May 22, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

স্ত্রীর পরকীয়া স্বামীর বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে, এরকম প্রতিশোধ কোনও দিন শোনেন নি

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

ঠাৎ করেই নিজেকে এক হৃদয়ভাঙা পরিস্থিতির মাঝে দেখতে পেলেন ভদ্রলোক। এক সোজাসাপ্টা অবস্থা, কিন্তু নির্মম। স্ত্রী প্রতারণা করেছেন। পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। তারও আবার নিজেরই বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে! এই বন্ধুটি তার পরিবারের আরেক সদস্যের মতোই ছিলেন। একটা পর্যায়ে বুঝতে পারলেন, তার স্ত্রী এবং বন্ধু দুজনে চুটিয়ে প্রেম করছেন। ভেঙে পড়লেও ঘুরে দাঁড়ালেন। প্রতিশোধ নিলেন চরমভাবে। কিন্তু হাত নোংরা হয় এমন কিছু করেননি। অথচ একেবারো ভদ্রোচিত উপায়ে নিষ্ঠুর হয়ে উঠলেন তিনি। সোশাল মিডিয়ায় ঝাল ঝারলেন। সেখানেই বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন।

অনেক লিখাই লিখেছেন তিনি। এখানে ভাষান্তর করে দেয়া হলো।
আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে নিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা? আমি তোমার ক্যারিয়ার শেষ করে দেবো। জনসমক্ষে দুজনকেই অপমানিত করবো।

(কিছু শব্দগুচ্ছের সংক্ষেপ রূপ ব্যবহার করেছেন পরবর্তিতে। সেগুলো বুঝিয়েও দিয়েছেন এখানে)

এমডাব্লিউ = মাই ওয়াইফ (আমার স্ত্রী)

এফবিএফ = ফরমার বেস্ট ফ্রেন্ড (সাবেক কাছের বন্ধু)

এফবিএফডাব্লিউ = ফরমার বেস্ট ফ্রেন্ডস ওয়াইফ (সাবেক কাছের বন্ধুর স্ত্রী)

এফবিএফ এবং এফবিএফডাব্লিউ একেবারে পরিবারের মতো ছিল এমডাব্লিউ এর কাছে…সংক্ষেপ করা শব্দগুলো এভাবেই ব্যবহার করেছে তিনি। বুঝতে পাঠকদের জন্যে বেশ অসুবিধা হতে পারে। তাই প্রতিশোধ পরায়ণ স্বামীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে লেখা পোস্টগুলো সহজ করেই তুলে ধরা হলো।

১. প্রাক্তন বেস্ট ফ্রেন্ড এবং তার স্ত্রী বেশ কয়েক বছর ধরে আমার এবং আমার স্ত্রীর পরিবারের সদস্যের মতোই ছিল। আমরা চারজন একেবারে কাছকাছি থাকতাম। আমাদের বাচ্চারাও একই বয়সের এবং আমরা সবাই খুবই কাছের বন্ধু ছিলাম। আমরা একটা বড় পরিবার। সপ্তাহে কয়েকবার একসাথে ডিনার করতাম আমরা। ছুটিতে একসাতে ঘুরতে যেতাম। আমি প্রাক্তন কাছের বন্ধুকে আমার ভাই বলেই মনে করতাম। আমার স্ত্রী এবং তার স্ত্রীও খুব কাছের বন্ধু হয়ে উঠেছিল।

২. পাঁচ মাস আগে আমি আমার স্ত্রী এবং বন্ধুর প্রেমের সম্পর্ক আবিষ্কার করে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ি। আমার বউ তার কম্পিউটারে তার ইমেইল খুলে রেখে ছিল। সেখানে একটা ইমেইলে দেখলাম যে আমার স্ত্রীর দীর্ঘদিনের থেরাপিস্ট তাকে জানাচ্ছেন, এবারের সেশনে স্ত্রীর সাথে যোগ দেবেন আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার বুকের ভেতরটা খালি হয়ে গেলো। আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু আমার স্ত্রীর সাথে থেরাপি সেশনে যায় অথচ কেন তা আমাকে একদিনও বলা হয়নি? আরো কিছু ইমেইলে বুঝলাম, ছয় সপ্তাহ ধরে তারা দুজন একসঙ্গে থেরাপি সেশনে অংশ নেয়।

