পেটের সমস্যা ছাড়াই গমজাতীয় খাদ্য সহ্য করতে পারছেন না, কারণটা এখানে
কলকাতা টাইমস :
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, পেটের পীড়া না থাকলেও কিছু শস্যদানা জাতীয় খাবার খেয়ে লোকে অন্ত্রের অস্বস্তিতে আক্রান্ত হতে পারেন। এই গবেষণার ফলে, পেটের পীড়া না থাকা সত্ত্বেও গম জাতীয় খাদ্য খেয়ে কেন কেউ অন্ত্রের অস্বস্তিতে আক্রান্ত হন তা বুঝার নতুন একটি উপায় পেয়ে গেলেন ডাক্তাররা।
এ গবেষণায় আরো প্রমাণিত হলো, গম জাতীয় খাদ্য খাওয়ার পর যারাই অন্ত্রের অস্বস্তিতে আক্রান্ত হন তাদের সকলেই গম অ্যালার্জিতে আক্রান্ত তাও ভাবা ঠিক নয়। গবেষকদের ধারণা নতুন এই আবিষ্কারের ফলে গম অ্যালার্জি ও বাগান ভিন্নতার কারণে সৃষ্ট অস্বস্তির মাঝেও ফারাক নির্ণয় করা সম্ভব হবে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের পেটের পীড়া বিভাগের প্রধান গবেষক আরমিন আলায়েদিনি গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ”নতুন আবিষ্কারের ফলে কারো মাঝে এই বিশেষ সমস্যাটি আরো ভালোভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। আর এই আবিষ্কারের ফলে এ বিশেষ সমস্যায় আক্রান্ত লোকদের চিকিৎসাও আগের চেয়ে আরো অনেক সহজ হয়ে আসবে।”
নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের চিকিৎসক ড. ক্রিস্টিনা টেনিসন বলেন, ”নতুন এই আবিষ্কারের ফলে একদিন গম সংবেদনশীলতার কারণ পরীক্ষা করে দেখার পদ্ধতিও উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে।”
তিনি বলেন, ”পেটের পীড়া, গম জাতীয় খাদ্যের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা এবং বিরক্তিকর পেটের পীড়া জাতীয় রোগের মাঝে ফারাক নির্ণয়ের জন্য ওই পরীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবন জরুরি।”
এ ধরনের পরীক্ষাপদ্ধতি উদ্ভাবন সম্ভব হলে রোগীরাই উপকৃত হবেন বলে মত দিয়েছেন মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের চিকিৎসাগত পুষ্টি সমন্বয়ক লরা ম্যানিং। এ রকম একটি পরীক্ষাপদ্ধতির অভাবেই তিনি তার কাছে আসা গম সংবেদনশীলতায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে পারছেন না। কারণ এদের কেউই গম অ্যালার্জি বা পেটের পীড়া এ দুটির কোনোটিতেই আক্রান্ত নন।
বর্তমানে গম সংবেদনশীলতায় আক্রান্ত রোগীদের তিনি চিকিৎসা করেন খাদ্যতালিকা থেকে সব গম জাতীয় খাদ্য বাতিল করার মাধ্যমে। গম জাতীয় খাদ্য খাওয়া বাদ দেওয়ার পর রোগীদের অন্ত্রের অস্বস্তি দূর হলে তিনি এরপর রোগীদেরকে চিরতরে গম জাতীয় খাদ্য এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
তবে গম সংবেদনশীলতা না থাকা সত্ত্বেও গম জাতীয় খাবার খেয়ে অনেকে অন্ত্রের অস্বস্তিতে আক্রান্ত হতে পারেন। এর কারণ সম্ভবত, উচ্চ কার্বোহাউড্রেট জাতীয় যেকোনো খাবারই সাধারণত রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে বা কমিয়ে দিতে পারে। যার ফলে গম জাতীয় খাবার খেয়ে কেউ অস্বাভাবিকভাবে ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। আর সব ধরনের খাদ্যেই এফওডিএমএপি (FODMAP) নামের এক বিশেষ ধরনের কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায় যেটিকেও এ জন্য দায়ী করা যায়।
তবে নতুন এই আবিষ্কারের ফলে, গম সংবেদনশীলতা অর্থাৎ গম জাতীয় খাদ্য খাওয়ার পর অন্ত্রের অস্বস্তিতে আক্রান্তদেরকে তাদের খাদ্যতালিকা থেকে গম জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে কিনা তা একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব হবে। নতুন এই গবেষণার ফলাফলই হবে ভবিষ্যতে এ-সংক্রান্ত একটি নতুন রক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবনের ভিত্তি।