May 17, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular সফর

শত বছর আগের যে দেশগুলো হারিয়ে গেছে!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

ই পৃথিবীতে কোন কিছুই চির বিরাজমান বা চিরস্থায়ী নয়— একথা আমাদের সবারই জানা। মানুষ থেকে শুরু করে জড় পদার্থ সবকিছুরই রয়েছে পরিসমাপ্তি। কিন্তু যদি বলি পৃথিবীতে এমন কিছু দেশের কথা যা শত বছর পূর্বে ছিলো কিন্তু এখন আর নেই? আমাদের অনেকেই জানি না সেই হারিয়ে যাওয়া দেশগুলো সম্পর্কে। আজ তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
যানযিবার- 

আফ্রিকার পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের দ্বীপমালা যানযিবার নামটি শুনতেই বেশ মুগ্ধকর। মনে হয় যেন রোমাঞ্চকর, অভিযাত্রিক এবং খুব চটপটা একটি জায়গা। এক সময়ে এই জায়গাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা ছিল এবং উনবিংশ শতাব্দীতে এটি একটি স্বাধীন সুলতানে প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও তার ঠিক পরপরই এটি পরিণত হয় ব্রিটিশ আশ্রিত রাজ্যে, তবুও ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সুলতান রাজত্ব করতে থাকে। পূর্ববর্তী বছরে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের পর যানযিবার তাঙ্গান্যিকার মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত হয়ে যায় যা মূলত আজকের তানজানিয়া। তানজানিয়াতে রয়েছে পৃথিবীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত সব গোলাপি হ্রদ।
সিয়াম-

‘দ্য কিং এন্ড আই’ গীতিনাট্যটি যিনিই দেখেছেন, তিনিই হয়তো বা মনে মনে ভেবেছেন যে আদতেই সিয়ামের রাজা (বাস্তবের রাজা মংকুট, যিনি ১৮৫১ সাল থেকে ১৮৬৮ সাল অবধি শাসন করেছেন) পৃথিবীর কোন প্রান্তে থাকতেন। এর উত্তরটা যদি হয় বর্তমানের থাইল্যান্ড, তাহলে কি খুব অবাক হবেন?

থাইল্যান্ড দেশটির নামকরণ করা হয় ১৯৩৯ সালে। সিয়াম ছিলো পুরাদস্তুর রাজতন্ত্র যেখানে কখনোই ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপন করা হয়নি। থাইল্যান্ডে বর্তমানে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বিরাজমান। শত শত দ্বীপ, স্বচ্ছ পানি এবং চমৎকার উপকূলবর্তী পরিবেশের জন্য থাইল্যান্ড আজকের সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি পর্যটক গন্তব্যে রুপান্তরিত হয়েছে। এছাড়াও এখানে রয়েছে অদ্ভুত সুন্দর সব সমুদ্র সৈকত।
পারসিয়া- 

পারসিয়া নামটি শুনলেই মনের পর্দায় ভেসে ওঠে প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যের একটি রাজত্ব আর ইতিহাসে প্রাচীনতম সভ্যতার একটি। প্রাচীনকালে ক্ষমতার শীর্ষে থাকার সময় থেকে সেখানে প্রায়ই যুদ্ধবিগ্রহের ঘটনা ঘটতো।

তবে পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটি ইরান হয়ে যাওয়ার পরও ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত এর পুরাতন অবজ্ঞাসূচক নামটি বজায় রাখে। এখন পারসিয়ার কথা শুনলেই হয় পার্সিয়ান বিড়াল বা পার্সিয়ান কম্বলের কথা মাথায় আসে। তবে এর সংস্কৃতি বেশ প্রাণবন্ত এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অবস্থার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা সেখানে খুব একটা যেতে চান না বললেই চলে। বর্তমানে ইরানের লাট মরুভূমিটি পৃথিবীর রোমাঞ্চকর ভ্রমণের জায়গাগুলোর মধ্যে একটি।
সিকিম- 

হিমালয়ের ছোট্ট এই পার্বত্য অঞ্চলটির নাম কি শুনেছেন? ১৯৫০ সালে ভারতের আশ্রিত রাজ্য এবং ১৯৭৫ সালে ভারতের একটি প্রদেশ হওয়ার পূর্বে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত সিকিম একটি সর্বভৌম রাজতন্ত্র ছিলো।

বর্তমানে ভুটান, তিব্বত চায়নার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং নেপালের সীমান্ত রয়েছে সিকিমকে ঘিরে। এছাড়াও সিকিমে রয়েছে বরফে ঢাকা পাহাড়ের সমারোহ যা লোকজন ঈশ্বর বা ঈশ্বরের আবাসস্থল হিসেবে পূজা করে বা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে থাকে। ১৯৪৮ সালে সিকিমে কালি বা বীভৎস তুষার মানবের পদচিহ্ন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো বলে বর্ণিত রয়েছে।

আবিসিনিয়া – 

এই কল্পনাবিলাসী নামটি আসলে শত বছর আগে ইথিওপিয়ার জন্য আরব এবং ইউরোপের অবজ্ঞাসূচক নাম ছিলো। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে স্ক্র্যাম্বল্ অব আফ্রিকার সময় ইতালি তা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। তবে ইতালি তাদের রাজতন্ত্র উৎখাত করতে অক্ষম হয়। এমনকি দেশটিতে কখনোই উপনিবেশ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। ১৯৩০ সালে শেষের দিকে মুসলিনির (ইতালির রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক) অধীনে যতদিন ইতালির অধিবাসীরা ছিলেন, ততদিন পর্যন্ত আফ্রিকার যতগুলো স্বাধীন রাজ্যগুলোর মধ্যে একটি ছিলো এই আবিসিনিয়া।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইথিওপিয়া জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতা দেশগুলোর মধ্যে একটি দেশে পরিণত হয়। এছাড়াও আবিসিনিয়ায় পাওয়া গিয়েছিলো পৃথিবীর প্রাচীনতম মানব জীবাশ্ম এবং বাইবেলের চুক্তির সিন্দুক (রাইডারজ অব দ্য লস্ট আর্ক চলচ্চিত্রে এই বিষয়টি দেখেতে পারেন)। ইথিওপিয়ার লাভা হ্রদের পরাবাস্তব ভূদৃশ্যটি পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি।
মরেসনেট- 

মরেসনেট বা আলতেনবার্গের কথা আগে নিশ্চয়ই শুনেননি তাই তো? অবশ্য এই দলে আপনি একা নন। এক বর্গ মাইলেরও ছোট এই দেশটি ১৮১৬ সালে ডাচ এবং পার্সিয়ানদের মধ্যকার চুক্তি থেকে উৎকীর্ণ হয়েছে। তাই এই দুই জাতিরই সেখানকার দস্তা খনিতে প্রবেশাধিকার ছিলো। মরেসনেটের ছিলো নিজস্ব পতাকা এবং পয়সা।

ছোট এই দেশটিকে নিজস্ব কৃত্রিম বৈশ্বিক ভাষা এস্পেরান্তো দিয়ে কল্পরাজ্যে রূপান্তরের প্রচেষ্টা চলছিল। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বশবর্তী হয়ে মরেসনেট বেলজিয়ামের অংশ হয়ে যায়। এই এলাকার বাসিন্দারা আজও পর্যন্ত মরেসনেট উৎপত্তির বার্ষিকী উদযাপন করেন।
দেশগুলো হারিয়ে গেলেও টিকে রয়েছে অন্য কোনো নামে। সময় করে ঘুরে আসতে পারেন দেশগুলোতে।

Related Posts

Leave a Reply