May 15, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

হৃদয় চিরদিনের জন্য ভালো রাখতে ১০টি ম্যাজিক 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

মাদের প্রায় সকলেই হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখার মৌলিক অভ্যাসগুলো সম্পর্কে জানি। কিন্তু এমন কিছু অভ্যাস আছে যেগুলো আমাদের অজান্তেই আমাদের হৃদপিণ্ডকে ধ্বংস করছে। কিন্তু একটু সচেতন হলেই ওই বাজে অভ্যাসগুলো এড়িয়ে চলা সম্ভব।

এখানে রইল এমন ১০টি পরামর্শ যেগুলো মেনে চললে আপনার হৃদপিণ্ড চিরদিনের জন্যই ভালো থাকবে।

১. ক্ষতিকর চর্বি সম্পর্কে জানুন
আমাদের বেশিরভাগই ভিন্ন ধরনের চর্বির পার্থক্য সম্পর্কে জানেন না। সবচেয়ে খারাপ চর্বি হলো ট্রান্স ফ্যাট। এবং এর সকল উৎস খাদ্যও খারাপ যার মধ্যে রয়েছে জাঙ্কফুড, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, কুইক স্ন্যাকস এবং বেকারি আইটেম। ট্রান্স ফ্যাট রক্তে বাজে কোলেস্টেরলের হার বাড়িয়ে ভালো কোলোস্টেরলের হার কমিয়ে আনে। তবে এরপরও আপনাকে অসম্পৃক্ত (unsaturated) এবং বহুসম্পৃক্ত (polysaturated) চর্বি খেতে হবে। এসব চর্বি স্বাস্থ্যকর এবং দেহের জন্য জরুরি।

২. বেশি দীর্ঘসময় ধরে বসে থাকবেন না
আমরা জানি যে এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃসংবাদ যে আমরা নিষ্ক্রিয় ডেস্কভিত্তিক চাকরি করি জীবিকার জন্য। কিন্তু খুব বেশি দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকাটা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ এক গবেষণায় দেখা গেছে, এতে হৃদরোগের ঝুঁকি ১৪৭ গুন বেড়ে যায়। আর হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকিও বেড়ে যায় ৯০%।

৩. পরোক্ষ ধুমপান একটি উপদ্রব!
আপনি নিজে ধুমপান না করলেও আপনার আশে-পাশের লোকজন যদি ধুপমান করেন এবং তাদের ফোকা সিগারেটের ধোয়া আপনার দেহে প্রবেশ করে তাহলে আপনার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০% বেড়ে যায়। আর আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাহলে তো সেই ঝুঁকি আরো বেশি হারে বাড়বে।

৪. দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখুন
আমরা অনেকেই হয়তো দাঁতের স্বাস্থ্যের সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের সংযোগ সম্পর্কে জানি না। দাঁত রোগমুক্ত থাকলে হৃদপিণ্ডও রোগমুক্ত থাকে। কারণ মাড়ির রোগে আক্রান্ত হলে যে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয় তা দেহের রক্তপ্রবাহের মধ্য দিয়ে চলাচল করে রক্তে সি-রিয়েকটিভ প্রোটিন এর মাত্রা বাড়িয়ে তোলে এবং রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোতে প্রদাহ সৃষ্টি করে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

৫. ৭ ঘন্টার ঘুম
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ছয় ঘন্টার কম ঘুমান তাদের নানা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুন বেড়ে যায়; যার মধ্যে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকও রয়েছে। কারণ ঘুম কম হলে স্বাভাবিক শারীরিক তৎপরতাগুলো বাধাগ্রস্ত হয়। যা আপনার রক্তচাপকেও প্রভাবিত করতে পারে এবং হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যহত করতে পারে।

৬. নিজের রক্তচাপ সম্পর্কে জানুন
যারা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত তাদের অর্ধেকই নিজেদের রোগ সম্পর্কে জানেন না। এ থেকেই বুঝা যায় বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা কতটা জরুরি। আপনার বয়স যদি ১৮ থেকে ৩০ বছর হয় তাহলে প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পরপর আপনার রক্তচাপ পরীক্ষা করানো জরুরি। আর আপনার বয়স যদি ৩০ এর বেশি হয় তাহলে প্রতিবছরই রক্তচাপ পরীক্ষা করানো উচিত।

৭. ইয়ারফোন খুলে রাখুন
উচ্চ আওয়াজও হৃদপিণ্ডের অবস্থা খারাপ করে দিতে পারে! গবেষণায় দেখা গেছে, রাস্তার গাড়ির আওয়াজ এবং উচ্চ স্বরের সঙ্গীতও হার্টবিট বাড়িয়ে দিতে পারে। এমনকি রক্তচাপও বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে, ধীরগতি এবং নিচু আওয়াজ আপনার দেহ ও মনের ওপর প্রশান্তকরণ প্রভাব ফেলতে পারে।

৮. রাত ৮টার পর প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন না
মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের প্রযুক্তি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলেই প্রমাণিত হয়েছে নানা গবেষণায়। কিন্তু আজকের এই ডিজিটাল প্রযুক্তিবহুল জীবন-যাপনে সেসব ত্যাগ করা একদমই সম্ভব নয়। সুতরাং রাত ৮টার পরই আর কোনো গ্যাজেট বা যন্ত্র ব্যবহার করার অভ্যাস বাদ দিন। এসব যন্ত্র থেকে নির্গত নীল আলো ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া এতে আপনার ঘুমেরও ব্যঘাত ঘটতে পারে।

৯. হৃদপিণ্ডের জন্য স্বাস্থ্যকর এমন খাবার খান
প্রতিদিন পাঁচবার তাজা ফল, সবজি, শুকনো ফল, বাদাম এবং বীজজাতীয় খাবার খান। সকল প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন, কুকি, পরিশোধিত ময়দায় তৈরি পাউরুটি এবং পাস্তা খাওয়া বাদ দিন। মিষ্টি পানীয় সবচেয়ে খারাপ কালপ্রিট, যার মধ্যে সোডা এবং প্যাকেটজাত জুসও আছে। সবার আগে এসব খাবার বাদ দিতে হবে কারণ এসবে আঁশের চেয়েও সুগার বেশি।

১০. প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৫দিন ব্যায়াম করুন
হৃদরোগ থেকে বাঁচতে চাইলে আপনাকে প্রতিদিনই নড়াচড়া করতে হবে। হোক তা যোগ ব্যায়াম, নাচ, সাতার, হাঁটাহাঁটি বা সাইকেল চালানোর মাধ্যমে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাই মাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে সুস্থ থাকতে হলে ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের প্রতিদিন অন্তত ৩০ বা ১৫ মিনিট করে সপ্তাহ অন্তত ৫দিন শরীরচর্চা করতে হবে। এতে শুধু হৃদরোগই নয় বরং অবসাদ, ডায়াবেটিস, বদহজম, মেটাবোলিক সিন্ড্রোম, মেরুদণ্ডীয় ফাটল এবং এমনকি মলাশয়ের ও স্তনের ক্যান্সার থেকেও রেহাই পাবেন।

Related Posts

Leave a Reply