রসুনের জাত জানতে সোজা আদালতে মামলা !
কলকাতা টাইমস :
কত কিছু নিয়েই না কোর্টে যায় মানুষ! কিন্তু তাই বলে সামান্য রসুন নিয়ে মামলা । না, আপনার পড়তে ভুল হয় নি – মামলাটা রসুন নিয়েই। রাজস্থান হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয় এটা নির্ধারণ করতে যে রসুন আসলে কোনও সবজি না মশলা?
সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে আদালত। অথচ রাজস্থান সরকারেরই এক নির্দেশের ফলে রসুন নিয়ে এই বিভ্রান্তি। ২০১৬ সালে জারি করা এক নির্দেশে সে রাজ্যের সবজির পাইকারি বাজারগুলিতে রসুন বিক্রি করা যায় না। পরিবর্তে দানাশস্যের বাজারে বিক্রি করতে হবে বলে জানিয়েছিল সরকার।
ওই নির্দেশেই সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। দানাশস্যের বাজারে রসুন বিক্রি করলে দুই শতাংশ কমিশন পাওয়া যায়, অথচ সবজি বাজারে যখন রসুন বিক্রি হত, তখন ছয় শতাংশ কমিশন পাওয়া যেত। আয় কমে যাওয়ার ফলে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে যোধপুর আলু-পেঁয়াজ ও রসুন বিক্রেতা সংগঠন।
তাদের প্রশ্ন কেন দানাশস্যের বাজারে রসুন বিক্রি করা হবে?
রাজ্য সরকার গতবছর থেকেই এই নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে সবজি বাজারের স্থানাভাবের কারণ দেখিয়েই। মামলা হওয়ার পরে অবশ্য বার বার চেষ্টা করেও রাজস্থান সরকারের কোনও বক্তব্য জানা যায় নি এই বিষয়ে। তবে রসুন সবজি না আনাজ – সেই বিতর্কের কী হবে!
ভারতীয় কৃষি গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানী ড. প্রীতম কালিয়ার কথায়, “রসুন মূলত সবজিই, কিন্তু এর ব্যবহার হয় মশলা হিসাবে। রসুনের চাষও হয় সবজি হিসাবেই। আনাজ বাজারে রসুন বিক্রি করার কথা কেন বলা হচ্ছে জানি না, কারণ রসুন কোনোভাবেই আনাজ বা দানাশস্যের মধ্যে পড়ে না।”
পেঁয়াজ যেরকম মাটির নীচে হয়, সেই একই প্রজাতির সবজি রসুন আর টিউলিপ।
পেঁয়াজ আর রসুনকে ভাই-বোনও বলা চলে – দুটো নাম অনেক ক্ষেত্রেই এক সঙ্গেই উচ্চারিত হয় রান্নাঘরে।
অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি ভাইরাল আর অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণাগুণ সমৃদ্ধ রসুনের উপকারিতা প্রাচীনকাল থেকেই স্বীকৃত।
শুধু যে জ্বর-কাশি এসব থেকে রক্ষা করে রসুন, তা নয়। রসুনের মধ্যে যেসব রাসায়নিক আছে, সেগুলো প্রাকৃতিক ব্লাড-থীনার বা রক্ত পাতলা করার কাজ করে। যার ফলে ধমনীতে কোলেস্টেরল জমে গিয়ে ব্লকেজ হয়ে হৃদযন্ত্র অচল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায় বলে চিকিৎসকরা মনে করেন।