৩. আমি মোবাইল ফোনের অ্যাকাউন্ট দেখলাম এবং আবিষ্কার করলাম যে, গত গ্রীষ্ম থেকেই তারা প্রতিদিন শত শত বার্তা আদান-প্রদান করেছে। ছুটির দিনগুলোতে ৫০০ মেসেজও ছাড়িয়েছে। থ্যাঙ্কসগিভিং এবং ক্রিসমাসের মতো অনুষ্ঠানে আমি এবং আমার স্ত্রী উভয়ই তৎপর থাকতাম। বন্ধু এবং তার স্ত্রীও ডিনারের আগে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতেন এবং পরেও থাকতেন। তারা দুজন আমাদের বাড়িতে পুরো সময়টা উপভোগ করতো। মেসেজ প্রমাণ করে যে, আমার স্ত্রী আর বন্ধু এই বাড়িতে থাকা অবস্থাতেই টেক্সট চালাচালি করতো। এমনটা চলেছে একমাস ধরে। যে বিষয়টা আমাকে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে ফেলেছে তা হলো, আমি উপস্থিত থাকা অবস্থাতেই এমনটা চলতো।

৪. একটা পর্যায়ে আমি বিষয়গুলো প্রমাণসহ স্ত্রীর সামনে আনলাম। আমার স্ত্রী স্বীকারও করলেন যে সে এবং আমার কাছের বন্ধু প্রেমে পড়েছে। বললো, এটা ঘটে গেছে। কিভাবে ঘটেছে কোন ধারণাই নেই। আমি তাকে ভালোবাসি এবং তোমার বিষয়ে কোনো প্রেম নেই আমার মনে। একবার দুই পরিবারের বাচ্চারা স্কুল ট্রিপে গিয়েছিল। সেখানে হোটেল রুমে কিছু একটা ঘটে গেছে। সেখান থেকেই ঘটনা দ্রুত এগিয়েছে। ব্যাখ্যা করতে থাকলো স্ত্রী। আমি মাথা নিচু করে বসে রইলাম, তার দিকে তাকাতে পারছিলাম না। তবে তারা দুজন ইতোমধ্যে পরিকল্পনা প্রস্তুত করে ফেলেছে। স্ত্রী আমাকে এবং বন্ধু তার স্ত্রীকে ডিভোর্স করে তারা দুজন একসঙ্গে জুটে যাবে। তবে বাচ্চাদের জন্যে তারা এখোনি কাজটা করতে পারছে না। থেরাপিস্টের সঙ্গে সাক্ষাতের মূল বিষয়টাই সম্ভবত এ ঘটনাকে আমার এবং বন্ধুর স্ত্রীর কাছে সহজে তুলে আনার সম্ভাব্য উপায় হয়ে ওঠে তাদের কাছে। সত্যিকার অর্থেই তারা সবার ভালোর কথা চিন্তা করেই কাজটা ভদ্রোচিতভাবে করতে চেয়েছিল। তারা খুব স্বাভাবিকভাবেই পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা লালন করে গেছে। বিচ্ছেদের জন্যে কিছু কারণের অপেক্ষা ছিল শুধু।

৫. দুই মাস হয়েছে আমার স্ত্রী চলে গেছে। আমি তখন থেকে এবং এখন পর্যন্ত পুরোপুরি বিধ্বস্ত। আমি প্রতিদিন কাঁদি। এই গল্প নিয়ে কয়েকটি অনুচ্ছেদ লিখতেই আমার দু চোখ ভেসে গেছে। এ ঘটনার প্রভাব আমাদের সন্তানদের ওপর কিভাবে পড়বে তা নিয়ে আমার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আমি বেদনায় নীল হয়ে যাই যখন ভাবি আমার সাথে খুবই খারাপ করা হয়েছে।

