জানেন কি ১ মশার ধূপ ১০০ সিগারেটের সমান ক্ষতিকর!
কলকাতা টাইমস :
বদ্ধ ঘরে মশার ধূপ জ্বালানো আর প্রায় ১০০টি সিগারেট খাওয়া– দুই-ই সমান! সিগারেটে ফুসফুসের ক্যান্সার হয়, সে ভাবেই মশার ধূপ এবং সুগন্ধী ধূপকাঠি জ্বালালেও কর্কট রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় বরাত দিয়ে এমনই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
চেস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর সন্দীপ সালভি জানিয়েছেন, মশার ধূপ এবং ধূপকাঠি শুধু ফুসফুসের জন্যই ক্ষতিকর নয় বরং এর জেরে ক্যান্সারও হতে পারে। সালভির দাবি, ফাউন্ডেশনের গবেষনায় জানা গিয়েছে, মশার ধূপ এবং সুগন্ধী ধূপকাঠিতে কার্সিনোজেন থাকে। তাইওয়ান এবং চিনে এ সংক্রান্ত গবেষণায় প্রমাণিত, ফুসফুসের ক্যান্সারের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে।
চিকিত্সক সালভি জানিয়েছেন, ‘বদ্ধঘরে একটি মশার ধূপ জ্বালানো প্রায় ১০০টি সিগারেট খাওয়ার সমান।’
অন্য দিকে ধর্মীয় কার্যকলাপে সুগন্ধী ধূপকাঠি জ্বালানো হয়। গবেষণায় জানা গিয়েছে, এই ধূপকাঠিগুলি টক্সিক, কারণ এতে সিসে, লোহা এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকে। তিনি বলেন, মশার ধূপে ‘পাইরেথ্রিন’ নামে একটি কীটনাশক থাকে, যা ফুসফুসের পক্ষে ক্ষতিকর।
তবে ধোঁয়া-বিহীন মশার ধূপের ওই উপাদানগুলি কম থাকলেও, সেগুলি থেকে বিশাল পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড নির্গত হয়। এটিও ফুসফুসের পক্ষে ক্ষতিকর।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, মশা রিপেলেন্ট ম্যাট এবং লিকুইডেটরগুলি কি নিরাপদ? যদিও এই দুইয়ের ওপর এখনও গবেষণা হয়নি, তা-ও সালভি জানিয়েছেন, এই গ্যাসিয়াস পলিউশন ‘ফুসফুসে তীব্র জ্বালা’ সৃষ্টি করতে পারে।
সন্দীপ সালভি জানিয়েছেন, পুনের ২২টি গ্রামে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ৬৫ শতাংশ গৃহস্থই মশার ধূপ জ্বালানোর সময় দরজা-জানালা বন্ধ করে দেন। যা ওই টক্সিক গ্যাসের প্রভাবকে আরও জোরাল করে দেয়।
জেএসএস মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক, পি এ মহেশ জানিয়েছেন, সম্প্রতি মশার ধূপ এবং ধূপকাঠির কার্সিনোজেনিক উপাদান নিয়ে গবেষণা হয়েছে। ‘যে স্থানের তাপমাত্রা বেশি, যেমন- ভারত এবং চিন সেখানেই মশার উপদ্রব দেখা যায়। তাই ইওরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো শীতল স্থানে এ সংক্রান্ত কোনও গবেষণা হয়নি।’
চিকিত্সক পি এ মহেশের পরামর্শ, ডেঙ্গি, চিকেনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো ভেক্টর-বোর্ন রোগের হাত তেকে বাঁচতে দরজা এবং জানালায় মশার-নেট লাগানো উচিত এবং বিছানায় মশারি খাটিয়ে ঘুমনো উচিত।
তিনি বলেন, মশার রিপেলেন্টগুলিতে ফর্মালডিহাইড এবং ভোলাটাইল অর্গ্যানিক কম্পাউন্ড থাকে। মশার রিপেলেন্ট ব্যবহারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে একটি প্রস্তাব পেশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন পি এ মহেশ।