May 16, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

আনারস , শুধু আর্থ্রাইটিস নয় এই মারাত্মক রোগও সারায়

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 
খেতে মন্দ নয়। কিন্তু ফলটি সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে ট্রপিকাল এই ফলটি অন্দরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা… বর্মে ঢাকা এই ফলটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন, মিনারেল, বিশেষত পটাশিয়াম, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, মেঙ্গানিজ, ভিটামিন সি এবং বিটা-ক্যারোটিন। যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে এই সবকটি উপাদানই শরীরের পক্ষে ব্যাপোক উপকারি। তাই প্রশ্ন জাগতে বাধ্য যে আনারাস শরীরে পক্ষে আদৌ ভাল কিনা সে বিষয়ে যারা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তাদের যুক্তি আদৌ কতটা বাস্তবসম্মত!
আনারসের গুণা-গুণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করার পর প্রথমসারির কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তারা খুঁটিনাটি সব বিষয় বিবেচনা করার পর যা জানতে পারেন, তা হল আনারাস বা অ্যানানাস নামে পরিচিত এই ফলটি খেতে যতটা সুস্বাদু, ততটাই পুষ্টিগুণে ভরপুর। শুধু তাই নয়, তাদের মতে সপ্তাহে ২-৩ দিন যদি নিয়ম করে আনারস খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের দারুন উপকার হয়। যেমন…
১. আর্থ্রাইটিস প্রকোপ কমায়: বেশ কিছু গবেষণা করে দেখা গেছে আনারসের শরীরে ব্রমেলিন নামে এমন একটি এনজাইম উপস্থিত রয়েছে, যা শরীরে প্রবেশ করার পর দেহের অন্দরে উপস্থিত কমপ্লেক্স প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। ফলে জয়েন্টের প্রদাহ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়। তাই আপনাদের মধ্যে কেউ যদি এই রোগের শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে কষ্ট কমাতে আনারসের সাহায্য নিতেই পারেন।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: আনারসে একদিকে যেমন রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, তেমনি রয়েছে অ্যাসকর্বিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান, যা ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে একবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে গেলে সংক্রণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তো কমেই, তেমনি সুস্থ জীবনের পথও প্রশস্ত হয়।
৩. তাড়াতাড়ি ক্ষত সারায়: খেলতে গিয়ে হাত পা কেটে গেছে? ফিকার নট! ক্ষত সারাতে আনারস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলাজেন, যা দ্রুত ক্ষত সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, কোলাজেন যে শুধু ক্ষত সারাতেই বিশেষ ভূমিকা নেয় এমন নয়, সেই সঙ্গে ত্বক, হাড় এবং শরীরের একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. ক্যান্সার প্রতিরোধক: গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ যে হারে বেড়েছে, তাতে আনারস খাওয়ার প্রয়োজন বিশেষভাবে বৃদ্ধি পয়েছে। কারণ এই ফলটিতে রয়েছে বিপুল পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ। সেই সঙ্গে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, ব্রোমেলিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েড। এই উপাদানগুলি শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বার করে দেয়। সেই সঙ্গে দেহের অন্দরে যাতে কোনও ভাবেই ক্যান্সার সেল জন্ম নিতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, বিশেষত মুখ গহ্বর, গলা এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারকে দূরে রাখতে আনারসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৫. হজম ক্ষমতার উন্নতিতে কাজে আসে: অল্প খেলেই টক ঢেকুর ওঠে। সেই সঙ্গে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বল যেন রোজের সঙ্গী? তাহলে তো মশাই আনারস খাওয়া ছাড়া আপনার কোনও উপায় নেই। কারণ একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত এই ফলটি খেলে শরীরে ফাইবারের ঘাটতি দূর হয়। ফলে একে একে সমস্যা দূর হয়ই। সেই সঙ্গে ডায়ারিয়া, কনস্টিপেশন এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রমের মতো পেটের রোগও সেরে যায়।
৬. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়: এই ফলটিতে ক্যালসিয়াম নেই ঠিকই। কিন্তু রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, যা ক্যালসিয়ামের মতো হাড়কে শক্তপোক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বুড়ো বয়সে গিয়ে যদি নানাবিধ জটিল হাড়ের রোগে আক্রান্ত হতে না চান, তাহলে এখন থেকেই নিয়মিত আনারস খাওয়া শুরু করুন দেখবেন উপকার পাবেন।
৭. দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়: আনারসে উপস্থিত অ্যাস্ট্রিজেন্ট নামক একটি উপাদান ক্যাভিটির হাত থেকে দাঁতকে রক্ষা করে। সেই সঙ্গে দাঁতের একেবারে বাইরের আবরণকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে দাঁতের ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, অ্যাস্ট্রিজেন্ট ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের যেমন বয়স বাড়তে থাকে, তেমনি দৃষ্টিশক্তির উপরও প্রভাব পরে। কিন্তু আপনি যদি চান তাহলে এমনটা হওয়া আটকাতে পারেন। কিভাবে? এক্ষেত্রে প্রতিদিন আপনাকে আনারস খেতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন চোখের ক্ষমতা কমার নামই নেবে না। কারণ আনারসে রয়েছে বিটা-ক্য়ারোটিন নামক একটি উপাদান, যা রেটিনার ক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে: যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে আনারসে নানাবিধ ভিটামিনের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু খনিজও, যার মধ্যে অন্যতম হল পটাশিয়াম। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রসোর স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তাই যারা রক্তচাপের সমস্যায় দীর্ঘকাল ভুগছেন, তারা ইচ্ছা হলে এই ফলটির সাহায্য নিতেই পারেন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে।

Related Posts

Leave a Reply