May 16, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

সাংবাদিক খাশোগি হত্যায় ক্রমশই জড়িয়ে পড়ছেন সৌদি প্রিন্স সালমান !সাংবাদিক খাশোগি হত্যায় ক্রমশই জড়িয়ে পড়ছেন সৌদি প্রিন্স সালমান !

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমসঃ

সৌদির প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যা রহস্য ক্রমশ উন্মুক্ত হওয়ার পথে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, তাকে হত্যার আগে পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। এরপর তাকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়।

এই ঘটনার সঙ্গে সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার এক উচ্চপদস্থ কর্তা জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। খাশোগি হত্যার পুরো ছকটাই তৈরী করে দেন এই গোয়েন্দা করতে। আর এই ছক বাস্তবায়নে ১৫ জনের যে দলটি সৌদি আরব থেকে ইস্তাম্বুলে উড়ে যায় তার মধ্যে অন্তত দুজন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। দেশে-বিদেশে একাধিকবার তাদের দেখা গেছে যুবরাজের পাশে। শুধু তা-ই নয়, ১৫ জনের ১১ জনই সৌদি নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য। তিনজন বিন সালমানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত। একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ।

গত ২ অক্টোবর খাশোগি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত নথিপত্র আনার প্রয়োজনে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে তিনি আর  বেরিয়ে আসেননি। খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন। তার কলামে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করা হতো। যুবরাজ মোহাম্মদ সালমান গত বছরের জুনে ক্ষমতায় আসার পর খাশোগি গ্রেফতারের আশঙ্কায় দেশ ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। তুর্কি পুলিশের দাবি, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভিতরে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যা মিশনে অংশ নেয় রিয়াদ থেকে ইস্তাম্বুলে আসা ১৫ সদস্যের সৌদি স্কোয়াড।

তবে সূত্রের দাবি, খাশোগি রহস্যের আদ্যোপান্ত জানেন না প্রিন্স বিন সালমান। তাকে অন্ধকারে রেখেই পুরো ঘটনা ঘটানো হয়। এই দলটির মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল খাশোগিকে দেশে ফেরানো। যদিও সৌদি আরবের বহু শীর্ষকর্তাই মনে করেন, ৩৩ বছর বয়সী প্রিন্স বিন সালমানের অজ্ঞাতে এত বড় কাণ্ড ঘটে যেতে পারে না। তার অনুমোদন সাপেক্ষেই খুন হন খাশোগি। আরেকটি সূত্র জানাচ্ছে, সৌদি আরব মনে করে খাশোগির কাছে তাদের ধনী প্রতিদ্বন্দ্বী কাতারের স্পর্শকাতর তথ্য রয়েছে। যদিও কাতারের সঙ্গে খাশোগির সম্পর্কের কোনো প্রমাণ তাদের কাছে ছিল না। সূত্রের দাবি, সৌদি গোয়েন্দা সংস্থা, অর্থাৎ জেনারেল ইন্টেলিজেন্স প্রেসিডেন্সির ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার পরিকল্পনার বিষয়ে রিয়াদকে অন্ধকারেই রাখেন। এই কারণেই সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে সেভাবে কোনো তথ্যই শুরুর দিকে ছিল না।

গত মঙ্গলবার সিএনএনকে তুরস্কের একটি সূত্র জানায়, ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে সপ্তাহ দুয়েক আগে খাশোগিকে হত্যার পর তার মৃতদেহ টুকরা টুকরা করে ফেলা হয়। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনেও একই তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার তুরস্কের তদন্তকারীরা ৯ ঘণ্টা ধরে দূতাবাসে অভিযান চালায়। মঙ্গলবারও তল্লাশি অভিযান চালানোর কথা ছিল। কিন্তু হয়নি।

তুর্কি পুলিশের দাবি, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভিতরেই হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যা মিশনে অংশ নেয় ১৫ সদস্যের সৌদি স্কোয়াড। এই সদস্যের একজন সৌদি ফরেনসিক বিভাগের লেফটেন্যান্ট কর্নেল সালাহ মুহাম্মদ আল-তুবায়গি। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, অডিও-ভিডিও  রেকর্ড থেকে বোঝা যায়, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভিতরেই হত্যা করা হয়েছে। পরে তাকে কেটে টুকরো করা হয়। তবে মিডল ইস্ট আই ওয়েবসাইটে তুর্কি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সেখানে খাশোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের  কোনো চেষ্টাই করা হয়নি। সৌদি দল গিয়েছিল তাকে হত্যা করতে। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, হত্যায় সাত মিনিট সময় লেগেছে। সৌদি ফরেনসিক বিভাগের সালাহ মুহাম্মদ আল-তুবায়গি যখন খাশোগির দেহ কেটে টুকরো টুকরো করছিলেন ‘তখনো বেঁচে ছিলেন’ খাশোগি। বলা হচ্ছে, হত্যার সময় তুবায়গি গান শুনছিলেন।

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সন্দেহভাজনদের মধ্যে অন্তত চারজনের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের সরাসরি ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, ওই দলে মোহাম্মদ বিন সালমানের দেহরক্ষী মাহের আবদুল আজিজ মুতরেবও রয়েছেন। তিনি একসময় লন্ডনের সৌদি দূতাবাসে কূটনীতিক হিসেবে কাজ করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুর্কি গোয়েন্দারা এখন তাকে খুঁজছে। সম্প্রতি সৌদি যুবরাজের মাদ্রিদ, প্যারিস ও আমেরিকা সফরে তোলা ছবিতে মুতরেবকে পাহারারত অবস্থায় দেখা গেছে।

 

Related Posts

Leave a Reply