এই গরমেও হালকা গরম জল খান, চমকে দেবে লাভ
কলকাতা টাইমস :
গরমে গলা ভেজানোর জন্য ঠান্ডা জলের খোঁজ করাই স্বাভাবিক, অথচ আপনাকে বলা হচ্ছে হালকা গরম জল পান করতে! এটি ভাবতে যেমনই লাগুক, সত্যিটা হলো এই হালকা গরম জল আপনার শরীরের পক্ষে ভীষণ উপকারী। সারা বছর ধরে গরম জল পান করলে তা আপনার শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। নিজেকে ফিট রাখার জন্য হালকা গরম জল আপনার স্বাস্থ্যের সেরা ডোজ হতে পারে।
আমাদের দেহের ৭৫ শতাংশ তরল দিয়ে গঠিত এবং আরও ভালো কার্যকারিতার জন্য শরীরের প্রয়োজন ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। সুতরাং, জেনে নিন কেন নিয়মিত গরম জল পান করবেন, এটি শরীরে কীভাবে কাজ করে এবং জল আরও পুষ্টিকর কর তুলতে করণীয়-
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস মহামারীজনিত ভীতি। এটি দিনদিন বেড়েই চলেছে এবং এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি কোনো প্রতিষেধক। তবে দীর্ঘ লকডাউনের পরে পুরো বিশ্ব যখন পদক্ষেপ নিচ্ছে পূর্বের কর্মব্যস্ততায় ফিরে যাওয়ার তখন শক্তিশালী বিপাক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা জরুরি।
খুব সকালে গরম জল পান করলে তা শরীরের সঠিক ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং দেহে উপস্থিত টক্সিনকে ডিটক্সাইফাই করতে সহায়তা করে। এছাড়াও যদি আপনি মৌসুমী ফ্লু, সর্দি এবং কাশির ঝুঁকিতে থাকেন তবে সারাদিন অল্প অল্প করে গরম জল পান করুন। এতে কফ-সর্দি জমে থাকলে তা দূর হবে।
বুকে দীর্ঘ সময় কফ জমে থাকলে তা শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে। শ্লেষ্মা জমার কারণে তা ফুসফুসের বায়ু উত্তরণকে প্রদাহ দেয়। তাই প্রাকৃতিকভাবে শ্লেষ্মা গলিয়ে শরীর থেকে বের করে দেয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সারাদিন হালকা গরম জল পান করা। তা ছাড়া হালকা গরম জল গলা ও সাইনাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেও সহায়তা করে। বুকে কফ জমাট বাঁধলে হালকা গরম জল এভাবে খেতে পারেন-
১ লিটার হালকা গরম জল নিন। তার সঙ্গে একটি লেবু যোগ করুন। এবার ২ চা চামচ মধু নিন। সবকিছু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর সারাদিন ধরে অল্প অল্প পান করুন।
মধু এবং লেবু উভয়ই ভিটামিন সি, ডি, ই, কে এবং বি কমপ্লেক্স এবং বিটা ক্যারোটিন জাতীয় পুষ্টিতে ভরপুর, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ঠান্ডা, কাশি এবং ফ্লুতে চিকিৎসা করতে সহায়তা করে।
পানীয়কে আরও শক্তিশালী করুন:
প্রতিদিন সকালে গরম পানি পান করলে তা হজম ব্যবস্থা থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করে দিতে সাহায্য করে। হালকা গরম জল এন্ডোক্রাইন সিস্টেমের সঠিক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। এর কারণ হলো হালকা গরম জল শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়। ফলস্বরূপ বিপাকের হার বাড়ে, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে।
এই মিশ্রণটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করে আনে এবং হজমশক্তি উন্নত করে। পাশাপাশি বিপাকের হার উন্নত করতেও সহায়তা করবে। তবে আদা খুব বেশি খাবেন না। জলের সঙ্গে সামান্যই যুক্ত করুন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে:
আপনি যদি ফিটনেসের ক্ষেত্রে সচেতন থাকেন তবে জলই হতে পারে আপনার সেরা সঙ্গী। সকালে হালকা গরম জল পান করলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের হয়ে যায়। এটি শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় যা বিপাকের হারকে উন্নত করে। হালকা গরম জল অন্ত্রের খাদ্য অণুগুলো ভাঙতে সাহায্য করে। খাবার থেকে ভালোভাবে পুষ্টির শোষণের পাশাপাশি হজমে উন্নতি করতে সহায়তা করে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও কার্যকরী। হালকা গরম জলের সঙ্গে এই ভেষজ মিশ্রণটি আপনার বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করবে-
১ লিটার হালকা জল নিন। এবার তার সঙ্গে ১ চা চামচ জিরা, ১ চা চামচ ধনিয়া ও ১ চা চামচ মেথি মেশান।
এই মিশ্রণটি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। পানীয়টি সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে খান। এই পানীয়টি কেবল ওজনই কমায় না, সেইসাথে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলোও বের করে দেয়।