চলন্ত যমদূত কিন্তু অবধারিত মৃত্যু থেকে বাঁচাতে পারে এ-ই
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড এবং মোনাস ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে ‘ব্রেন স্ট্রোক’ নিয়ে এক গবেষণাপত্র প্রকাশ্যে এনেছে। এতে দাবি করা হয়েছে, একটি বিশেষ মাকড়সার লালা দিয়ে সামলিয়ে দেওয়া যেতে পারে ‘ব্রেন স্ট্রোক’-এর ক্ষতিকে। ‘প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’-এ এই গবেষণার কথা প্রকাশিতও হয়েছে।
মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ‘ব্রেন স্ট্রোক’ হয়। এর জন্য মস্তিষ্কের কোষগুলি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ব্রিসবেন সমুদ্র সৈকতে এক বিশেষ ধরনের ‘ফানেল স্পাইডার’ পাওয়া যায়। এই মাকড়সাগুলি এতটাই বিষ ধারণ করে যে, এদের কামড়ে ১৫ মিনিটে যে কোনও মানুষের মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু, পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই ‘ফানেল স্পাইডার’-এর লালায় যে বিষ থাকে, তাতে ‘এইচ আই ১’ বলে একটি প্রোটিন থাকে। এই ‘এইচ আই ১’ প্রোটিন মস্তিষ্কের মধ্যে ‘অ্যাসিড সেনসিং আয়ন চ্যানল’-কে আটকে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ‘ব্রেন স্ট্রোক’-এর পরে মস্তিষ্কের যে ক্ষতি হয়, তার মূলে এই ‘অ্যাসিড সেনসিং আয়ন চ্যানল’ থাকে বলে দাবি গবেষকদের।
এখন পর্যন্ত তিনটি ‘ফানেল স্পাইডার’-কে নিয়ে এই পরীক্ষা-নিরিক্ষা হয়েছে। গবেষণায় ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল স্টাডিজ’-এ গবেষকরা প্রথমে ‘এইচ আই ১’-এর একটি মাত্র ডোজ প্রয়োগ করেছিলেন। দেখা গিয়েছে, ‘ব্রেন-স্ট্রোক’-এ ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলি আট ঘণ্টার মধ্যে এই এক ডোজেই অনেকটা আঘাত সামলিয়ে উঠেছে এবং কাজ করতে শুরু করেছে।
গবেষণা দলের সঙ্গে থাকা স্নায়ু বিশেষজ্ঞরা এই ‘এইচ আই ১’ প্রোটিনকে ‘নিউরো প্রোটেকটিভ’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন। গবেষকদের দাবি, এই আবিষ্কার ‘ব্রেন স্ট্রোক’-এর চিকিৎসায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।