November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

জানেন সকালে দুধ পানে কি হতে পারে?  আয়ুর্বেদ কী বলে

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 
দুধ না খেলে, হবে না ভালো ছেলে…’ দুধ খেলে ছেলে কতটা ভালো হবে, তা জানা নেই। কিন্তু স্বাস্থ্যের যে অনেক উপকার হবে, তা আমাদের সকলের জানা। তাই চিকিৎসকেরা রোজকার ডায়েটে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। দুধে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি১২, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস হাড়-দাঁত, পেশিকে মজবুত ও শক্ত করে এবং শরীরে পুষ্টি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই বাচ্চা থেকে বয়স্ক, শরীরে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে রোজ দুধ পান করা প্রয়োজন। তবে দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা সকলে অবগত হলেও, কোন সময়ে দুধ পান করা উচিত, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে জেনে নেওয়া যাক আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী কখন দুধ পান করা উচিত।
দুধ পানের সঠিক সময় 
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে প্রতিদিনই দুধ পান করা উচিত। তবে ঠিক কোন সময়ে দুধ পান করা ভালো, তা নিয়ে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলছেন প্রয়োজন অনুসারে যেকোনও সময় দুধ পান করা যায়, আবার কেউ বা বলছেন দুপুরে বা রাতে। তাই এই বিভ্রান্তি মেটাতে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্র উল্লেখ করছে যে, রাতই হলো দুধ পান করার সঠিক সময়।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে সকালে দুধ পান না করাই ভালো। বিশেষ করে পাঁচ বছরের বেশি বয়সীদের সকালে দুধ খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, সকালে দুধ পান করলে হজমের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু রাতে হজমের সমস্যা কম হয় এবং দুধে থাকা Tryptophan নামক উপাদান রাতের ঘুম ভালো করতে ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা এও জানাচ্ছেন যে, যদি আপনি নিজের দেহ ও পেশীগুলি সুগঠিত করতে চান, তবে সকালে বা বিকেলে এক্সারসাইজ করার পর গরম দুধ পান করতে পারেন। আয়ুর্বেদ মতে কীভাবে দুধ পান করবেন? রাতে খাবার খাওয়ার আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর দুধ খেয়ে ঘুমাবেন। এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে এক টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে বা এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। আবার দুধ ফোটানোর সময় এক টুকরো আদা বা গোটা পাঁচেক এলাচ ফেলে ফুটিয়ে সেই দুধও পান করতে পারেন। এই সকল মিশ্রণগুলি শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বুস্ট করতে, ত্বককে ভালো রাখতে, হজম ক্ষমতা উন্নত করতে ও শরীরকে সুস্থ রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
দুধ পানের ক্ষেত্রে কী কী নিয়ম মেনে চলবেন?
১) খালি পেটে দুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন। আপনি যদি বদহজম বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তবে অবশ্যই এটি মানুন।
২) নোনতা খাবার খাওয়ার পর কখনোই দুধ খাবেন না।
৩) ফল ও দুধের মিশ্রণ অর্থাৎ মিল্কশেক বানিয়ে খাওয়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এই মিশ্রণ হজমের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে।
৪) অনেকেরই অভ্যাস রয়েছে চা কিংবা দুধ দিয়ে ওষুধ খাওয়ার। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধ দিয়ে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে আয়ুর্বেদিক ঔষধ দুধ দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
৫) বাসি দুধ খাওয়ায় এড়িয়ে চলুন। কারণ, বাসি দুধের থেকে টাটকা দুধের গুণগতমান অনেক বেশি। এছাড়া বাসি দুধ আমাদের শরীরে নানাবিধ সমস্যা তৈরি করে। তাই সর্বদা টাটকা এবং ভালো করে ফুটিয়ে দুধ খাবেন। আয়ুর্বেদ মতে কাদের দুধ খাওয়া উচিত নয়? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যাদের দুধে এলার্জি রয়েছে, তাদের দুধ খাওয়া সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে দুগ্ধজাত খাদ্য খেতে পারেন। কাশি, হাঁপানি, ডায়রিয়া, কোলাইটিস, পেটের ব্যথা বা বদহজমের সমস্যা থেকে থাকলে দুধ এড়ানো উচিত। রাতে দুধ খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা 
১) ঘুম ভালো হয় যারা অনিদ্রা রোগে ভুগতে থাকেন তাদের রোজ রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ খাওয়া উচিত। কারণ দুধে থাকা বায়োঅ্যাক্টিভ প্রপার্টিজ শরীরের স্ট্রেস কমিয়ে ঘুম হতে সাহায্য করে।
২) হার্ট ভাল রাখে রাতে শুতে যাওয়ার আগে লো ফ্যাট যুক্ত দুধ প্রতিদিন পান করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। দুধে থাকা প্রোটিন উপাদান খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলে হার্ট সুস্থ থাকে।
৩) হাড় মজবুত করে দুধে থাকা ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে মহিলারা অস্টিওআর্থ্রাইটিসের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস গরম দুধ খেতে পারেন। ৪) ত্বক ভালো রাখে অল্প বয়সেই অনেকের ত্বকে বয়সের ছাপ দেখা দেয় এবং ত্বক ঝুলে যায়, খসখসে হয়ে যায়। কিন্তু দুধে থাকা ভিটামিন বি১২ ও অন্যান্য উপাদান ত্বককে স্বাস্থ্যকর, নরম ও তরতাজা রাখতে সহায়তা করে। তাই রোজ রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস করে দুধ পান করা ভালো।

Related Posts

Leave a Reply