May 17, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

আতঙ্কে দূর্গা-কালী ছেড়ে বাড়ির পথে তারা, মূর্তি ছাড়া এবার পুজো কী … 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

রোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে এবার কলকাতার কুমোরটুলি ছেড়ে মৃৎশিল্পীরা গ্রামে গ্রামে তাঁদের বাড়ি ফেরার পথ ধরেছেন। মৃৎশিল্পীদের এই চলে যাওয়ার কারণে মাথায় হাত কলকাতার দুর্গা পূজা উদ্যোক্তাদের। কারণ কুমোরটুলি থেকেই আসে অধিকাংশ প্রতিমা। প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি প্রতিমা তৈরী হয় কুমোরটুলিতে। আর বছরের এই সময় গমগম করে কুমোরটুলি। কারণ পূজার আর তিন মাসও বাকি নেই।তাহলে কি এবার পুজোতেও খরা ?

কিন্ত এবার সেখানে শুধুই নিস্তব্ধত। সাধারণত পূজার আগে কুমোরটুলিতে প্রতিমা তৈরীর কাজ করতে ভিড় জমান প্রায় হাজারখানেক কারিগর। কুমোর পাড়ার এই ছোট্ট পরিসরে কয়েক মাস থেকে খেয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ উৎরে দেন তারা। কিন্তু এ বছর কুমোরটুলিতে আসার বিশেষ উৎসাহ নেই ওইসব কারিগরদের মধ্যে।

করোনার আতঙ্কে রোজগার করতে বেরোনোর বদলে ঘরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন নদীয়া- বর্ধমান – মেদিনীপুরের ওই কারিগরেরা। আর যারা ইতিমধ্যে কুমোরটুলিতে পৌঁছে গিয়েছেন তারাও ভয়ে বাড়ি ফিরতে চাইছেন।

মৃৎশিল্পী চায়না পালের কাছে এই বছর দশ-বারোটি প্রতিমা তৈরীর কারিগর এসেছিলেন। আর মাত্র দু’জনকে দিয়েই কীলি প্রতিমা তৈরীর কাজ হাতে নিয়েছিলেন চায়না। ভাবনা ছিল এরপরে শুরু করবেন দুর্গা মূর্তি গড়ার কাজ। কিন্তু নদীয়ার বাসিন্দা ওই দুই যুবক কলকাতা পৌঁছানোর পর থেকে শুরু হয় বাড়ি থেকে ঘনঘন ফোন আসা।

কলকাতায় সংক্রমণ বেশি হওয়ায় এবং কুমোরটুলির আশপাশে একাধিক কনটেইনমেন্ট জোন থাকায় তাঁদের নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন পরিজনেরা। ফলে গত সপ্তাহে বাবা মায়ের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুর্গা প্রতিমা শুরুর আগেই বাড়ির পথ ধরেছেন ওই দুইজন।

চায়নার কথায়, ওরা থাকতে চাইলেন না। অন্য কারিগর এ পরিস্থিতিতে আসতে চাইছেন না। বলছেন করোনা একটু কমুক, তারপর যাবো।

তিনি বলেন, “বায়না পেয়েও তো লাভ হলো না। প্রতিমা তো করতেই পাচ্ছিনা।”

একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী জয়ন্ত পাল। বললেন, “বাড়ির প্রতিমা তৈরীর কয়েকটি বরাত পেয়েছি। কিন্তু কারিগরেরা কেউ আসতে চাইছেন না। কারিগরদের থাকা-খাওয়া সমস্যা আছে। কোনোভাবে সংক্রমিত হয়ে গেলে যে বড় বিপদে পড়বেন সেই আশঙ্কা থেকেই এবছর কুমোরটুলি এড়াতে চাইছেন তারা। ফলে কাজ এখনো শুরু করতে পারিনি।”

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিমা তৈরির কাঁচামাল কিভাবে মিলবে বা বায়না আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় থাকলেও কারিগরেরা যে আসবেনই, তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন মৃৎশিল্পীরা। অন্যান্য বছর ওই কারিগরদের একটি বড় অংশ ভিন রাজ্যে পাড়ি দিলেও এবার তাদের প্রায় কেউই যাননি। ফলে কারিগরের যোগান থাকবে অনেকটাই বেশি -এমনই মনে করছিলেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী সমিতির সম্পাদক রনজিত সরকার।

কিন্তু সব হিসেব উল্টে দিয়েছে করোনার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। রনজিত বলেন “কুমোরটুলির কারিগরদের দুই-তৃতীয়াংশ আসেন নদীয়া থেকে। কিন্তু কলকাতায় সংক্রমনের ভয়ে অনেকেই আসছেন না আর যারা এসেছেন তাদের অনেকেই ফেরার পথ ধরছেন। ফলে কারিগরের সংকট এবার বড় অন্তরায় হয়ে দেখা দিতে চলেছে। এমন হলে আরো প্রতিমা তৈরি করা যাবে কিনা তা বলা মুশকিল।”

Related Posts

Leave a Reply