এই রিঅ্যাকশন না চাইলে উপসর্গহীন করোনায় বুস্টার ডোজ নেওয়ার আগে ভাবুন
কারণ, করোনায় আক্রান্ত হলে শরীরে তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। সেই অবস্থায় বুস্টার ডোজ নিলে তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
অনেকে চিন্তা করছেন, উপসর্গহীন কোনো করোনা রোগী যদি আক্রান্ত অবস্থাতেই বুস্টার ডোজ নেন, তাহলে কি শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়ার শঙ্কা আছে?
ভারতের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘ওমিক্রন যে হারে ছড়াচ্ছে, তাতে কেউই সংক্রমণ থেকে বাদ যাবেন না। তাই বয়স্ক এবং গর্ভবতীদের এমন সংশয় স্বাভাবিক। তবে যারা পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন, তাদের সমস্যা নেই। কিন্তু অধিকাংশই তো পরীক্ষা থেকে দূরে থাকছেন। ‘
‘কোউইন’-এর তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন তিন লাখ ৭৩ হাজার ৬৭৮ জন। চলতি মাসে সেখানে পাঁচ-সাড়ে পাঁচ লাখ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার নয় মাস পরে নেওয়া যাবে বুস্টার ডোজ। আবার কেউ যদি দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরেও করোনায় আক্রান্ত হন, তা হলে সংক্রমিত হওয়ার তিন মাস পরে বুস্টার ডোজ নিতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিষেধক প্রদান ব্যবস্থাপনার শীর্ষ কর্মকর্তা অসীম দাস মালাকারের কথায়, ‘শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেন বেশি দিন থাকে, তার জন্যই আক্রান্ত হওয়ার তিন মাস পরে বুস্টার ডোজ নিতে বলা হচ্ছে। ‘
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’র ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গাঙ্গুলি জানান, উপসর্গহীন কেউ বুস্টার ডোজ নিলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে গিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিষেধক নিলে সঙ্গে সঙ্গে ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় হয়ে ওঠে। সেটাই কাম্য। কিন্তু একই সময়ে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকলে কারও কারও দেহে সাইটোকাইন বেশি বেড়ে গিয়ে বিপত্তি ঘটতে পারে। সংক্রমণ হয়ে থাকলে সেটাই বুস্টারের মতো কাজ করবে। কাজেই সংক্রমণ চলাকালীন বা সেরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বুস্টার ডোজ না নেওয়াই ভালো। ‘
শরীরে অতিরিক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলে অত্যধিক ‘ইমিউনোলজিক রিঅ্যাকশন’-এর শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে জানান ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার। যদিও এর পরীক্ষিত তথ্যপ্রমাণ এখনো নেই। তবু নিয়ম মেনে চলাই উচিত বলে জানান তিনি এবং অন্য চিকিৎসকরা।