May 16, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

একমাত্র মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ওষুধছোট্ট কালো এই মশলায় 

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 

কালিজিরা একটি মাঝারী আকৃতির মৌসুমী গাছ, একবার ফুল ও ফল হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nigella Sativa Linn। এর স্ত্রী, পুরুষ দুই ধরণের ফুল হয়, রং সাধারণত হয় নীলচে সাদা (জাত বিশেষে হলুদাভ), পাঁচটি পাঁপড়ি বিশিষ্ট । কিনারায় একটা রাড়তি অংশ থাকে। তিন-কোনা আকৃতির কালো রং এর বীজ হয় । গোলাকার ফল হয় এবং প্রতিটি ফলে ২০-২৫ টি বীজ থাকে । আয়ুর্বেদীয় , ইউনানী, কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। মশলা হিসাবে ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে, এটি পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। বীজ থেকে পাওয়া তেল। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ওষুধ এই কালিজিরা’।

সাধারণত আমরা খাবারের সঙ্গে মসলা হিসেবে অথবা ভর্তা করে ভাতের সঙ্গে কালিজিরা খেয়ে থাকি। কালিজিরা খাবার হিসেবে গ্রহণের ইতিহাস হাজার বছরের ওপরে। বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণায় পেয়েছেন, সরাসরি কালিজিরা নয়, এর তেল আমাদের শরীরের জন্য বেশি উপকারী। কালিজিরার তেলে ১০০টিরও বেশি উপযোগী উপাদান রয়েছে। এতে আছে প্রায় ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি। আসুন, জেনে নিন কালিজিরার পাঁচটি অন্যরকম ব্যবহার।

পোকামাকড়ের উপদ্রবে :
কালিজিরায় রয়েছে এমন উপাদান, যা পোকামাকড়রা সহ্য করতে পারে না। বিশেষ করে পিঁপড়া তাড়াতে কালিজিরা অসাধারণ। সুতি পাতলা কাপড়ে কালিজিরার ছোট ছোট পোটলা বানিয়ে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় রেখে দিন।

পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হবে। বিশেষ করে আলমারি বা ওয়ারড্রোবে কাপড়ের ফাঁকে ফাঁকে কালিজিরার পোটলা রেখে দিলে পোকামাকড় ও ফাঙ্গাসের হাত থেকে কাপড় রক্ষা পাবে।

সর্দি ও ঠাণ্ডাজনিত মাথাব্যথায় :
ঠাণ্ডা লেগে সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে যায় অনেকেরই। এ কারণে অনেকে শ্বাসকষ্ট ও মাথাব্যথাতেও ভোগেন। কালিজিরা এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দিতে পারে খুব সহজেই। না, খেতে হবে না! সামান্য কালিজিরা হাতের তালুতে নিয়ে আঙুল দিয়ে ডলে নিন।

এরপর পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে ছোট্ট পুটলি তৈরি করুন। এরপর এক নাক বন্ধ করে অন্য নাকে টানতে থাকুন। বন্ধ নাক খুলে যাবে। একই কাজ করুন মাথাব্যথাতেও। সাইনোসাইটিসের ব্যথাও এ কাজ করলে কমে যাবে।

দাঁত ব্যথায় :
দাঁতে ছিদ্র হলে বা মাঢ়ির কোনো সমস্যা হলে দাঁতে প্রচন্ড ব্যথা হয়। এই ব্যথা দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন কালিজিরা।

কালিজিরার তেল দিতে পারেন দাঁতের ছিদ্রতে বা মাঢ়িতে। অথবা সামান্য কিছু কালিজিরা থেঁতো করে নিয়ে দাঁতের ছিদ্রতে দিন বা মাঢ়িতে প্রলেপ দিন। দাঁতের ব্যথা কিছুক্ষণের মধ্যেই কমে যাবে।

শিশুদের ঠাণ্ডা লাগায় :
ছোট শিশুদের চট করে ঠান্ডা লেগে যায়। ঠান্ডার কারণে বুকে কফ জমে যাওয়া বা শ্বাসকষ্ট শিশুদের খুব ভোগায়। শিশুদের ঠান্ডার সমস্যায় কালিজিরা ও সমপরিমাণ সরিষা মিহি করে বেটে নিয়ে শিশুর মাথার তালু ও বুকে প্রলেপ দিন। দ্রুত সমস্যা দূর হবে।

গ্যাসের সমস্যা :
গ্যাসের কারণে বুকে জ্বালাপোড়া, পেটে ব্যথা বা পেট ফুলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে এক গ্লাস জলে এক চা চামচ কালিজিরা ভালো করে ফুটিয়ে নিন। জলে ছেঁকে নিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় পান করুন। আরাম পাবেন।

গায়ের ব্যথা :
গায়ের ব্যথায় খুব ভালো কাজে দেয় কালিজিরার তেল। তেল হালকা গরম করে নিন। ব্যথার জায়গায় আলতো হাতে লাগান। মালিশ করবেন না। ব্যথা বেশি হলে দিনে অন্তত দু বার এভাবে কালিজিরার তেল ব্যবহার করুন।

এছাড়া কালিজিরার তেলের উপকার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

১। ইনসুলিন রোধ হ্রাস করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।

২। কাশি ও হাঁপানির উপশম, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, হৃদরোগের আশঙ্কা হ্রাস করে।

৩। চুল পড়া কমাতে ও ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কালিজিরার তেলের তুলনা হয় না।

৪। মায়ের বুকে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে কালিজিরার তেল বিশেষ কার্যকরী।

৫। জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করার জন্য কালিজিরা যথেষ্ট উপকারী বন্ধু।

৬। এতে রয়েছে ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান। পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে ক্ষুধা বাড়ায়। যারা মোটা হতে চান, তাদের জন্য কালিজিরা উপকারী পথ্য।

৭। যাদের শরীরে জল জমা বা হাত-পা ফুলে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই তেল বেশ উপকারী।

৮। কালিজিরায় থাকা অ্যান্টিমাইক্রোরিয়াল এজেন্ট শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংস করে। এই উপাদানের জন্য শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া, সংক্রামক রোগ হতে বাধা দেয়।

৯। মেধা বিকাশের জন্য কালিজিরার তেল কাজ করে দ্বিগুণ হারে।

১০। দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালিজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে। জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মরে।

১১। কালিজিরা কৃমি দূর করার জন্য কাজ করে। তারুণ্য ধরে রাখে দীর্ঘকাল।

Related Posts

Leave a Reply