September 21, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ধূপকাঠি জ্বালানোর আগে একশবার ভাবুন, নচেৎ …   

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

যে কোনও ধর্মিও উপাচার মানেই ধূপকাঠির ব্যবহার হবেই হবে। একটা নয়, দুটো নয়, শয়ে শয়ে মোমবাতি নিজের শরীকে জ্বালিয়ে ভগবানের আগমন কালকে স্বরণীয় করে রাখবে। এটাই তো আমাদের দেশে রীতি, যা হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে। কিন্ত এবার সময় এসেছে এই প্রথাতে ফুল স্টপ লাগানোর। কারণ এমনটা না করলে কিন্তু আমাদের শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

মানে! ধূপকাটির সঙ্গে আমাদের শরীরের ভাল-মন্দের কী সম্পর্ক? আছে মশাই, বেশ গভীর সম্পর্ক আছে। তাই সাবধান হওয়াটা জরুরি। না হলে কিন্তু…! আসলে ধূপের শরী থেকে ধোয়া বেরয়, তা আমাদের শরীরে পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। দীর্ঘ সময় ধরে তা যদি আমাদের দেহে প্রবেশ করতে থাকে, তাহলে নানাবিধ শারীরিক সমস্য়া মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। যেমন..

১. নার্ভের সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে:

ভগবানের কাছে প্রর্থনা করার সময় অনেকেই ধূপ জ্বালিয়ে থাকেন। আচ্ছা আপনাদের কি মনে হয় ভগবানের নাক পর্যন্ত ধূপের ধোঁয়া পৌঁছাতে পারে! মনে তো হয় না। কারণ দেবলোকের দুরত্ব যে নেহাতই কম নয়! তাই এবার থেকে সর্বশক্তিমানকে ইমপ্রেস করতে দয়া করে ধূপ জ্বালাবেন না। কারণ গবেষণা বলছে ঘরের অন্দরে ধূপ জ্বালালে কার্বোন মনোঅক্সাইডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাবে নানাবিধ নিউরোলজিকাল প্রবলেমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। কারণ কার্বোন মনোঅক্সাইড মারাত্মকভাবে খারাপ প্রভাব ফেলে নার্ভের উপর। তাই সাবধান!

২. ঘরের অন্দরে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়:

ধূপের সুন্দর গন্ধে সারা ঘর ভরে যাওয়ার পর আমাদের অনেকেরই মন খুব খুশি হয়ে যায়। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে এই গন্ধ একেবারেই শরীরে পক্ষে ভাল নয়। কারণ ধোঁয়ায় উপস্থিত নাইট্রোজন অক্সাইড এবং কার্বোন মনোঅক্সাইডে সারা ঘরে সুন্দর গন্ধ ছড়িয়ে দিলেও আদতে কিন্তু ঘরের ভিতকরের বায়ুকে বিষাক্ত করে দেয় আর এই বিষাক্ত বায়ু ফুসফুসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলেই সব শেষ।

৩. কোষেদের কর্মক্ষমতা কমে যায়:

গবেষণা বলছে ধূপের ধোঁয়া এবং তাতে উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর ধীরে ধীরে একাধিক কেষের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। সেই সঙ্গে কোষেদের আরও নানাভাবে ক্ষতি করে থাকে। ফলে শরীরের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে।

৪. সি ও পি ডি-এর আশঙ্কা বাড়ে:

ধূপে উপস্থিত কার্বোন মনোঅক্সাইড, সালফার ডিওঅক্সাইড এবং ক্ষতিকারণ মনাইট্রোজেন দিনের পর দিন ধরে শরীরে প্রবেশ করতে থাকলে অ্যাস্থেমা এবং সিওপিডি-এর মতো রোগের প্রকোপ চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়।

৫. ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়:

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ধূপকাঠি থেকে যে ধোঁয়া বেরয়, তাতে বেঞ্জন, কার্বোনায়েল এবং পলি অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বোনের মতো কার্সিনোজেনিক উপাদান রয়েছে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তবে এমনটা কিন্তু একদিনেই হয় না। দীর্ঘদিন ধরে ধোঁয়ার মাধ্যমে এই উপাদানগুলি শরীরে প্রবেশ করতে করতে চুরান্ত ক্ষতি করে থাকে।

৬. চোখ এবং ত্বকের ক্ষতি হয়:

ধূপের ধোঁয়া যেহেতু অস্বাস্থ্যকর। তাই এমন ধোঁয়ার মধ্যে অনেকক্ষণ থাকলে চোখ থেকে জল পড়া এবং স্কিনের নানাবিধ সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। সেই কারণেই তো গর্ভবতী মহিলাদের ধুপের ধোঁয়ার মধ্যে থাকতে মানা করেন চিকিৎসকেরা।

৭. রেসপিরেটারি স্টিস্টেমের মারাত্মক ক্ষতি হয়:

দীর্ঘদিন ধরে ধূপ ব্যবহার করলে আপার রেসপিরেটারি ট্রাক্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে লাং ক্যান্সার সহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই নিজের এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের শরীরের কথা ভেবে আজ থেকেই ধূপের ব্য়বহার বন্ধ করুন।

৮. কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়:

একেবারেই ঠিক শুনেছেন, ধূপের ধোঁয়ার কারণে লাং-এর যেমন মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে, তেমনি কিডনির কর্মক্ষমতাও কমতে শুরু করে। আসলে ধোঁয়া যে মুহূর্তে শরীরে প্রবেশ করে, তখনই সারা দেহে ক্ষতিকর টক্সিনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। বিশেষত লেদের পরিমাণ বেড়ে যায়। এইসব টক্সিক উপাদানকে শরীর থেকে বার করতে কিডনিকে ওভার টাইম কাজ করতে পারে। এইভাবে চলতে থাকলে এক সময় গিয়ে কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে।

৯. শরীরের অন্দরে প্রদাহ বেড়ে যায়:

অ্যাস্থেমা রোগীদের ভুলেও ধূপের ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে তাদের শরীরে প্রদাহ বেড়ে যায়। ফলে শ্বাসকষ্ট সহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এখানেই শেষ নয়, ধূপের ধোঁয়ার কারণে ব্রঙ্কিয়াল টিউবে জ্বালা হওয়ার মতো সমস্য়াও দেখা দিতে পারে। তাই সাবধান

১০. অ্যালার্জির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়:

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ধূপের ধোঁয়া নাকে যাওয়া মাত্র অনেকেরই মারাত্মক হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যায়। কারণ তাদের শরীর ধূপের ধোঁয়ার সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করা নানাবিধ উপাদানগুলির সঙ্গে লড়াই চালাতে পারে না। ফলে যুদ্ধে হেরে গিয়ে দরজা খুলে দেয় নানা রোগের জন্য। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই যদি দেখেন ধূপের ধোঁয়ায় কষ্ট হচ্ছে, তাহলে ভুলেও ঘরের ভিতর ধূপ জ্বালাবেন না যেন!

Related Posts

Leave a Reply