May 17, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ঘরের ভেতরেও রয়েছে বিষ, বাঁচবেন কিভাবে ?

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

কে বলতে পারে বিপদ কখন এসে দোড় গোড়ায় হাজির হয়! সম্প্রতি একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা গেছে গত দু বছর ধরে আমাদের দেশের প্রায় ১.২৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে একটা আজব কারণে। কি সেই কারণ জানেন? সেই মৃত্যু দূতের নাম হল ইনডোর পলিউশান বা ঘরের ভিতরকার দূষণ। রাস্তায় যে পরিমাণে দূষণের সম্মুখিন আমাদের হতে হয়, তার থেকে কিছু কম হতে হয় না আমাদের ঘরের ভিতরে।

প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে অনেক সময় ঘরের ভিতরে থাকা বিষ বাষ্প যতটা আমাদের ক্ষতি করে থাকে, ততটা পরিবেশ উপস্থিত ক্ষতিকারক গ্রিন হাউজ গ্যাসও করে না। তাই সাবধান হওয়ার সময় এসে গেছে বন্ধুরা। প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকটি সরকারি রিপোর্ট অনুসারে প্রতি বছর কম-বেশি প্রায় ৪.৩ মিলিয়ান মানুষ ইনডোর পলিউশানের কারণে নিউমোনিয়, স্ট্রোক, লাং ক্যান্সার, হার্ট ডিজিজ এবং ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে পরছেন।

এমনকি এই সব রোগের কারণে মৃত্যুও ঘটছে অনেকের। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে একটাই প্রশ্ন মনে আসতে পারে, তা হল ঘরের অন্দরের বাতাসকে শুদ্ধ করা যায় কিভাবে? এমনটা করতে আজকাল বাজারে বেশ কিছু অত্যাধুনিক মেশিন এসেছে বটে, তবে কত জনই বা পারেন সেই সব এক্সপেনসিভ মেশিন কিনতে! তাই তো এই প্রবন্ধে এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা ইনডোর পলিউশানের হাত থেকে আপনাকে এবং আপনার পরিবারের বাকি সদস্যদের বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকতে পারে।

ভেন্টিলেশনঘরের মধ্যে উপস্থিত দূষিত বায়ু বের করে দেওযার জন্য যথাযথ ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। তবে তাই বলে সব জালনা-দরজা খুলে দেবেন না যেন, তাতে ঘরের অন্দরে দূষিত বায়ুর মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। পরিবর্তে এক্সহস্ট ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন। ইনডোর পলিউশন কমাতে এই পদ্ধতিটি দারুন কাজে আসে কিন্তু! বেশ কিছু কেস স্টাডি চলাকালীন জানা গেছে রান্না করার সময় ঘরের মধ্যে ক্ষতিকর পলিউটেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি থাকে। তাই এই সময় বেশি করে এক্সহস্ট ফ্যান বা চিমনি ব্যবহার করতে হবে। আর যদি রান্না ঘরে এই দুয়ের ব্য়বস্থা না থাকে, তাহলে জানলা খুলে দেবেন যাতে ধোঁয়া বাইয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। প্রসঙ্গত, গবেষকরা লক্ষ করেছেন গ্যাস স্টোভ মাত্র একটি পদ রান্না করলেই ঘরের ভিতরে ক্ষতিকারক নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যেতে শুরু করে, যা নানাভাবে আমাদের শরীরের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। তাই এই বিষয়টা খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন।

সুগন্ধি মোমবাতি: ইনডোর পলিশনের পিছনে এই বিশেষ ধরনের মোমবাতির ভূমিকাকে কোনও ভাবে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। কারণ এই মোমবাতিগুলি, বিশেষত প্যারাফিন ক্যান্ডেল জ্বালানোর সময় এদের শরীর থেকে বেঞ্জিন, টোলুয়েন এবং শুট নামক বেশ কিছু ক্ষতিকারক উপাদান বাতাসে মিশতে শুরু করে, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাই ভুলেও এবার থেকে সেন্টেড মোমবাতি ব্যবহার করবেন না যেন!

সল্ট ল্যাম্প: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ক্রিস্টালের মতো দেখতে নুনের প্রদীপ ইনডোর পলিশন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষত হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট ল্যাম্প এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে থাকে। আসলে এই বিশেষ ধরনের ল্যাম্পটি জ্বালানোর সময় এমন কিছু উপকারি উপদান বাতাসে মিশতে শুরু করে, যা ধীরে ধীরে ঘরের মধ্যে উপস্থিত ক্ষতিকারক প্যাথোজেন এবং পলিউটেন্টদের ধ্বংস করে দেয়। ফলে ঘরের অন্দরের বাতাস দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস পায়।

ঘরের ভিতরে গাছ রাখুন: বায়ু দূষণকে কমাতে গাছের থেকে উপকারি বন্ধু আর কেউ হতে পারে বলে তো মনে হয় না। তাই তো চিকিৎসকেরা ইনডোর পলিউশানের হাত থেকে বাঁচতে অফিস ডেস্কে এবং ঘরের ভিতরে গাছ বসানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি এই বিষয়ের উপর করা “নাসা”এক গবেষণায় দেখা গেছে নানা কারণে অফিস এবং ঘরের অন্দরে অ্যামোনিয়া, ফরমালডিহাইড এবং বেঞ্জিনের মতা উপাদান বাতাসে মিশে থাকে। এই সব উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে গাছের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

নিয়মিত কার্পেট পরিষ্কার করতে ভুলবেন না: দরজার গোড়ায় রাখা কার্পেটে প্রতিনিয়ত নানা ক্ষতিকারক জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়ারা বাসা বাঁধতে থাকে। এরা সুযোগ পেলেই বাতাসে মিশে গিয়ে আমাদের অসুস্থ করে তোলে। তাই প্রতি সপ্তাহে একবার করে ডোর কার্পেট পরিষ্কার করা উচিত। প্রসঙ্গত, অনেক সময় কার্পেটে ধুলো জমতে জমতে এমন অবস্থা হয় যে তা অ্যাস্থেমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে দেয়। তাই এই বিষযে সাবধান থাকাটা জরুরি। ঝাঁট দেওয়া বন্ধ করুন: চিকিৎসকেদের মতো ঘরের অন্দরের বাতাস ক্ষতিকর উপাদানে ভরে যাওয়ার পিছনে ঘর ঝাঁট দেওয়ার অভ্যাসকে অনেকাংশে দায়ি করা যেতে পারে। কারণ ঘর পরিষ্কার করার সময় মেঝেতে থাকা ধুলো এবং জাবীণু বাতাসে মিশে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে অ্যালার্জি এবং অ্যাস্থেমার মতো রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তাই সুস্থ থাকতে এবার থেকে ঘর না ঝাট দিয়ে একটা কাপড় হালকা ভিজিয়ে একটু মুছে নিন। এমনটা করলে ঘর পরিষ্কারও হবে, আবার শরীরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও কমবে।

Related Posts

Leave a Reply