May 10, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শিল্প ও সাহিত্য

একার হাতে ২২ জনকে খুন করে ‘ফুলন দেবী’ সেদিন আন্তর্জাতিক সেলিব্রেটি !

[kodex_post_like_buttons]

আবার চম্বল কাহিনী, এবার মিশন ‘ফুলন’ !!! (পর্ব ৪)

সৌগত রায়বর্মন: মধ্যিখানে কেটে গেছে বেশ কয়েক বছর। মাঝে মাঝেই খবরের কাগজ খুলে দেখি চম্বলের কোনও আপডেট আছে কি না। টুকরো-টাকরা খবর পাই, যেমন ডাকু রমেশ যাত্রীসহ একটা আস্ত বাস  কিডন্যাপ করে বেহড়ে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। মুক্তিপণের টাকা আদায় করার পর সে বাসটিকে মুক্তি দেয়।

১৯৮১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, চমকে উঠলাম দৈনিক কাগজের শিরোনাম দেখে। পরপর ২২ জনকে একার হাতে হত্যা করলেন চম্বলের নয়া দস্যুরানি ফুলন দেবী। শুধু আমি কেন সারা দেশ সেদিন হতভম্ব, নির্বাক।এমন কী বিদেশেও নাড়া ফেলে দিয়েছিল সেই গণহত্যার খবর। একজন ডাকাত, তাও সে মেয়ে, তার হাতে হত্যা হবে ২২ জন পুরুষ, এতো ভাবাই যায় না। ইতিহাসে এমন কাণ্ড আগে কখনও হয়েছে বলে শোনা যায়নি। এই জেনোসাইডের পর ফুলন তখন ন্যাশানাল সেলিব্রিটি। মনটা চঞ্চল হয়ে উঠল। তখনো ‘পরিবর্তন’ এর সম্পাদক ধীরেন দেবনাথ।

তার সঙ্গে দেখা হতেই তিনি আমার মনের কথা বুঝতে পারলেন। ধমকের সুরে বললেন, না না এখন না। উত্তরপ্রদেশের পুলিশ কুকুরের মতো খুঁজছে ফুলনকে। ইউপির পুলিশ বাহিনীতে ঠাকুরদের কী দাপট তা তোমরা আমার থেকে ভালো জানো। একজন নিম্নবর্গের মহিলা তা ভেঙে তছনছ করে দেবে তা ওরা মানতে পারছে না। সিচুয়েশন একটু ঠান্ডা হোক তখন না হয় একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মনটা কিছু শান্ত হল।

আবার দিন যায়। পুরোনো অনেকেই পরিবর্তন ছেড়ে গেল, এলো নতুন কেউ কেউ। ছেড়ে যারা গেল তারা হল অজয় দা, মৃদুল দা, যিশু দা প্রমুখ। এল রন্তিদেব, সুজিত, প্রভাত, দিব্যজ্যোতি এবং আরও অনেকে। আমি কিন্তু রোজ ফুলনের খবর রাখি। রছেড় গ্রামে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি, আমরা কিন্তু আবার যেতে পারি। যেভাবেই হোক ফুলনের সঙ্গে দেখা করিয়ে দিতে হবে। রছেড় গ্রামের বন্ধুরা সেই চিঠি পেয়েছিল কি না জানা যায়নি।

এদিকে পরিবর্তনে ঘটল একটা পরিবর্তন। দুম করে ধীরেন দা সম্পাদকের পদ থেকে বিদায় নিলেন। চলে গেলেন তার পুরোনো জায়গা আনন্দবাজারে।আবার সেখান থেকেই এলেন ডক্টর পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিরাট পন্ডিত মানুষ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের আমন্ত্রিত অধ্যাপক।

পার্থদা একটু গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ । তাই খুব একটা কাছে ঘেঁষতাম না। জানতাম বসের সামনে আর ঘোড়ার পিছনে দাঁড়াতে নেই। চোট খাওয়ার চান্স থাকে। পরে বুঝেছি, মানুষটাকে ভয় পাবার কিছু নেই। তার মধ্যে একজন স্নেহশীল পিতা বাস করে, গাম্ভীর্যের আবরণ টেনে। তার স্নেহের ছোঁয়ায় আমি আমার প্রথম চাকরীর কনফার্মেশন পেয়েছিলাম।

ক্রমশ 

Related Posts

Leave a Reply