May 18, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

প্রেমিকার ‘ভালোবাসা’ হাতে পেতে প্রেমিকের লেগে গেল ৭২ বছর

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

বাহাত্তর বছর পর প্রেমিককে খুঁজে পেল এক প্রেমপত্র। এর মধ্যে ঘটে গেছে অনেক পরিবর্তন । পৃথিবীর সভ্যতায় এসেছে বিবর্তন। কিন্তু প্রেমপত্রের সেই চিরায়ত আকুতি অনুনয় হারিয়ে যায় নি। তেমনি এক ঘটনা সাক্ষী হল নিউ জার্সির ওয়েস্টফিল্ড। সেখানে বাড়ির সংস্কার কাজ করছিলেন অ্যালেন কুক ও তার মেয়ে মেলিসা। তারা সিলিংয়ের এক ফাঁকে একটি ফাটলের মতো দেখতে পান। সেখানে গোঁজা রয়েছে একটি খাম। তাতে ভরা হৃদয় নিঙরানো ভালবাসার কাহিনী।

অ্যালেন কুক বলেন, খামটি ছিল অনেক পুরনো আর হলুদ রঙের। এটা কখনো খোলা হয় নি। আমার জামাই যখন এটা পড়া শুরু করলো তখন অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। ওই চিঠির প্রেমিকা তার প্রেমিককে তাদের অনাগত সন্তানের বিষয়ে লিখেছিলেন। এ কাহিনীর শুরু ১৯৪৫ সালের। এটা নিয়ে হয়ে যেতে পারতো রহস্যময় ভালবাসার একটি সিনেমার কাহিনী।

১৯৪৫ সালের ৪ঠা মে ওই চিঠিটি ভার্জিনিয়া নামে এক মহিলা তার স্বামী রফ ক্রিস্টোফারসেনকে লিখেছিলেন। এটা ছিল টাইপ করা। ঘটনার সময় তার স্বামী ছিলেন নরওয়ের নৌবাহিনীর একজন নাবিক। খামটির ওপর লেখা ছিল বিলি না হলে প্রেরকের কাছে ফেরত পাঠান। এ সপ্তাহের আগে চিঠিটি কখনোই তার স্বামীর হাতে পড়ে নি। চিঠিটি হাতে পেয়ে অ্যালেনের মেয়ে মেলিসা ইন্টারনেটে খুঁজেতে থাকেন রফ ক্রিস্টোফারসেন নামে কাউকে। খুঁজতে থাকেন তার ফোন নম্বর। এক পর্যায়ে পেয়ে যান। তিনি ফোন করেন। ফোন ধরেন রফ ক্রিস্টোফারসেনের ছেলে। তিনি থাকেন ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারায়। রফ ক্রিস্টোফারসেনের ছেলের বয়স এখন ৬৬ বছর। তিনিই ফোন ধরেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, আমি তখন অফিসে ছিলাম। কেউ একজন আমাকে ফোন করলেন। তিনি আমার নাম নিয়ে এক রকম গোলকধাঁধায় পড়লেন। কারণ, আমার পিতার নাম আর আমার নাম একই। মেলিসা আমার কাছে জানতে চাইলেন আমি কোথায় বড় হয়েছি। আমি তাকে বললাম। এসব শুনে তিনি আমাকে চিঠির বিষয়টি বললেন। এভাবেই আমি তা খুঁজে পেয়েছি।

তার মা ভার্জিনিয়া যখন চিঠিটি লিখেছিলেন তখন জন্ম হয় নি তার ছেলে রফ ক্রিস্টোফারসেনের। তা সত্ত্বেও তাকে নিয়ে তার মা যেসব কথা লিখে গেছেন তা তার কাছে অত্যন্ত স্পেশাল। এখন থেকে ৬ বছর আগে তার মা মারা গেছেন। তিনিই সেই ১৯৪৫ সালে তার স্বামীর উদ্দেশে ওই প্রেমপত্রখানি লিখে গেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, আমি তোমাকে ভালবাসি রফ, যেমনটি আমি ভালবাসি সূর্য্যরে উত্তাপ। আমার জীবনে তোমার অর্থ এমনটাই। সূর্য্যই তো সব কিছুর নেপথ্যে। তার জন্যই তো আমি আবর্তিত হই।

সবচেয়ে আনন্দের কথা হলো এখনও ভার্জিনিয়ার স্বামী রফ ক্রিস্টোফারসেন বেঁচে আছেন। ছেলে ক্রিস্টোফারসেন চিঠিটি হাতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তার পিতা ক্রিস্টোফারসেনকে ফোন করেন। তার পিতার বর্তমান বয়স ৯৬ বছর। তিনি বসবাস করেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। তাকে ছেলে ক্রিস্টোফারসেন চিঠি পড়ে শোনান ফোনেই। ৭২ বছর পরে স্ত্রীর লেখা প্রেমপত্র পেয়ে তার বুকটা প্রসারিত হয়ে উঠেছে। আবেগে তিনি কেঁদেছেন। ওই প্রেমপত্রে তিনি খুঁজে পেয়েছেন সেই কুসুম কুসুম ভালবাসার ঘ্রাণ।

তিনি বলেন, এতটা বছর পরেও আমার জন্য এমন বিস্ময় অপেক্ষা করছিল! এই চিঠিটি পেয়ে আমি ভীষণ খুশি। চিঠিটি এখনও টিকে আছে ভাবতেই আমার অবাক লাগে। আসল ভালবাসা একেই বলে। আমি ভার্জিনিয়ার স্পর্শ পাচ্ছি যেন। আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছি আমি।

Related Posts

Leave a Reply