September 24, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

১০ বছর টাকা ছাড়াই তার জীবন তবু সুখের !

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

দি একদিন সত্যিই টাকা বা ব্যাংক ব্যালান্স ভ্যানিশ হয়ে যায়, কেমন হবে ভেবে দেখেছেন? কীভাবে বাঁচবেন? বেঁচে থাকা আদৌ সম্ভব হবে কি?

শতকরা বেশির ভাগেরই উত্তর হবে ‘না’৷ কিন্তু, এই অলৌকিক ভাবনাটাই সত্যি করে ফেলেছেন আয়ারল্যান্ডের যুবক মার্ক বয়েল। বছরের পর বছর কাটছে, তিনি কোনও টাকা উপার্জন করেননি। খরচও করেননি। নেই কোনও জমানো টাকাও। দিব্যি বেঁচে আছেন তিনি। গল্প নয়, এক্কেবারে সত্যি।

কয়েক বছর আগে এমনটা নিজেও ভাবতে পারতেন না মার্ক বয়েল। বিজনেস-ইকোনমিক্সের ডিগ্রি পকেটে নিয়ে তখন টাকা রোজগারের চিন্তা করতেন তিনি। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মত তিনিও ভেবেছিলেন কীভাবে টাকা রোজগার করে ভালভাবে বাঁচতে পারবেন। সমাজকে দেখাতে পারবেন যে, তিনি সফল।

উপায়ও হয়েছিল। এক বড় মাপের ফুড কম্পানিতে ম্যানেজারের চাকরি নিয়ে আরামের জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। বাধ সাধল একটি বিশেষ ভিডিও ফুটেজ।

কোনও এক সন্ধ্যায় এক গ্লাস ওয়াইনের সঙ্গে নদীর হাওয়া উপভোগ করছিলেন মার্ক। সেইসময় তাঁর এক বন্ধুর কাছে গান্ধীজির একটি ভিডিও দেখেন তিনি। যেখানে রয়েছে গান্ধীজির বিশেষ একটি কোটেশন। আমাদের অনেকেরই পরিচিত সেই কোটেশনটি হল, ‘বি দি চেঞ্জ ইউ ওয়ান্ট টু সি ইন দি ওয়ার্ল্ড’৷

হঠাৎই এই কথাটাতে গভীর প্রভাব ফেলে মার্কের মনে। বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন পৃথিবীর সাম্প্রতিক সমস্যাগুলি নিয়ে। অনেক ভেবে দেখেন, সব সমস্যার সমাধানেই ‘সিন্ধুতে এক বিন্দু জল’ এরর মত মনে হয় নিজেকে। সেদিনের মত থমকে যান তিনি।

পরের দিন আচমকাই মার্কের মাথায় আসে যে যাবতীয় সমস্যার মূলেই আসলে টাকা। এই সমস্যাটাকে সমূলে নিধন করাই একমাত্র উপায়। তিনি ভেবে দেখেন, পৃথিবী জুড়ে মানুষে মানুষে বৈষম্যের কারণও সেই টাকা।

টাকা ছাড়াই কীভাবে সুখে থাকা সম্ভব, সে ব্যাপারে মার্কের উদাহরণ, ‘যদি আমাদের নিজেদের খাবার নিজেদেরই বানাতে হয়, তাহলে আমরা সেটা নষ্ট করার আগে দুবার ভাবব। নিজেদের চেয়ার-টেবিল যদি নিজেরাই বানাই, তাহলে চট করে সেগুলি ফেলে দিয়ে নতুন আনার কথা ভাবব না। ভাবনাতেই থেমে থাকেননি। কাজও করে দেখালেন মার্ক বয়েল। ২০০৮ থেকে শুরু করেন অভিনব জীবনযাপন।

প্রথম দিনই প্রাকৃতিক ফলমূল আর নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার থেকে তিনরকমের খাবার বানিয়ে ফেলেন তিনি। রকেট স্টোভে স্বল্প জ্বালানিতে খাবার তৈরির বন্দোবস্তেই বেশ খুশি তিনি। পড়ে থাকা সাইকেল দিয়ে নিজের থাকার মত ক্যারাভ্যান বানিয়েছেন মার্ক। যা রাখা থাকে একটি বাড়ির পাশে। ল্যাম্পপোস্টের আলোতেই কাজ চলে যায় তাঁর।

যাতায়াতের সময় মার্ক ব্যবহার করেন বাড়তি মোম দিয়ে তৈরি মোমবাতি। পুরনো বোতলে একগুচ্ছ কাঠ জ্বালিয়ে নিজের থাকার জায়গাটা গরম করে নেন অনায়াসেই।

গোসল করেন নদীতে। ব্রাশের বদলে দাঁত পরিষ্কার করতে ব্যবহার করেন কাটলফিশের হাড় ও মৌরি। এছাড়া নিজে পরিষ্কার থাকার জন্য খবরের কাগজওয়ালাদের কাছ থেকে নিয়ে নেন বাড়তি হওয়া কাগজ। এমনই রয়েছে আরও অনেক আজব কারবার। প্রথম প্রথম মানিয়ে নিতে অসুবিধা হলেও, বেশ কয়েক বছর কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি। এখন তিনি অভ্যস্ত।

বিদেশে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখিও করেন নিয়মিত। মানুষকে শেখান, কীভাবে টাকা ছাড়া বাঁচা যায়।

নিজেকে অ্যান্টি-ক্যাপিটালিস্ট বা পুঁজিতন্ত্রের বিরোধী হিসেবে পরিচয় দিতে প্রবল আপত্তি তাঁর। টাকার বিপক্ষে নন মার্ক। বরং নিজেকে প্রকৃতির পক্ষে কিংবা সুখী পৃথিবীর পক্ষে দেখতেই বেশি পছন্দ করছেন তিনি। মার্ক চাইছেন আরও বেশি মানুষ এই পথে আসুক।

Related Posts

Leave a Reply