May 17, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

এই যুবকের জন্য ১৩০ জনের আত্মহত্যা, কারণ জানলে চমকে উঠবেন

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

ত কয়েক মাসের মধ্যে রাশিয়া এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বেশ কিছু তরুণীর আত্মহত্যার খবর এসেছিল পুলিশের কাছে। ঠিকঠাক পরিসংখ্যান দিতে গেলে বলতে হয়, বিগত তিন মাসে মোট ১৬ জন তরুণীর আত্মঘাতী হওয়ার খবর পেয়েছিল পুলিশ। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত জন অল্পবয়সি মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনা বিস্মিত করেছিল পুলিশকে। তদন্তকারী অফিসারদের মনে হয়েছিল, এই সমস্ত আত্মহত্যা হয়তো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, হয়তো কোনও গোপন যোগসূত্র রয়েছে এদের মধ্যে। সম্প্রতি সাইবেরিয়ার দুই স্কুলছাত্রী য়ুলিয়া কনস্তান্তিনোভা (১৫) এবং ভেরোনিকা ভলকোভা (১৪) একটি ১৪ তলা বাড়ির ছাদ থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। তাদের মৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই দুটি মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী ফিলিপ বুদেকিন নামের এক ব্যক্তি। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক কালে আত্মঘাতী ১৬ জন তরুণীই ফিলিপের জন্যই আত্মহত্যা করেছিলেন। এমনকী, পুলিশের ধারণা, সারা বিশ্বে অন্তত ১৩০ জন মানুষের আত্মহননের জন্য পরোক্ষে এই ফিলিপই দায়ী।

কিন্তু কে এই ফিলিপ? কেনই বা তার জন্য নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন তরুণ-তরুণীরা? রাশিয়ার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ বছর বয়সি ফিলিপ রাশিয়ারই বাসিন্দা। সে ভিকোন্তাক্তে নামক সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম নামের একটি সোশ্যাল গেমিং পেজের শ্রষ্ঠা। এই গেম-এ প্রতিযোগীদের মোট ৫০টি আত্মনির্যাতনমূলক টাস্ক কমপ্লিট করতে হতো। ভয়ঙ্কর ছিল সেই সমস্ত টাস্ক। সেগুলির মধ্যে কয়েকটি ছিল মোটামুটি নিরীহ, যেমন মাঝরাত্রে ঘুম থেকে উঠে ভূতের সিনেমা দেখা। কিন্তু গেম-এর লেভেল যত এগোতো, তত কঠিন এবং ভয়ঙ্কর হতে থাকত টাস্কগুলি। একটি টাস্কে প্রতিযোগীকে নিজের শরীরে ৫০টি নিডল (ইঞ্জেকশনের সূচ) ফুটিয়ে সেই ছবি পোস্ট করতে হতো গেমিং পেজে। আর একেবারে শেষ অর্থাৎ ৫০তম টাস্কটিতে প্রতিযোগীকে নিজের প্রাণ হরণ করতে হতো।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে রাশিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, য়ুলিয়া এবং ভেরোনিকা-সহ মৃত ১৬ তরুণীই সুইসাইড গেম-এ আসক্ত ছিলেন। এই খেলা প্রায় উন্মাদনার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল তাঁদের জীবনে। খেলায় বিজয়ী হওয়ার নেশায় তাঁরা নিজেকে শেষ করে ফেলতেও দ্বিধা বোধ করেননি। এমনকী পুলিশের ধারণা, শুধু এই ১৬ জন নয়, বিগত কয়েক বছরে সারা বিশ্বে ১৩০ জন এই খেলা খেলতে গিয়েই আত্মহত্যা করেছেন।

য়ুলিয়া, ভেরোনিকা-সহ অন্যান্য তরুণীর মৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছিল, তাঁরা প্রত্যেকেই সুইসাইড গেম-এর এক এক জন নিষ্ঠাবান খেলোয়াড়, এবং প্রত্যেকেই খেলার ৫০তম লেভেল পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন। এই ৫০তম লেভেলেই প্রতিযোগীকে আত্মহত্যা করতে হয়। স্বভাবতই, পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে সুইসাইড গেম পেজ-এর অ্যাডমিন-এর উপর। শেষমেশ তদন্ত চালিয়ে দিন কয়েক আগে ফিলিপ-কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশের কাছে নিজের কৃতকর্মের কথা সরাসরি স্বীকার করেছে ফিলিপ। অবশ্য তার কাজকে সে অপরাধ বলে কোনও মতেই মানতে রাজি নয়। তার বক্তব্য, সে তার খেলার মাধ্যমে সমাজের শুদ্ধিকরণ ঘটাচ্ছিল। যাদের সমাজে বেঁচে থাকার কোনও অধিকারই নেই, তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়াই ছিল তার লক্ষ্য। ফিলিপের মুখে এই সমস্ত কথা শুনে তার মানসিক সুস্থতা নিয়েই সন্দেহ জেগেছে পুলিশের মনে। আপাতত সেন্ট পিটার্সবার্গের ক্রিস্টি জেলে বন্দি রয়েছে সে। কিন্তু ফিলিপকে বন্দি করা গেলেও তার পেজটি নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে পুলিশের মনে। অ্যাডমিন গ্রেফতার হলেই সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পেজ বন্ধ হয়ে যায় না। আর বর্তমানে সুইসাইড গেম খেলাটি ব্রিটেনের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই বিষয়টিই চিন্তা বাড়াচ্ছে সমাজমনস্তাত্ত্বিকদের। সে ক্ষেত্রে এই সুইসাইড গেম-এর পেজটিই ব্যান করে দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে পুলিশ।

Related Posts

Leave a Reply