তেইশ বছরে ২১ বার জেল খাটা অপরাধি এখন রীতিমত ষ্টার
কলকাতা টাইমস ;
স্বাধীনতা দিবসে তিহার জেলে আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাটীকায় অভিনয় করে সবাইকে চমকে দেন একজন। মাদকের কড়াল গ্রাস নিয়ে সচেতনতামূলক নাটক মঞ্চস্থ হয় দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম জেলটিতে। যিনি অভিনয় করেছেন তাকে ওখানকার সবাই চেনেন, নাম তার আকরাম। তিনি পেশাদার অভিনেতা নন। কিন্তু এক তারকা অভিনেতা। অনুপ্রেরণা থেকেই এ কাজ শুরু করেন। কেউ বিশ্বাস করবেন না যে, গত ২৩ বছরে তিনি ২১ বার এই জেলে বন্দিদশা কাটিয়েছেন তিনি। ছোটখাটো কিংবা বড়, বহু অপরাধ করেছেন তিনি। চুরি, ছিনতাই ছাড়াও আরো অনেক অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে তার মাধ্যমে।
এখন আকরামের জীবন বদলেছে। তিনি একটি থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ে বিষয়ে ক্লাস নেন। নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা প্রদান করছেন। তার এই গ্রুপ যতবার পারফরমেন্স করে, ততবারই উপার্জনের বড় একটা অংশ নিজের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করেন তিনি। জীবনের মোড় এভাবে ঘুরিয়ে ফেলার জন্য জেল কর্তৃপক্ষ তাকে সম্মানিত করেছে। ভারতজুড়ে বিভিন্ন জেলে শাস্তি খাটা প্রায় ১০০ জন সাবেক অপরাধী এই থিয়েটারের মাধ্যমে নতুন সৃষ্টিশীল পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।
কয়েদিদের জন্য এক নতুন জীবনের দ্বার খুলে দিয়েছে আকরামের এমন উদ্যোগ, এমনটাই মনে করেন দিল্লি পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (প্রিজন) সুধীর যাদব।
তিহার জেলের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সাবেক বন্দিরা তাকে দেখিয়ে দিয়েছেন তাদের ভেতরের এতদিনের ঘুমিয়ে থাকা স্বত্ত্বাটাকে। দুই পপ্তাহ ধরে থিয়েটার নাটক মঞ্চস্থ করে চলেছে বিভিন্ন স্থানে। জেল থেকে তাদের নতুন জীবনের স্বপ্ন ছড়িয়েছে দিল্লি হাট থেকে জনকপুরী আর পিটাম্পুরায়। এসব স্থানে তারা থিয়েটার, সঙ্গীত, নাচ, চিত্রকলা আর ভাস্কর্য নিয়ে যার যার সৃষ্টিশীলতা তুলে ধরবেন।
কয়েক মাস আগেই জেল খেটে বেরিয়েছেন সুরেন্দার সোনি। বলেন, আমাকে এক বন্ধু এদের নাচের ক্লাসে ভর্তি হতে বলেন। এরপর আমি আর পেছনে ফিরে তাকাইনি। যদি এখানে না আসতাম তাহলে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়তাম।
সোনির মতো গল্পগুলো অন্যদের জীবনেও ঘটে গেছে। এ সবের পেছেন অবদান এই আকরামের। যিনি বিগত ২৩ বছরে ২১ বার জেল খেটেছেন।