ওজন কমায় ও হার্ট ভাল রাখে নারিকেল
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
আজ থেকে প্রায় কয়েকশো লক্ষ বছর আগে কোকোস জাইলেনিকা নামে ছোট্ট বাদামের মতো দেখতে মাত্র ৩.৫ সেন্টিমিটার লম্বা একটি ফল ছিল। বিজ্ঞানীরা এই ফলের ফসিলকে(বাতিল হয়ে যাওয়া অংশ) নিয়ে বিভিন্ন গবেষণার পর প্রমাণ করেছেন যে, এটিই নাকি নারকেলের পূর্বপুরুষ। কসমস ইনডিকোপ্লিউস্টেস নামে এক গ্রিক ব্যবসায়ী ভারতের এই ফলের গুণগান করে একে ‘গ্রেট নাট অফ ইন্ডিয়া’ বলে অবিহিত করেছিলেন।
নারিকেল এমন একটি ফল, যা পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এই গাছের কাঠ থেকে শুরু করে, পাতা, নারিকেলের ছোবড়া, জল, দুধ, মালা, সবটাই ব্যবহৃত হয় কোনও না কোনও কাজে। তাই অর্থনীতিতে নারিকেলের ভূমিকা যে অসীম তা কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। এছাড়াও এতে থাকা প্রোটিন উপাদানগুলি আমাদের শরীরের জন্যও খুবই উপকারি। তবে চলুন বিশ্ব নারিকেল দিবসে জেনে নিন নারিকেলের নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
১) ওজন কমাতে সাহায্য করে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নারিকেলের ভূমিকা অপরিসীম। নারিকেলে রয়েছে মিডিয়াম – চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড, যা কেবলমাত্র ওজন কমানোর পাশাপাশি বিপাকীয় ক্রিয়াকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
২) ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে নারিকেলে থাকা লরিক অ্যাসিড(lauric Acid) শরীরের মধ্যে মনোলরিন (Monolaurin) নামে একটি পদার্থ গঠন করে, যা ছত্রাক, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
৩) দাঁত এবং হাড়কে মজবুত করে নারিকেল মজবুত দাঁত এবং হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি দাঁতের বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচাতেও সহায়তা করে। অস্টিওপোরোসিসের মত হাড়ের অসুখ যা হারকে ভঙ্গুর এবং পাতলা করে দেয়, তা রোধ করতেও নারিকেলের অপরিসীম।
৪) হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা প্রতিদিন নারিকেল এবং নারিকেলের তেল খান তাদের মধ্যে অন্যান্য লোকেদের তুলনায় হৃদরোগের হার অনেকটাই কম। পাশাপাশি নারিকেল তেল কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। তাই হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য আমাদের রোজ নারিকেল বা নারিকেল তেল খাওয়া উচিত।
৫) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে নারিকেলে শর্করার মাত্রা কম থাকে এবং ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকে, যার কারণে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রেখে ডায়াবেটিসকে দূর করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও ১) ত্বকের অসুখ যেমন – বয়স্ক এবং বাচ্চাদের র্যাশ, অ্যাকনি, ত্বকের ইনফেকশনে, চুলকানি, এগজিমা, ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ঝুলে যাওয়া ত্বককে টান টান ও মসৃণ করতে, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে নারকেল তেল ও দুধ খুবই উপকারি। পাশাপাশি ত্বকের যেকোনও ক্ষত সারাতেও সাহায্য করে।
২) নারিকেল হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যামিনো অ্যাসিড শোষণ করে নিতে সহায়তা করে।
৩) যেকোনও গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যায় যেমন – পেট ফোলা ও ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, জলের কারণে হওয়া পেটের রোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে নারকেল। বাচ্চাদের কৃমি নষ্ট করতেও সহায়ক এটি।
৪) নারিকেল অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল হওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। ৫) শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে এবং কর্মক্ষমতাকে উন্নত করে।
৬) মূত্রাশয়ের সংক্রমণ এবং কিডনির বিভিন্ন রোগ থেকেও রক্ষা করে।
৭) থাইরয়েড হরমোনের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
৮) নিয়মিত নারিকেল খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
৯) নারিকেল চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত নারিকেল খেলে মাথায় খুশকি ও চামড়ার শুষ্কতা দূর হয় এবং চুল পড়া রোধ হয়।