November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

গরমকালে নিয়মিত বাঁধাকপি খান , ফল পাবেন হাতেনাতে 

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
ধুনিক চিকিৎসায় এই সবুজ গোলাকাল সবজিটির প্রবেশ ঘটে ইংরেজদের হাত ধরে। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকে ব্রিটিশরাই সারা বিশ্বে বাঁধাকোপির জয়গান গেয়ে বেরিয়েছে। আর আজ তো এর জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁয়েছে। কেন ছোঁবে নাই বা বলুন! পুষ্টিগুণে ঠাসা এই সবজিটি খেলে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। কমে আরও অনেক রোগের প্রকোপ। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন…
১. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়: এই সবজিটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় বিটা-ক্যারোটিন। এই উপাদানটি দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কারণেই তো নিয়মিত বাঁধাকপি খাওয়া শুরু করলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চোখের ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে: বাঁধাকপিতে কী কী রয়েছে সেদিকে একবার নজর ফেরালেই বুঝতে পারবেন কেন এই সবজিটি ওজন কমাতে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ঠিক কী আছে এই সবুজ সবজিটিতে? রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদকে ঝড়িয়ে ফেলে। অন্যদিকে বাঁধাকপিতে রয়েছে একেবারে কম মাত্রায় ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট। ফলে এটি খেলে ওজন বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।
৩. একাধিক মারণ রোগ দূরে থাকে: বাঁধাকপিতে উপস্থিত ফোটোনিউট্রিয়েন্টস, যেমন পলিফেনল এবং গ্লকোসিনোলেট শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা করনারি আর্টি ডিজিজ, অর্থাৎ হার্টের রোগের প্রকোপ কমানোর পাশাপাশি ক্যান্সার, অ্যালঝাইমারস এবং ম্যাকিউলার ডিজেনারেশনের মতো রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে “এশিয়ান পেসিফিক জার্নাল অব ক্যান্সার প্রিভেনশন”এ প্রকাশিত একটি স্টাডিতেও একথা প্রমাণিত হয়েছে। তাই বৈজ্ঞানিক দিক থেকে আর কোনও সন্দেহ নেই যে বাঁধাকোপি বাস্তবিকই এই সব রোগকে আটকে থাকে।
৪. মাথা যন্ত্রণা কমে: বাঁধাকপির পাতাগুলি ছিঁড়ে নিয়ে একটা কাপড়ে রেখে কপালে বেঁধে দিন। কিছু সময় পরেই দেখবেন মাথা যন্ত্রণা একেবারে গায়েব হয়ে গেছে। আর যদি এমনটা করতে না চান, তাহলে আরেকটি ঘরোয়া পদ্ধতি আছে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কী সেই পদ্ধতি? পরিমাণ মতো বাঁধাকোপি নিয়ে ২৫-৫০ এম এল জুস বানিয়ে পান করুন। এই ঘরোয়া ওষধিটি ক্রনিক মাথা যন্ত্রণা কমাতে দারুন কাজে আসে।
৫. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে: ২০০৮ সালে এভিডেন্স বেসড কমপ্লিমেনটারি অ্যান্ড অলটারনেটিভ মেডিসিনে প্রকাশিত এক পিরোর্ট অনুসারে টানা ৬০ দিন বাঁধাকপি খেয়ে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক লেভেলে চলে আসে। সেই সঙ্গে রেনাল ফাংশনের উন্নতি ঘটে এবং ওজন কমতে শুরু করে। আসেল এই সবজিটিতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং হাইপার-গ্লাইসেমিক প্রপাটিজ রয়েছে, যা ডায়াবেটিসের মতো রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, আরও বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বাঁধাকপির এইসব পুষ্টকর উপাদানের পাশাপাশি ফাইবারও রয়েছে অনেক পরিমাণে। এই উপাদানটি একদিকে যেমন ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে সাহায্য করে, তেমনি নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৬. হাড় শক্তপোক্ত হয়: ক্রসিফেরাস পরিবারের অন্তর্গত এই সবজিটির অন্দরে মজুত রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম। এই সবকটি উপাদানই বোন ডেনসিটি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার বোন ডেনসিটি বাড়লে হাড় শক্তপোক্ত হয়ে উটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে অস্টিওপোরোসিস মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৭. ভিটামিনের ঘাটতি দূর হয়: হাফ কাপ সেদ্ধ বাঁধাকপিতে যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে, তা সারা দিনের চাহিদার প্রায় ৪৭ শতাংশ পূরণ করে দেয়। আর ভিটামিন কে-এর চাহিদা পূরণ করে প্রায় ১০০ শতাংশ। তাহলে বুঝতে পারছেন তো এইটুকু বাঁধাকোপি যদি এত কাজে আসতে পারে, তাহলে এক বাটি খেলে কত উপকারই না হবে! প্রসঙ্গত, শরীরকে সচল রাখতে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে সংক্রমণকে আটকাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। অন্যদিকে, ভিটামিন কে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি শরীরের প্রতিটি অংশে রক্ত প্রবাহ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে।
৮. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকায় এই সবজিটি নিয়মিত খেলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে নার্ভের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। ফলে বুড়ো বয়সে গিয়ে অ্যালঝাইমাস সহ একাধিক ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
৯. সালফারের ঘাটতি দূর হয়: সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে দেহের অন্দরে পর্যাপ্ত পরিমাণে সালফারের মজুত থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। আর সেই কারণেই তো গরমের সময় বেশি করে বাঁধারপি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া উচিত। কারণ এই সবজির অন্দরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় সাফলার, যা সংক্রণের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, বছরের এই সময় ঘামের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে নানাবিধ ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপও বৃদ্ধি পায়। আর এমনটা হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। এবার বুঝেছেন তো গরমের সময় রোজের ডায়েটে বাঁধাকপিকে জায়গা করে দেওয়ার পরামর্শ কেন দেওয়া হয়।

Related Posts

Leave a Reply