এই ৬ মন্ত্রেই কেল্লা ফতে, জীবনে সব আসান
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
শব্দ বা কথা যে মানুষের জীবন পরিবর্তন করতে পারে, সেকথা তো কারও আজানা নয়। তাই তো মন্ত্র পাঠ করলে এই মহাবিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা পজেটিভ এনার্জি আমাদের দিকে আকৃষ্ট হয়, ফলে নেগেটিভ এনার্জির বারবারন্ত কমতে শুরু করে। জীবনে আসতে শুরু করে শান্তি এবং আনন্দ। সংস্কৃত শব্দ “মন্ত্র”এর জন্ম হয়েছে “মন” এবং “ত্রা” শব্দ দুটি থেকে। মন হল আমাদের শান্তির উৎসস্থল, আর “ত্রা” শব্দের অর্থ হল পদ্ধতি। অর্থাৎ যে পদ্ধতিতে মনকে আনন্দে রাখা যায়, তাই হল মন্ত্র। তাই তো মন এবং জীবনকে আনন্দে রাখতে মন্ত্রের সাহায্য নিতেই হবে। সহজ কথায়, গঙ্গার প্রকৃত রূপ দেখতে হলে যেমন গাঙ্গোত্রী যেতে হয়, তেমনি প্রকৃত আনন্দকে উপভোগ করতে গেলে তার উৎসস্থলে পৌঁছাতে হবে। আর আনন্দ অভিমুখে যাত্রা যে মন্ত্রোচ্চারণ ছাড়া সম্ভব নয়! এবার বুঝতে পেরেছেন তো শব্দ-মন্ত্র-আনন্দ, সবই এক সূত্রে বাঁধা। শব্দ তৈরি করে মন্ত্রকে, আর মন্ত্র জন্ম দেবে আনন্দের। তাই তো জীবনেকে আর্থবহ এবং সুন্দর করে তুলতে আজ থেকেই এই ৬ টি মন্ত্র পাঠ শুরু করুন। দেখবেন আপনার জীবনে কোনও দিন দুঃখ জায়গা করে নিতে পারবে না। কী কী মন্ত্রে লুকিয়ে আছে খুশি মনের চাবিকাঠি? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।
১. “ওম সার্বেশম সাভাস্তির ভবতু” (শান্তির মন্ত্র): মনে মনে সারা দিন ধরে এই মন্ত্রটি জপ করতে থাকুন। দেখবেন মন শান্ত হবে। মনোযোগ বাড়বে, মন ভাল চিন্তায় ভরে যাবে এবং অবশ্যই জীবনে শান্তি নিয়ে আসবে। যেদিন অফিসে একটু ঝামেলার কাজ থাকবে অথবা যদি কোনও কাজের কারণে মন অশান্ত হয়ে ওটে, তাহলে এই মন্ত্রটি পাঠ করতে শুরু করবেন। দেখবেন নিমেষে মন চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
২. গায়ত্রী মন্ত্র: “ওম ভুর ভবসোহা, তথ সাভিতুর ভারেন্নিয়াম, ভার্গো দেবাসায়া ধিমাহি, ধিয়ো ইয়ো না প্রাচোদায়া”- এই মন্ত্রটি পাঠ করলে কী হতে পারে জানেন? ঋক বেদে উল্লেখ রয়েছে গায়েত্রী মন্ত্র পাঠ করলে আমাদের সব ক্ষত, তা মনের হোক, শরীরের হোক কী মস্তিষ্কের, সব ধরনের যন্ত্রণার উপশোম ঘটে। সেই সঙ্গে মন, খারাপ চিন্তা থেকে মুক্তি পায়। ফলে আমাদের শরীর পজেটিভ এনার্জিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং সর্বপরি এই মন্ত্র আমাদের আশেপাশের পরিবেশে উপস্থিত নেগেটিভ এনার্জিকেও শেষ করে দেয়। ফলে খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৩. “ওম নমঃ শিবায়”: দেবাদিদেব হলেন জীবনের উৎস। তার শরণাপন্ন হওয়া মানে সমস্ত দুঃখের অবশান ঘটবে। জীবন হয়ে উঠবে অনন্দে আলোকময়। তাই তো প্রতিদিন ভগবান শিবের এই মন্ত্রটি পাঠ করুন, দেখবেন জীবনের অর্থ খুঁজে পাবেন। সেই সঙ্গে মন শান্ত হবে, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমবে, আশান্তি দূর হবে এবং জীবনে আপনি যা চান তা পাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত হবে।
৪. “ওম গম গনপাতেয়া নামহ”: এই মন্ত্রের অর্থ হল, “আমি ভগবান গনেশের সামনে নত হয়ে প্রর্থনা করছি, আমার জীবনের সব বাঁধা এবং যন্ত্রণা যেন দূর হয়।” বাস্তবিকই এই মন্ত্রটি পাঠ করলে সব ধরেনর বাঁধা একে একে সরতে থাকে। তাই যখনই মনে হবে আপনি থমকে গেছেন। নানা কিছু আপনাকে জীবনের পথে এগতে দিচ্ছে না, তখন এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করবেন। দেখবেন ফল মিলতে দেরি লাগবে না। শুধু তাই নয় , জীবনের লক্ষে পৌঁছাতে যখনই বাঁধার সম্মুখিন হবেন, তখনই ভগবান গনেশের এই মন্ত্রটি জপ করবেন। এমনটা করলে ফল যে পাবেনই, তা হলফ করে বলতে পারি।
৫. “ওম মানি পদমে হাম”: প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ঘেঁটে জানা গেছে এই মন্ত্রটি দিনে কম করে হাজার বার মনে মনে পাঠ করলে জীবনে কোনও দিন অশন্তির মেঘ দেখা যায় না। শুধু তাই নয়, মৃত্য়ুর সময় সেই ব্যক্তিকে যখন দাহ করা হয়, তখন চিতার ধোঁয়া এবং গন্ধ যারা যার কাছে পৌঁছায়, তার জীবনেরও সব পাপ ধুয়ে যায়। এবার বুঝতে পারছেন এই মন্ত্রটি কতটা শক্তিশালী। প্রসঙ্গত, এমনও বিশ্বাস আছে, এই মন্ত্রটি যিনি মন দিয়ে পঠ করবেন, তিনি জীবনে চলার পথে ভাল বন্ধু পাবেন, আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ থাকবেন, খারাপ কিছু ঘটবে না, কেউ ঠকাতে পারবে না এবং মনের সব ইচ্ছা পূরণ হবে।
৬. “ওম” মন্ত্র: এই মন্ত্রটির উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। মনকে ঠান্ডা করার পাশাপাশি নানাবিধ রোগকে দূর রাখতে ওম মন্ত্রের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক কথায় বলা যেতে পারে সুন্দর জীবনের চাবিকাঠি হল এই মন্ত্র। তাই তো প্রতিদিন ওম মন্ত্রের জপ করলে শত চেষ্টা করেও দুঃখ নিজের জায়গা করে নিতে পারবে না আপনার জীবনে।