপড় বদলানো দরকার। নাহলে ইনফেকশন হওয়ার ভয় থাকে। ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগবে এই পোড়া সারতে।
থার্ড ডিগ্রি পোড়া : স্কিনের সব স্তর পুড়ে গিয়ে সাদা বা কালো হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত আহতকে। পোড়া জায়গা ঠান্ডা ভিজে ড্রেসিং কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
পোড়া-কাটা ছাড়াও অনেক সময় রান্নাঘরে পা স্লিপ করে পড়ে গিয়েও চোট পাই আমরা।
ক) পড়ে গেলে আস্তে আস্তে হাত ও হাঁটুতে ভর দিয়ে উঠুন।
খ) সামনে থাকা কোনও চেয়ার টেনে বসার চেষ্টা করবেন। একা যেতে না পারলে বাড়ির কারুর সাহায্য নিতে পারেন।
গ) যদি পড়ে গিয়ে কোনও জায়গা ফুলে যায় এবং আপনার মনে হয় যে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যান।
চোখের ক্ষেত্রে সাবধান থাকুন
অনেক সময় চোখে লেবুর রস ছিটকে যায় বা রান্নাঘর পরিষ্কারের সময় ব্লিচ ছিটকে আসে। সেক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে এই পদ্ধতিগুলি প্রয়োগ করুন –
ক) চোখে একদম হালকা গরম জল ঢালুন প্রায় ১৫ মিনিট। আপনার অন্য চোখটিকে বাঁচাতে সেটি বন্ধ করে রাখুন। খ) এরপরও যদি চোখ জ্বালা করে, তবে তখনই ডাক্তারের কাছে যান।
গ) যদি আপনার চোখের আশেপাশে কাটা থাকে, তবে চোখ ধোবেন না বা কোনওরকম চাপ প্রয়োগ করবেন না।
ঘ) যদি আপনার মনে হয় যে কোনও জিনিস আপনার চোখে আটকে গেছে। তবে তা বের করা, ঘষা বা চাপ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।