May 11, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

মেয়ের জন্য ৩০ বছর ‘বাবা’ সেজে রইলেন বিধবা!

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
নিশের বাতাবরণ থেকে কি বেরোতে পেরেছে ভারতবর্ষ? আজও এদেশের সমাজে পুরুষতান্ত্রিকতার নিগড় বহমান। ফের সেই প্রমাণ মিলল তামিলনাড়ুর ঘটনায়। সেখানে গ্রামের লোকজনের চোখ এড়িয়ে মেয়েকে বড় করে তুলতে টানা ৩০ বছর ‘পুরুষ’ সেজে থাকতে হয়েছে বিধবা মহিলাকে।

তামিলনাড়ুর প্রত্যন্ত গ্রাম কাট্টুনায়াকানপতি। সেখানকার সমাজ এখনও এতটাই পিছিয়ে যে মেয়েদের, বিশেষত ঘরের বউদের বাইরে চাকরি করতে যাওয়াকে ভাল চোখে দেখে না কেউ। এতে একঘরে হওয়ার ভয়ও রয়েছে। আর সমাজের এই লঘুতার কারণে বেঁচে থাকার অন্য উপায় বেছে নিয়েছেন এস পেটচিয়াম্মাল। ৩০ বছর ধরে ‘পুরুষ’ সেজে রয়েছেন তিনি, একার হাতে সামলেছেন সংসার।

জানা গেছে ওই মহিলার বয়স যখন ২০ বছর, তখনই স্বামীকে হারাতে হয় তাঁকে (Tamil Nadu)। বিয়ের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় বৈধব্যের অভিশাপ নেমে এসেছিল, মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল তাঁর।

এরপর একমাত্র কন্যাকে কীভাবে মানুষ করবেন তা ভেবে পাচ্ছিলেন না। কারণ খেটে খাওয়ার উপায় নেই। মেয়ে হয়ে চাকরি করতে বেরোচ্ছেন শুনলেই রে রে করে উঠবে গ্রামের লোকজন।

অনেক ভেবে তাই এই উপায় বের করেন পেটচিয়াম্মাল। নিজের স্বামীর ছদ্মবেশ ধরেন তিনি। মেয়ের মা নয়, বাবা হয়ে তাঁকে মানুষ করার জন্য পরিশ্রম করেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, কনস্ট্রাকশন সাইটে ঠিকে কর্মীর কাজ, কখনও বা চায়ের দোকানে মজুরের কাজ জুটেছিল তাঁর। পেট চালাতে অনেকটা কষ্ট করতে হয়েছে স্বামী মারা যাওয়ার পরেই মন্দিরে গিয়ে চুল কেটে ফেলেছিলেন তিনি। সঙ্গে শার্ট আর লুঙ্গি পরে থাকতেন। তিনি যে আসলে পুরুষ নন, সেই পরিচয় কেবল জানতেন তাঁর আত্মীয়-পরিজন এবং কাছের মানুষরা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ১০০ দিনের মজুরের কাজ, কোনও কাজই বাদ দেননি পেটচিয়াম্মাল। যখন যা পেয়েছেন তাই করেছেন। স্বামীর মুথুর নাম নিয়েই আধার কার্ড, ভোটার কার্ডের মতো সরকারি নথিপত্র তৈরি করেছিলেন তিনি। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে টাকা জমিয়েছেন কেবল মেয়ের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে।

এখন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। তবে নিজের বেশ বদলাননি পেটচিয়াম্মাল। আমৃত্যু স্বামীর পরিচয়েই বাঁচতে চান তিনি।

Related Posts

Leave a Reply