শুধু বীর্য বৃদ্ধিতে উপকারি নয় মহুয়ার গুণ অপরিসীম
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
ভারতবর্ষের অন্যান্য গাছের মতো মহুয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ গাছ। গাছের পাতা থেকে শুরু করে ফল ও ফুল, সবেরই গুনাগুণ অপরিসীম। এই গাছের ফল খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি বেশ সুগন্ধযুক্ত। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে এই গাছটির গুরুত্ব অনেক বেশি, যেমন – এর কাঠ থেকে ঘর তৈরি হয়, মহুয়ার রস থেকে মদ, এই গাছের ছাল, ফুল, ফল ও বীজ থেকে বিভিন্ন ঔষধ তৈরি হয়, ইত্যাদি। মহুয়ার সমস্ত অংশেই রয়েছে হাজারো ঔষধি গুনাগুণ। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম হলো ” Madhuca Longifolia”। শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট এটি একটি পত্রঝরা গাছ। শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তকালে পুনরায় গাছে প্রাণ ফিরে আসে। এই গাছের রস এবং ফলের মিষ্টি গন্ধের জন্য কুকুর ও শিয়ালের কাছে খুব প্রিয় একটি গাছ। এর আবাসভূমি ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত গাছটি। তবে চলুন এই আর্টিকেল থেকে জেনে নেওয়া যাক মহুয়ার স্বাস্থ্য ও ঔষধি গুনাগুণ সম্পর্কে। নিউট্রিশন ভ্যালু বা পুষ্টির মান হায়দ্রাবাদের ‘ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন ‘ এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম মহুয়া ফুলে পুষ্টির মান হল – ১.৪ গ্রাম প্রোটিন। ১.৬ গ্রাম ফ্যাট। ০.৭ গ্রাম মিনারেলস (খনিজ)। ২২.৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। ৪৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। ২২ মিলিগ্রাম ফসফরাস। ০.২৩ মিলিগ্রাম আয়রন। ৩০৭ ইউজি(ug) ভিটামিন-এ। ৪০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি।
উপকারিতা
১) জয়েন্টের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে জয়েন্টের ব্যথা বা গেঁটে বাতের যন্ত্রণা থেকে উপশম পেতে মহুয়া ফুল বেটে গরম করে ব্যথার জায়গায় লাগান। আবার মহুয়া বীজের তেল অল্প গরম করে মালিশ করলে ফোলা এবং যন্ত্রণা দুটো থেকেই মুক্তি পাওয়া যায়।
২) ত্বকের দাগ মুছে ফেলতে যদি আপনার গালে, মুখে কিংবা যেকোনও স্থানে ব্রণ কিংবা অন্যান্য দাগের হয় তবে মহুয়ার ছাল বেটে দাগের উপরে লাগান। দূর হয়ে যাবে আপনার অবাঞ্ছিত দাগগুলি। পাশাপাশি এটি চর্মরোগ সারাতেও সাহায্য করে।
৩) মাথাব্যথা থেকে মুক্তি মাথাব্যথাতে কাতর হয়ে পড়েছেন? পাগল পাগল অবস্থা? তবে মুক্তি পেতে কপালে লাগান মহুয়ার তেল। শীঘ্রই মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হবেন।
৪) বীর্য বৃদ্ধিতে মহুয়া পুরুষদের জন্য খুবই উপকারি। যে সকল পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ কম, তারা মহুয়ার ফুল খেতে পারেন। গরম দুধের সঙ্গে শুকনো ফুলের চূর্ণ মিশ্রিত করে পান করুন। এতে বীর্য বৃদ্ধি পায়।
৫) জ্বর ও কাশি দূর করতে আপনি যদি ঠান্ডা লাগা থেকে দীর্ঘদিন কাশির সমস্যায় ভোগেন, তবে এর থেকে মুক্তি পেতে খান মহুয়া ফুল। মহুয়া ফুল বেটে তার সঙ্গে জল মিশিয়ে সারাদিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। এক সপ্তাহের মধ্যেই উপকার পাবেন।
৬) কৃমি দূর করতে বিশেষ করে বাচ্চারা কৃমির সমস্যায় ভুগে থাকে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বয়স্কদের মধ্যেও এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই কৃমি থেকে মুক্তি পেতে রোজ কয়েক ফোটা করে মহুয়ার তেল খান, এতে কৃমি মরে যাবে।
৭) চামড়ার ক্ষত বা ঘা সারাতে দীর্ঘদিন ধরে যদি কোনও ক্ষত বা ঘা না সারে, তবে সেই স্থানে মহুয়া বীজের তেল লাগান অথবা কোনও পরিষ্কার কাপড়ে তেল নিয়ে সেই জায়গায় বেঁধে রাখুন। কয়েকদিনের মধ্যেই মুক্তি পেতে পারেন ঘা থেকে।
৮) অর্শ উপশম করতে আপনি যদি অর্শ রোগে ভোগেন, তবে সাময়িকভাবে আরাম পেতে মহুয়া ফুল সামান্য ঘি দিয়ে ভেজে দিনে এক থেকে দুই বার অর্শের বলিতে এবং মলদ্বারে ব্যবহার করুন। তবে মনে রাখবেন এই রোগ থেকে স্থায়ীভাবে এর মাধ্যমে মুক্তি ঘটে না।
৯) হিমোগ্লোবিন বাড়াতে এতে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলি শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে শক্তি সরবরাহ করতে খুবই সহায়ক।
১০) দাঁতের সমস্যা দূর করে আপনার যদি দাঁত নড়ার সমস্যা থেকে থাকে বা মুখ থেকে গন্ধ বের হয়, তবে মহুয়া গাছের কাঠ দিয়ে ব্রাশ করুন। এটি দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে এবং দাঁত নড়া বন্ধ করে, পাশাপাশি মুখের গন্ধ দূর করে।