নাম না শুনলেও শরীরের জন্য ভীষণ দরকারি এই ভিটামিন
আমরা অনেকেই বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও অন্যান্য নানাধরনের পুষ্টি উপাদানের কথা জানি। এসব উপাদানের অভাবে শরীরের কী ক্ষতি হয় তাও জানি। কিন্তু কোলিনের কথা আমরা কি জানি?
কোলিন কেন গুরুত্বপূর্ণ
কোলিন জলে দ্রবণীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন। এটি মূলত ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের সঙ্গে একত্রিত করে দেখা হয়। আর এ ভিটামিন দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যদিও অনেকেই এ ভিটামিনের নাম শোনেননি। আর এ ভিটামিনটির অভাবে বহু মানুষকেই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যাও হচ্ছে এ ভিটামিনের অভাবে। পরিসংখ্যানে প্রকাশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ শতাংশ ব্যক্তিরই কোলিন ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে। আর তাই এখন সময় এসেছে ভিটামিনটির দিকে নতুন করে তাকানোর।
আমরা কেন কোলিন পাই না?
আমেরিকার কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মেরি কাউডিল কোলিনের নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি জানান, বহুদিন ধরেই ধারণা করা হয়, কোলিন দেহই তৈরি করে। আর এ কারণে এ বিষয়টি নিয়ে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
তিনি জানান, আমাদের দেহ সময়ে সময়ে কোলিন তৈরি করে। কিন্তু তা সবসময় নয়। যেমন গর্ভবতী নারীর দেহে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে এটি উৎপাদন বেড়ে যায়।
কোলিনের স্বাস্থ্যগত বিষয়
ভিটামিন ডি যেমন দেহের ক্যালসিয়াম গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তেমন কোলিনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন বি-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। বিভিন্ন গবেষণায় এ বিষয়গুলো জানা যাচ্ছে।
গর্ভবতী অবস্থায় ও শিশুকে মাতৃদুগ্ধ দানরত অবস্থায় কোলিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এ সময় দেহ যেন পর্যাপ্ত কোলিন পায় তা দেখতে হবে। এছাড়া এ উপাদানটি মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডের জন্যও প্রয়োজনীয়।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্ক বুড়িয়ে যাওয়া শুরু হয়। তবে কোলিন এ প্রক্রিয়া উন্নতি করতে পারে।
লিভারের জন্য কোলিন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি লিভারের বাড়তি ফ্যাট দূর করতে সহায়তা করে।
খেলোয়াড়দের জন্য কোলিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোলিন মস্তিষ্ক ও দেহের দ্রুত সংযোগ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়।
কিভাবে কোলিন পাবেন?
প্রতিদিন আমাদের দেহে ৫৫০ এমজি কোলিন গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু কিভাবে পাবেন এ কোলিন? এক্ষেত্রে খাদ্যতালিকাটি একটু সতর্কতার সঙ্গে দেখতে হবে। কোলিনযুক্ত খাবার খেতে হবে।
কোলিন পাওয়া যায় মাছ, মাংস ও ডিমে। এছাড়া এটি রয়েছে শীম, শাক-সবজি ও অন্যান্য টাটকা ভেষজ উপাদানে। আর তাই এসব খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।