May 20, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি

দু হাতে বিলোলেও তার সম্পদ শেষ হতে লাগবে ২১৮ বছর

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

ঠিক এ মুহূর্তে বিল গেটস যদি আর কিছুই না করেন, বসে বসে খান তবে তার অর্থভাণ্ডার ফুরাতে ২১৮ বছর লাগবে। এক সমীক্ষার বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান এমনটাই দাবি করে। যেখানে বলা হয়, তিনি যদি প্রতিদিন ১০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করেন তবে তার সম্পদ শেষ হতে ২১৮ বছর লেগে যাবে। শুধু মুনাফা থেকেই বিল গেটস প্রতিদিন আয় করেন ১১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অনেকের মনেই প্রশ্ন, এত সম্পদের উত্তরাধিকার কারা, এত সম্পদ কী করবেন বিল গেটস?

সম্পদ পাচ্ছে না পরিবারের কেউ : ধনকুবের বিল গেটস। তার সঞ্চিত ধন-সম্পত্তির মূল্য ৮৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের সেরা ধনীদের মধ্যে সেরা তিনি। এ পরিচয়েই তাকে চেনে বিশ্ববাসী। পুরো নাম উইলিয়াম হেনরি গেটস। তার জন্ম ২৮ অক্টোবর, ১৯৫৫। আমেরিকার ওয়াশিংটনের সিয়াটল শহরে। তিনি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান, সাবেক প্রধান সফটওয়্যার নির্মাতা এবং সাবেক সিইও। বিল গেটস উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম উইলিয়াম হেনরি গেটস সিনিয়র।

বিল গেটস বিয়ে করেন ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি। স্ত্রীর নাম মেলিন্ডা গেটস। ফোর্বসের প্রতিবেদন বলছে, প্রতি বছরই বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমান্বয়ে। সব সময়ই বিল গেটস পৃথিবীর বিখ্যাত শীর্ষ ধনীর তালিকায় উপরে অবস্থান করেন। তার অর্থ-বিত্তের পরিমাণ এতই বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিল গেটস যদি একটি দেশ হতেন তাহলে তিনি পৃথিবীর ৩৭তম ধনী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতেন। ইউভার্সিটিতে পড়ার সময় বিল গেটস তার ইউনিভার্সিটির এক টিচারকে তার নিজের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন তার যখন ৩০ বছর হবে তখন তিনি মিলিয়নার হবেন কিন্তু তিনি বিলিয়নার হন বয়স ৩১ হওয়ার আগেই।

তার ধনী হওয়ার রহস্য কী? তার উত্তরে তার সহজ জবাব, আমাদের জন্য সফলতার প্রথম মূলমন্ত্র হলো, সব সময় খুব চৌকস ব্যক্তিদের কাজে নিয়ে আসুন। আমরা যদি উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ করে পূর্ণগতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে না পারি, তাহলে পেছনে পড়ে থাকাটাই হবে অনিবার্য পরিণতি। বদৌলতে কোম্পানিও বড় জোর মাঝারি বা নয় ভালো, নয় খারাপ অবস্থায়ই থেকে যাবে। আমি কঠিন কাজের জন্য একজন অলস ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করি। কারণ, একজন অলস ব্যক্তিই কাজটি সম্পন্ন করার সহজ উপায় খুঁজে পান।

সবার মনেই প্রশ্ন জাগে এত অর্থ সম্পদ দিয়ে কী করবেন বিল গেটস। আজব মানুষ বিল গেটস। মানুষ অর্থ সম্পদ অর্জন করে সারা জীবন কষ্ট করে। আর সবই করে তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। যেন সন্তানরা ভালো থাকতে পারে। তাদের ভবিষ্যৎ যেন সুনিশ্চিত হয়। অথচ বিল গেটস এই ক্ষেত্রে বিপরীত উদাহরণ তৈরি করলেন। আসলে মানুষ যত বেশি অর্থ সম্পদের অধিকারী হয় ততই বৈশ্বিক ব্যাপারে তার আগ্রহ ও চাহিদা বাড়তে থাকে। কিন্তু বিল গেটস ব্যতিক্রম।

তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি শুধু বিপুল অর্থ সম্পদের মালিকই নন বরং তিনি ব্যক্তি মানুষ হিসেবেও খুবই উঁচু মাপের। কারণ তিনি তার সম্পদ সন্তানদের দিচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বিল গেটস ঠিক করেছেন তার বিশাল অর্থসম্পদ দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে যাবেন। বিল গেটসের রয়েছে তিন ছেলেমেয়ে। দুই মেয়ে হলো, জেনিফার ক্যাথরিন ও ফোয়েবি এড্যালে আর একমাত্র ছেলের নাম রোরি জন। তার সম্পদ থেকে তিন সন্তান সর্বোচ্চ এক কোটি মার্কিন ডলার করে পাবেন।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস দম্পতির মতে, সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে বিপুল ধন-সম্পদ রেখে যাওয়ার কোনো মানে নেই। বরং এটি সন্তানের জন্য উপকারী নাও হতে পারে।

এই দম্পতির দাবি ধনসম্পদ নিজের মতো করে পথ চলায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। বর্তমানে গেটস দম্পতির বড় মেয়ে জেনিফার ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। আর ছেলে রোরি ও ছোট মেয়ে ফোয়েবি এখনো স্কুলে পড়ছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে তারা সিয়াটলে থাকবে। গেটসের সম্পদ দাতব্য কাজে দানের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তাদের তিন সন্তান।

বাবা-মায়ের এমন মহৎ সিদ্ধান্তের কারণে সন্তান হিসেবে তারা গর্বিত। বিশ্বের অসংখ্য মানুষকে চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে সম্পদ দানের পক্ষেই তারা। এতেই বোঝা যায় সুসন্তানের জনক হিসেবেও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস দম্পতি সমানভাবে সফল। সন্তানদের দেওয়া এক কোটি মার্কিন ডলার যদিও কম নয়। অবশ্য সেটাও বিল গেটসের ৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের কাছে তা কিছুই নয়।

সব সম্পদ দান করছেন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে : নিজ চেষ্টায় অর্জন করেন এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ। সন্তানদের জন্য এই অর্থ না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে বরং বিল গেটসের প্রতিষ্ঠিত দাতব্য প্রতিষ্ঠান বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে সব সম্পদ দান করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে গেটস দম্পতি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যক্তি। বিল গেটসের ব্যক্তিগত সম্পদ মূলত এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই ব্যয় করা হয়। গোটা বিশ্বের বিভিন্ন সংকটের সময় এই ফাউন্ডেশন থেকেই অর্থ দান করে থাকেন।

Related Posts

Leave a Reply