চোখ কচলানোর অভ্যাস কি মারাত্মক জানেন ?
কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকার কারণে বা চোখে কিছু পড়লে চোখ আমরা ইচ্ছা মতো ডলতে থাকি। কারণ যাই হোক না কেন অযথা অনেকেই চোখ ডলি বা কচলাই। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এটি মোটেও ভালো অভ্যাস নয়। কারণ না জেনে হয়ত চোখের ক্ষতি করে ফেলছেন।
তারা জানিয়েছেন, আপনার চোখের নিচের ত্বক আপনার শরীরের মধ্যে সবচেয়ে পাতলা। পোলাপের পাঁপড়ি ঘষলে যেমন নষ্ট হয়ে যায় চোখের নিচের ত্বকও তেমন।
চোখ কচলানো বা ডলা আপনার ত্বকে কি করতে পারে
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা চোখ থেকে হাত দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। কারণ চোখ ঘষার অভ্যাস আপনার চেহারা এবং আপনার স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
অভ্যাসের পরিণতি হতে পারে যেমন:
লাল চোখ
মার্কিন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার স্নেহাল আমিন বলেন, চোখ কচলানোর কারণে আপনার চোখ ক্লান্ত দেখাতে পারে। অতিরিক্ত চোখ কচলানোর কারণে চোখের সূক্ষ নালীগুলো ছিড়ে গিয়ে চোখ রক্ত বর্ন হয়ে যেতে পারে। এক বলে ব্লাডশট আই বা রেড আই। এরপর রক্ত পার্শ্বস্থ টিস্যুতে প্রবাহিত হবে, যার ফলে আপনার চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল বিকশিত হতে পারে।
ডার্ক সার্কেল
দীর্ঘস্থায়ী কচলানোর ফলে চোখের নিচে কালো দাগও হতে পারে। যা পোস্ট-ইনফ্লেমেটরি হাইপারপিগমেন্টেশন নামে পরিচিত। আপনার ত্বকের টোন যত গাঢ় হবে এটি তত বেশি হবে। যুক্তরাষ্ট্রের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অ্যাঞ্জেলো থ্রোয়ার বলেছেন, বিশেষ করে যাদের গাঢ় ত্বক তাদের ক্ষেত্রে চোখ কচলালে ত্বকের রঞ্জক উৎপাদন বেড়ে যায়।
বলিরেখা
যুক্তরাষ্ট্রের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ব্রেন্ডন ক্যাম্প বলেছেন, যখন বারবার চোখ কচলান বা ডলেন, তখন ত্বকে বলিরেখা ফেলে দেওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কর্নিয়ার ক্ষতি
দীর্ঘস্থায়ী চোখ ডলা শুধুমাত্র চোখের পাতার ত্বকের ক্ষতি করে না বরং কর্নিয়াতে মাইক্রো স্ক্র্যাচও ঘটাতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার স্নেহাল আমিন বলেন, এর ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কর্নিয়ার আকৃতি পাতলা হয়ে যেতে পারে। যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে যেটি কেরাটোকোনাস নামে পরিচিত। চোখ কচলানো বিশেষ করে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক।
সংক্রমণের ঝুঁকি
ডাক্তার আমিন আরো বলেন, চোখ সংক্রমণের একটি মারাত্নক জায়গা। হাত বা বাতাস থেকে জীবাণু চোখের মিউকোসার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। মহামারীর সময় আমরা এটা দেখেছি। হাত দিয়ে চোখ স্পর্শ করলে হাতের ব্যাকটেরিয়া চোখে চলে যেতে পারে এবং কনজাঙ্কটিভাইটিস বা পিংক আই সৃষ্টি করতে পারে।