প্রতিদিন কপালভাতি কি করতে পারে জানেন?
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
হাজারো ব্যস্ততার মধ্যে আমাদের কারওরই সময় হয়ে ওঠে না ব্যায়াম করার। যদিও ৩০ মিনিট সময় ব্যয় করে ব্যায়াম করা যায়, তাহলে অনেকরকমের লাভ হতে পারে। আবার ব্যায়াম মানেই যে শারীরিক কসরত, তা নয় কিন্তু! যেমন ধরুন রোগা হতে গেলে বা শরীরকে চনমনে রাখতে কপাল ভাতির মতো ব্যায়ামও করা যেতে পারে। এক জায়গায় বসে মনের স্থিরতা বজায় রেখে এই ব্যায়ামটি অনুশীলন করলে দারুণভাবে উপকার মেলে! কপালভাতি শব্দটি কপাল এবং ভাতি অর্থাৎ উজ্জ্বল থেকে এসেছে। কেন এমন নামকরণ জানেন? আসলে এই আসনটি অনুশীলন করলে মানসিক, শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক চিন্তার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে পেটের মেদ কমে চোখে পরার মতো। তবে এখানেই শেষ নয়, কপালভাতি আসনটির আরও অনেক উপকারিতা আছে। যেমন…
১. মানসিক বিকাশ ঘটে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কপালভাতি অনুশীলন করলে মানসিক এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটে এবং আধ্যাত্মিকতার বিকাশ ঘটে। আসলে এই ব্যায়ামটি করলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভেবই কগনিটিভ ফাংশনের উন্নতি ঘটে।
২. লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে: এই ব্যায়ামটি করার সময় শ্বাস নেওয়া এবং ত্যাগ করা হয়। এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করার কারণে শ্বাস ছাড়ার সময় পেট ফুলে যায় এবং প্রশ্বাস প্রক্রিয়ায় পেট চেপে থাকে বা ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। এমনটা হওয়ার কারণে পেটের চারিদিকের মাংসপেশির ওপর প্রভাব পড়ে, সেই সঙ্গে লিভার এবং অগ্ন্যাশয়েরও কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। এছাড়াও শরীরের এই অংশে রক্তপ্রবাহের উন্নতি ঘটে।
৩. হজম শক্তির উন্নতি ঘটে: বেশ কিছু কেস স্টাডি করার পর আধুনিক চিকিৎসার পক্ষে সাওয়াল করা বিশেষজ্ঞরাও মেনে নিয়েছেন কপালভাতির আসনটি বাস্তবিকই দারুন উপকারি। দেখা গেছে এই আসনটি প্রতিদিন করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে গ্যাসের সমস্যাও নির্মূল করে। একানেই শেষ নয়, কম সময় পেটের মেদ কমাতে চান, তাহলে এই আসনটির কোনও বিকল্প হতে পারে না!
৪. ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে: খেয়াল করে দেখবেন কপালভাতি আসনটি করার সময় অনবরত শ্বাস নিতে এবং ছাড়তে হয়। এমনটা করার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়ারও উন্নতি ঘটে।
৫. ব্লকেজ দূর করে: হার্ট বা ফুসফুসে ব্লকেজ ধরা পেরেছে নাকি? তাহেল কাল সকাল থেকেই এই আসনটি করা শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ লক্ষ করে দেখা গেছে নিয়মিত কপালভাতি আসনটি করলে ব্লকেজ কমতে শুরু করে। ফলে হার্টের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৬.এনার্জির ঘাটতি দূর করে: অল্পতেই যারা ক্লান্ত হেয় পরেন, তাদের তো নিয়মিত কপালভাতি করা উচিত। কারণ শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর করতে এই আসনটি দারুন সাহায্য করে। ফলে একদিকে যেমন দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করার ক্ষমতা বাড়ে, তেমনি ত্বকের ঔজ্জ্বল্যও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
৭.স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটায়: যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে, এই আসনটি করার সময় মস্তিষ্কের অন্দরে রক্ত সরবরাহ এতটাই বেড়ে যায় য়ে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে। কিভাবে কপালভাতি আসনটি করবেন? কপালভাতি করতে হলে প্রথমে পদ্মাসনে বসতে হয়। এই সময় শিরদাঁড়া সোজা থাকবে। যাদের পিঠে কোনও সমস্যা আছে, তাঁরা দেওয়ালে হেলান দিয়েও বসতে পারেন। প্রথমে কম সময়ের ব্যবধানে নিঃশ্বাস ছাড়তে পারেন। তারপর ধীরে ধীরে সময় বাড়ানোর চেষ্টা করবেন।
প্রসঙ্গত, যাদের কোমরে সমস্যা রয়েছে বা উচ্চ রক্তচাপ অথবা মাথা ধরার মতো সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা যোগ শিক্ষকের পরামর্শ ছাড়া এই আসনটি করবেন না। আরেকটি বিষয় এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে। তা হল, কপালভাতি সবসময় ভোরবেলা অনুশীলন করা উচিত। আর ভুলেও খাবার খাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে এই আসনটি করা উচিত নয়।