প্রতিদিন সন্ধ্যায় এটা বাজান, চমকে দেবে ফল
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
প্রতিটি বাঙালি বাড়িতেই পুজো-পার্বণের সময় শাঁক বাজানোর রেওয়াজ রয়েছে। আর সন্ধ্যা দেওয়ার সময় তো মাস্ট! ছোট থেকেই শুনে আসছি ভাগবানের নাম নেওয়া সময় শাঁক বাজালে নাকি মঙ্গল হয়। এমনটা আদৌ হয় কিনা জানা নেই। তবে একথা জানেন কি শাঁক বাজালে শরীর নিয়ে আর কোনও চিন্তা থাকে না। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে শাঁক বাজানোর সময় গলা থেকে পা পর্যন্ত প্রতিটি পেশি সংকুচিত এবং প্রসারিত হয়। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরেও নানা পরিবর্তন হতে থাকে, যে কারণ একাধিক উপকার মেলে। যেমন…
১. শরীরের প্রতিটি চক্রকে উজ্জীবিত করে: শাঁক বাজানোর সময় শরীরের ভিতরে যে কম্পন তৈরি হয় তাতে মানব দেহের সাতটি চক্রের ভারসাম্য ঠিক থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোনও রোগই শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। একাধিক প্রাচীন গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়, আমাদের ভাল বা মন্দ থাকার সঙ্গে এই সাতটি চক্রের নিবিড় যোগ রয়েছে। তাই তো প্রতিটি চক্রের মধ্যে ভারসাম্য থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে একটা ছোট্ট অভ্যাস, তা হল শাঁক বাজানো। প্রসঙ্গত, আমাদের শরীরের অন্দরে থাকা সাতটি চক্র হল যথাক্রমে, মূলধারা, সোয়াধিস্টান, মানিপুরখ, অনাহত, বিশুদ্ধি, অজনা, সহস্ররা এবং ব্রহ্মারন্দ্র।
২. ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে মুক্তি মেলে: শুনতে হয়তো একটু আজব লাগতে পারে। কিন্তু একথা প্রমাণিত হয়েছে যে শাঁক বাজানোর সময় সারা ঘরে যে আওয়াজ ছড়িয়ে পরে, তার প্রভাবে সেখানে উপস্থিত প্রতিটি ব্যাকটেরিয়া এবং ক্ষতিকর জীবাণু মারা যায়। ঠিক যেমনটা মন্দিরে ঘন্টা বাজালে হয়ে থাকে। তাই নিজেকে এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের যদি নানাবিধ সংক্রমণ এবং রোগের থেকে দূরে রাখতে চান, তাহলে প্রতিদিন সকাল-বিকাল শাঁক বাজানো শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৩. ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: খেয়াল করে দেখবেন শাঁক বাজানোর সময় আমাদের জোরে জোরে শ্বাস নিতে হয়। এমনটা প্রতিদিন করতে করতে এক সময়ে গিয়ে ফুসফুসের ক্ষমতা মারাত্মক বেড়ে যায়। আজকাল পরিবেশ দূষণের কারণে লাং যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাতে এই ছোট্ট অভ্যাসটা কিন্তু সুস্থ জীবন পেতে অনেকভাবে সাহায্য করতে পারে। প্রসঙ্গত, যোগ গুরুরাও মেনে নিয়েছেন প্রতিদিন প্রাণায়ম করলে যে উপকার পাওয়া যায়, সেই একই রকমের উপকার মেলে শাঁক বাজালেও।
৪. রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটে: শাঁক বাজানোর সময় জোরে ফু দেওয়ার কারণে মুখের পেশির যেমন সংকোচন-প্রসারণ ঘটে, তেমনি পা পর্যন্ত শরীরে প্রতিটি পেশিতে সচলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সারা দেহে রক্ত প্রবাহেরও উন্নতি ঘটে। ফলে প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে গিয়ে সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতার উন্নতি ঘটে।
৫. কথা বলার সমস্যা দূর হয়: গবেষণায় দেখা গেছে যাদের স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে সমস্যা হয় অথবা তোৎলামোর ধাত রয়েছে, তারা যদি নিয়মিত শাঁক বাজান তাহলে দারুন উপকার মিলতে পারে। আসলে শাঁক বাজানোর সময় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড, গলার পেশি এবং ভোকাল কর্ডের বারংবার সংকোচন-প্রসারণের কারণে ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলার সমস্যা কমে যেতে শুরু করে।
৬. জন্ডিস সহ একাধিক রোগ দূরে থাকে: প্রাচীন আয়ুর্বেদ গ্রন্থে এমনটা উল্লেখ পরাওয়া গেছে যে শাঁকের মধ্যে সারা রাত জল রেখে দিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই জল পান করলে জন্ডিস এবং হজমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমে। সেই সঙ্গে দাঁত এবং হাড় শক্তপোক্ত হয়। আসলে শাঁকের শরীরে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং সালফার জলে মিশে শরীরে প্রবেশ করার কারণেই এই উপকারগুলি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। যারা উচ্চ রক্তচাপ, গ্লকোমা এবং হার্নিয়ার সমস্যায় ভুগছেন, তারা ভুলেও কিন্তু শাঁক বাজাবেন না। কারণ এমনটা করলে আপনাদের ক্ষতি হতে পারে।