November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

নামি দামি নয় সুস্থ থাকতে রোজ ডাল আর ভাত খেতেই হবে!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

চ্ছা কখনও প্রশ্ন জাগে মনে যে কেন আজকের জেনারেশন এত ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরের মতো রোগ ভুগছে। আগে তো এই সব রোগ ৬০-৭০ বছরের আগে হতই না। আর হলেও আক্রান্তের সংখ্যাটি ছিল খুব কম। কিন্তু গত কয়েক দশকে আমাদের দেশের পাশাপাশি প্রতিবেশি দেশগুলির কী অবস্থা হয়েছে দেখুন। একাধিক মারণ রোগ যেন ক্ষমতা বাড়িয়েই চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ, সারা বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থান নিয়েছে ডায়াটেবিটস রোগে আক্রান্তের হিসেবে। এমনটা কেন হয়েছে জানেন? কারণ ১৮-৩৫ বছর বয়সিদের মধ্যে খাদ্যাভ্যাসের একটা আমুল পরিবর্তন এসেছে।

এখন আর কেউ তথাকথিত বাঙালি ডায়েট মেনে খাবার খায় না। মানে তাদের পাতে আর ভাত, ডাল, সবজি এবং মাছকে দেখা যায় না। পরিবর্তে ফাস্ট ফুড অথবা সহজে রান্না হয়ে যায় এমন খাবার খেয়ে পেট ভরাচ্ছেন জেন ওয়াইরা। ফলে এতদিকে যেমন পুষ্টির অভাব দেখা দিচ্ছে, তেমনি শরীরে ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা বেড়ে গিয়ে একাধিক মারণ রোগের পথ প্রশস্ত হচ্ছে। তাই তো চিকিৎসকেরা আবার পুরনো দিনের খাবারে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কেন? নিশ্চয় এই প্রশ্নটা আপনাদের মনে জাগছে, তাই তো? সব উত্তর পেয়ে যাবেন যদি বাকি প্রবন্ধ চোখ রাখেন।

তথ্য ১: আমাদের পূর্বপুরুষেরা ভাত-ডাল-সবজি খেতে এত ভালবাসতেন কেন জানেন? কারণ ডালে উপস্থিত প্রচুর ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। সেই সঙ্গে কোলেস্টেরলের মতো রোগের প্রকোপও কমায়।  অন্যদিকে, ভাত অথবা রুটি খেলে শরীরে কার্বোহাইড্রেট এবং অন্য আরও সব পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

তথ্য ২: মুসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, মিনারেলস, ভিটামিন বি১ এবং ফলেট। সেই সঙ্গে রয়েছে বিপুল পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড। এই সবকটি উপাদানই শরীর এবং মস্তিষ্কের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এবার বুঝতে পারছেন তো পিৎজা-বার্গার ছেড়ে কেন চিকিৎসকেরা ডাল-ভাত খেতে বলছেন।

তথ্য ৩: শরীর সুস্থ রাখতে যে তিনটি উপাদানের কোনো বিকল্প হয় না, সেগুলি হল- পটাশিয়াম, আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। আর এই তিনটি উপাদানই প্রচুর মাত্রায় রয়েছে ডালে। তাই তো প্রতিদিনের ডায়েট থেকে ডালকে বাদ দিতে মানা করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, ডালে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

তথ্য ৪: ভাত এবং ডালের মধ্যে এত বন্ধু কেন জানেন, কারণ ভাতে উপস্থিত বেশ কিছু অ্যামাইনো অ্যাসিড ডালে নেই, আবার ডালে যে যে উপাদানগুলি রয়েছে সেগুলি আবার ভাতে নেই। তাই তো এই দু ধরনের খাবার এক সঙ্গে খেলে শরীরের অন্দরে কোনও উপাদানের ঘাটতি হওয়ারই সুয়োগ পায় না। ফলে রোগমুক্তির পথ প্রশস্ত হয়।

তথ্য ৫: ব্রাউন রাইসে রয়েছে সেলেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং মেঙ্গানিজ। আর ডাল, কপার এবং ফসফরাস সমৃদ্ধি। ফলে ব্রাউন রাইস এবং ডাল একসঙ্গে খেলে শরীর ভেঙে যাওয়া বা কোনও ধরনের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায থাকে না বললেই চলে। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে।

তথ্য ৬: এবার একটু সবজির দিকে নজর ফেরানো যাক। ভাতে এবং ডালের সঙ্গে বাঙালিরা মূলত নানা ধরনের সবজি খেতে ভালবাসেন। যেমন ধরুন ঢেঁড়স, বেগুন, বাঁধাকোপি প্রভৃতি। এই সবজিগুলিতে প্রচুর প্ররিমাণে খনিজ থাকে। থাকে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানও। তাহলে ভাবুন একদিকে ডাল এবং ভাতের মতো পুষ্টিকর খাবার। সঙ্গে থাকছে সবজি। তাহলে শরীর নিয়ে আর চিন্তা থাকতে পারে কি!

তথ্য ৭: বাঙালিরা যে কোনও খাবারেই হলুদ এবং রসুন দিয়ে থাকেন। শরীরকে ভিতর থেকে চাঙ্গা করে তুলতে এই দুটি উপাদানেরও কোনও বিকল্প আছে বলে তো মনে হয় না। প্রসঙ্গত, হলুদ এবং রসুনে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার সহ একাধিক মারণ রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তথ্য ৮: ডাল বা সবজিকে সুস্বাদু করে তুলতে একাধিক মশলার ব্যবহারও চোখে পরে বাঙালি পদে। যেমন ধরুন অনেকেই এক্ষেত্রে সরষে বীজ, জিরা, কারি পাতা গোল মরিচ প্রভৃতি। এই সবকটা উপকরণেই কোনও না কোনও পুষ্টিকর উপাদান রেয়েছে, যা নানাভাবে শরীরের কাজে লেগে যায়। তাহলে বুঝছেন তো বাঙালি খাবার শুধু একদিক থেকে নয়, নানা দিত থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।

তথ্য ৯: আপনি কী ওজন কমাতে চান? তাহলে সাদা ভাত বাদ দিয়ে আজ থেকেই বাঙালি খাবার খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ওজন কমতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরির চাহিদা মেনে খাওয়া-দাওয়া করুন। দেখবেন নিমেষে ওজন কমকে শুরু করবে।

তথ্য ১০: শরীরকে সুস্থ রাখতে বাড়ির খাবার এবং ফল, এই দুটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো যুব সমাজের কাছে অনুরোধ, যদি অনেকদিন পর্যন্ত সুস্থ-সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে চান, তাহলে স্ট্রিট ফুড এবং জাঙ্ক ফুড কম খেয়ে সাধারণ বাঙালি খাবার খাওয়া শুরু করুন। সেউ সঙ্গে প্রতিদিন একটা করে ফল খাওয়ার অভ্যাস করলে দেখবেন কোনও রোগই আর ছুঁতে পরাবে না।

Related Posts

Leave a Reply