বছর দুয়েক আগে আমার সেই বন্ধু বোর্ড অব এডুকেশনে একটা আসন পেতে দারুণভাবে চেষ্টা শুরু করে। আমিও তাকে ক্যাম্পেইনের যাবতীয় উপাদান দিয়ে সহায়তা করেছি। আমার স্ত্রী ছিল সুপরিচিত স্কুল ডিস্ট্রিক্ট কর্মী। ফলে সেও তাকে যথাসাধ্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল। অবশেষে সে বিজয়ী হয়েছিল।

৬. বোর্ড সদস্য হিসেবে সে প্রতিটা কমিটিতে যোগদান করতো। আর এটাই তাদের সম্পর্কের ভিত গড়ে দেয়। স্কুলের বিভিন্ন আয়োজন এবং বিকেলের মিটিংয়ে তারা একসাথে হতো।

৭. তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জানার সাথে সাথে আমার বুকে প্রতিশোধের ইচ্ছা জাগলো। আমার মনে হয়েছিল, বোর্ড অব এডুকেশন এবং একজন কর্মীর মধ্যকার সম্পর্কে আসলে বাজে প্রকৃতির রাজনীতি এবং ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ভঙ্গ করে। আমার স্ত্রী তখন প্রশানের একটা পদে আসীন ছিল। ঘটনাক্রমে তাই হলো। প্রাক্তন কাছের বন্ধু পদত্যাগ করলো। সে রীতিমতো বিধ্বস্ত এবং অপমানিত।

৮. তাদের সম্পর্কে বিষয়ে আমার কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ ছিল। তাদের দুজনের পক্ষ থেকেই টেক্সট চালাচালি। দিনে শত শত বার তারা বার্তা আদান-প্রদান করেছে। আমি এসব কিছু বোর্ড অব দ্য সুপারিটেন্ডেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেই। আমি তখন কেবল এক প্রতারিত এবং মর্মবেদনায় জর্জরিত এক স্বামী।

৯. এতে আমারও স্ত্রীও ক্ষতিগ্রস্ত হলো। বন্ধু ও স্ত্রীর আরেক বন্ধু ওখনকারই কর্মী। তিনি আমার স্ত্রীকে জানালেন যে সে আর পদোন্নতি পাচ্ছে না। পরে তার সেই পদে অন্য কাউকে বসানো হয়।

১০. আমি ধুলো ওড়াউড়ি থামার সময় দিলাম। সপ্তাহ দুয়েক চুপচাপ ছিলাম। আমার স্ত্রী চলে যাওয়ার আগে আমি দুজনকেই একটা জিনিস বুঝতে দিলাম যে, আমি কখনোই তাদের ভয়ংকর বন্ধু হিসেবে ছিলাম না।

১১. এ ঘটনার আমাদের ছোট্ট শহরের চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো। এ শহরে বেড়ে উঠেছে আমার প্রাক্তন বন্ধু। এখানেই আমার স্ত্রী চাকরি করেছেন প্রায় ২০ বছরের মতো। আপাতত যেকোনো সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট বা পাবে অনায়াসে চলে যাওয়া, প্রতিবেশীদের সাথে মাখামাখি ইত্যাদি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলো।

তাদের দুজনের দাবি যে তারা একসাথে কিছু করার চেষ্টা করছে, মানুষের সামনে এতটা লজ্জাষ্কর অবস্থায় পড়াও পরও। আমি তাদের সৌভাগ্য কামনা করি। তবে শহরের এখানে সেখানে তাদের দুজনকে একসঙ্গে দেখার কাজটি বেশ মজার বিষয় হবে।

Related Posts

Leave a Reply