দুধের সঙ্গে কলা ! কী বিপদ ডেকে আনছেন, জানাচ্ছে আয়ুর্বেদ
‘‘আমসত্ত্ব দুধে ফেলি, তাহাতে কদলী দলি,
সন্দেশ মাখিয়া দিয়া তাতে—
হাপুস হুপুস শব্দ চারিদিক নিস্তব্ধ,
পিঁপিড়া কাঁদিয়া যায় পাতে।’’
বাল্যকালে এই কবিতা লিখে রবীন্দ্রনাথ কানিক বাহবা কুড়িয়েছিলেন বলে আমরা জানি। বাঙালির দুধে-ভাতে অনিবার্য ভাবে এসে পড়ে কলা। তাছাড়া সাহেবরাই বা কম যায় কীসে! বেনানা-মিল্কশেকের স্বাদ তো তারাই দুনিয়াকে শিখিয়েছে। দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষার প্রবাদটির মধ্যেও একটা আতুপুতু ভাব রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে দুধ আর কলার কম্বিনেশনকে নিয়ে অতি ভয়ের কথা শোনাচ্ছেন পুষ্টিশাস্ত্রবিদরা।
সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খ্যাতনামা ডায়েটিশিয়ান হরিশ কুমার জানিয়েছেন, দুধ ও কলা একত্রসেবন মারাত্মক বিপজ্জনক হতে পারে। দুধ খাওয়ার অন্নত মিনিট ২০ পরে কলা খাওয়া উচিত। সেই সঙ্গে তিনি সাবধান করেছেন বেনানা-মিল্কশেক সম্পর্কেও। তাঁর মতে, এই বিশেষ পানীয়টি অতি দুষ্পাচ্য। সহজে হজম না হয়ে এই কম্বিনেশন পাচনযন্ত্রকে রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলতে পারে।
হরিশ কুমারের এই বক্তব্যের পিছনে রয়েছে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের সহস্রাব্দ-প্রাচীন পরামর্শ। আয়ুর্বেদ মতে, প্রতিটি খাদ্যের আলাদা আলাদা ‘রস’ (স্বাদ) রয়েছে। এবং সেই অনুযায়ী তাদের ‘বিপাক’ (পাচনক্রিয়া) ও ‘বীর্য’ (শীতল অথবা উষ্ণতার প্রতিক্রিয়া) ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এই কারণে যে কোনও কম্বিশনের খাবার খাওয়া বিপদ ডেকে আনতে পারে। সেই হিসেবে দুধ ও কলা একত্রে সেবন করতে কঠোর ভাবে নিষেধ করে আয়ুর্বেদ। শুধু কলা নয়, দুধের সঙ্গে যে কোনও ফল খাওয়ার বিরুদ্ধেও রায় দেয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্র।