November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ভুলেও সকাল ৭টার পর মনিং ওয়ার্কে বেরবেন না যেন!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস:

ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত এখটি গবেষণা পত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে, যে সময় রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যায়, সে সময় মনিং ওয়াক করলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। আসলে গাড়ির ধোঁয়ার সঙ্গে বেরিয়ে আসা নানা ক্ষতিকর উপাদান আমাদের লাং-এর মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে ফুসফুস এবং দেহের বাকি অঙ্গকে এত মাত্রায় ক্ষতি করে যে হাঁটার সুফল কিছুই পাওয়া যায়। উল্টে ধোঁয়ার মধ্যে হাঁটার কারণে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। আর কলকাতা মতো মেট্রপলিটন শহরে সকাল সাতটার পর প্রায় প্রতিটি রাস্তাই গাড়িতে ভরে যায়। সেই কারণেই তো এই সময়ের পর মনিং ওয়াক করতে মানা করছেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, গবেষণাটির সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের মতে যেসব রাস্তা দিয়ে বেশি মাত্রায় গাড়ি যাতায়াত করে, যেমন ধরুন কলকাতার রাসবিহারি, ধর্মতলা বা শ্যামবাজার এলকায় মনিং ওয়াক করলে স্বাভাবিকভাবেই গ্রিন হাইজ গ্যাসের কারণে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ফলে হাঁটার যে উপকারিতা, তা তো পাওয়া যায়ই না, উল্টে শরীর ভাঙতে শুরু করে।

এখন প্রশ্ন হল, যারা যানজট এলাকায় থাকেন, তারা কী করবেন? তাদের শরীরকে বাঁচাতে এই প্রবন্ধটি পড়তেই হবে। কারণ এই লেখায় বায়ু দূষণের হাত থেকে বাঁচার এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা বাস্তবিকই বেশ কার্যকরি। এক্ষেত্রে যে যে প্রকৃতিক উপাদানগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল…

১. ডালিমের রস: প্রতিদন সকালে, না হয় বিকালে ১ গ্লাস করে ডালিমের রস খাওয়া শুরু করুন। এই প্রকৃতিক উপাদানটি রক্তকে পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি হার্ট এবং ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। 

২. ঘি: রাতে শুতে যাওয়ার আগে এবং প্রতিদিন সকালে নাসারন্ধ্র দু ফোটা করে ঘি ফেলবেন। সেই সঙ্গে প্রতিদিন ২-৩ চামচ ঘি খেলে বায়ু দূষণের কারণে শরীরের ক্ষতি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকবে না। আসলে ঘিতে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান বায়ু দূষণের খারাপ প্রভাবকে কমিয়ে দেয়। ফলে শরীরের ক্ষয় হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকাংসেই হ্রাস পায়। 

৩. বাড়িতে তৈরি গরম খাবার: নিশ্চয় ভাবছেন পরিবেশ দূষণের সঙ্গে বাড়িতে তৈরি গরম খাবারের কী সম্পর্ক, তাই তো? আসলে যে কোনও বাঙালি পদে আমরা, হলুদ, লঙ্কা, গোল মরিচ সহ নানাবিধ মশলা দিয়ে থাকি। এই সব মশলাগুলি নানাভাবে আমাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আমাদের শরীরের উপর পরিবেশ দূষণের প্রভাব যাতে কম পরে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। তাই তো জাঙ্ক ফুড নয়, বেশ করে খাওয়া শুরু করুন বাড়িতে বানানো খাবার। 

৪. তুলসি পাতা: বাড়ির বাইরে তুলসি গাছ লাগানো আছে তো? না থাকলে আজই লাগান। কারণ একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে বায়ু দূষণের প্রভাব কমাতে তুলসি গাছ দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে। আসলে তুলসি পাতা, বাতাসে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানদের শোষণ করে নেয়। ফলে বাতাসে বিষের পরিমাণ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে প্রতিদিন যদি ১০-১৫ মিলি লিটার করে তুলসির রস খাওয়া যায়, তাহলে আমাদের শরীরের উপর বায়ু দূষণের যে কুপ্রভাব পরে, তা কমতে শুরু করে। 

৫. নিম: পরিমাণ মতো জলে নিম পাতা ফুটিয়ে সেই জল দিয়ে সপ্তাহে কয়েকবার ঘা এবং মাথা পরিষ্কার করতে হবে। এমনটা করলেই শরীরের বহিরাংশে পরিবেশ দূষণের খারাপ প্রভাব কমতে শুরু করবে। প্রসঙ্গত, পরিবেশ উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর উপাদান আমাদের ত্বকের উপর স্থায়ী ঘর বানিয়ে শরীরের নানাবিধ ক্ষতি সাধন করে থাকে। এদের মেরে ফলতেও নিম পাতা দারুন উপকারে লাগে। এক্ষেত্রে একটা বিষয জেনে রাখা জরুরি যে, নিয়মিত যদি নিম জল দিয়ে স্নান করে ওঠা সম্ভব না হয়, তাহলে প্রতিদিন ৩-৪ টে নিম পাতা খেতেই হবে। এমনটা করলেও সমান উপকার পাবেন। 

৬. হলুদ: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চামচ হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে ১ চামচ ঘি বা মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন বায়ু দূষণ আপনার টিকিও ছুঁতে পারবে না। 

৭. ত্রিফলা: বায়ু দূষণের মধ্যে দীর্ঘ সময় থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে শুরু করে। ফলে একে একে ভয়ঙ্কর সব সংক্রমণ শরীরের এসে বাসা বাঁধে। এক্ষেত্রে ত্রিফলা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে? প্রতিদিন রাতে ১ চামচ পরিমাণ ত্রিফলার সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই আর কোনও চিন্তা থাকবে না। কারণ ত্রিফলা এবং মধু, উভয়ই পরিবেশ দূষণের কুপ্রভাব থেকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

৮. বডি মাসাজ: প্রতিদিন গরম সরষের তেল দিয়ে সারা গায়ে মাসাজ করলে স্ট্রেস কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীর একেবারে ভেতর থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এক কথায় বলা যেতে পারে, শরীরকে পুনরায় চার্জড আপ করে তুলতে বডি মাসাজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। 

৯. গরম ভাপ নেওয়া: এক বাটি গরম জলে কয়েক ফোটা পিপারমেন্ট তেল ফেলে সেই জলের গরম ভাপ নিলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। তবে এমনটা দিনে কম করে ২ বার করতেই হবে। তবেই পরিবেশ দূষণের খারাপ প্রভাব থেকে দূরে থাকতে পারবেন, না হলে কিন্তু সেভাবে উপকার নাও পেতে পারেন। 

১০. প্রতিদিন যোগ ব্যায়াম জরুরি: নিয়মিত প্রাণায়াম এবং কপালভাতি করলে পরিবেশ দূষণের কোনও প্রভাবই শরীরের উপর পরে না। এক্ষেত্রে আসন দুটি ৫-১০ বার করতেই হবে। তবেই সুফল মিলবে একেবারে হাতে-নাতে।

Related Posts

Leave a Reply