নীল আলোর ছটায় মোহময়ী আগ্নেয়গিরির দেশ
কলকাতা টাইমস :
বিশ্বের বৃহত্তম এই নীল আগুনের আগ্নেয়গিরি রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাভা অঞ্চলে। এই নীল আলোর আগ্নেয়গিরির নাম কাওয়াহ ইজেন। এই আগ্নেয়গিরি থেকে নীল এল বেরোনোর রহস্য ভেদ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা জানান, এই আগ্নেয়গিরি থেকে সালফার বাষ্প বের হয়। আর সেটি বাতাসে মেশার আগে এই নীলাভ আলো তৈরি হয়।
এই আগ্নেয়গিরিসংলগ্ন এক কিলোমিটারজুড়ে হ্রদের ওপর দিয়ে যখন ধোঁয়া উড়ে যায়, তখন তা আরো মোহনীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু এই আলোর খেলা অন্ধকারে দেখাটা এক বিরল অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, কানাডা, ভিয়েতনাম, নেদারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের অভিযাত্রীরা এই আগ্নেয়গিরিটি দেখার সুযোগ পান।
জানিয়ে রাখি, ১৮ হাজার দ্বীপের দেশ ইন্দোনেশিয়ায় আছে ৪০০ আগ্নেয়গিরি। এর মধ্যে জীবন্ত ১২৭টি। পর্যটকরা তাই বলেন থাকেন, ইন্দোনেশিয়া যেন আগ্নেয়গিরি বা দ্বীপের দেশ।
নীল আলোর এই আগ্নেয়গিরি দেখতে ভাঙতে হয় ক্রমে ওপরে ওঠা ১০ হাজার ফুট পাহাড়ি পথ। এ জন্য ভারী জ্যাকেট, মাথায় বাঁধা টর্চলাইট, ধোঁয়া থেকে বাঁচার মাস্কসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হয়। পূর্ব জাভা অঞ্চলের বানিওয়াঙ্গি থেকে প্রথমে শক্তিশালী ইঞ্জিনের প্রাডো গাড়িতে করে পাহাড়ি পথে দু’ঘণ্টা। এরপর হাঁটা পথ। তিন কিলোমিটার ওই পাহাড়ি বাঁকা পথ মাড়িয়ে তবেই দেখা মেলে কাওয়াহ ইজেন আগ্নেয়গিরির।
হাঁটা পথটুকু স্বাভাবিকভাবে চললে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা লাগে। কিন্তু ২০ মিনিট চলার পরই দেখা গেল, পথে বসে পড়ছেন বহু পর্যটক। পথের স্থানে স্থানে অন্ধকারে গাছের নিচে আছে বিশেষ ধরনের ট্যাক্সি স্টেশন। মূলত পর্যটকরা হেঁটে পথ চলতে না পারলে ট্যাক্সিতে ওঠার অনুরোধ জানায় তারা। ট্যাক্সিতে একজন যাত্রী বসতে পারে। এর সামনে ও পেছনে একজন করে চালক ও সহকারী থাকে। শক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে নিয়ে চলে তারা ট্যাক্সিটি। কখনো পেছন থেকে টেনে ধরতে হয় বা অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়। এ জন্যই সহকারী থাকে চালকের।
জানা গেল, কাওয়াহ ইজেন আগ্নেয়গিরির লাভামুখ ১০০টি। ২০০২ সালে এটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্ন্যুত্পাত হয়েছিল। এরপরই এর বিভিন্ন অংশ থেকে অনবরত সালফার বের হচ্ছে। এই সালফারের অংশ স্থানীয় লোকজন প্রতি রাতে সংগ্রহ করে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে। তারা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৩ মার্কিন ডলারের সমান আয় করতে পারে।