November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আগেই সামলান কেশকুন্তলকে

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

যেকোন মহিলার কাছেই চুল নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং আতঙ্কের নাম হলো- চুল পড়ে যাওয়া। একজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং একজন সুস্থ নারীর প্রতিদিন গড়ে স্বাভাবিকভাবেই ৫০-১০০ টি চুল পড়ে থাকে। কারোর কারোর হয়তো ১৫০ টি চুলও পড়তে পারে। তবে এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটি খুবই স্বাভাবিক একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। তবে অনেকেরই চুল পড়ার সমস্যাটি ভয়াবহ মাত্রায় রূপ নেয় এবং যার ফলাফল স্বরূপ দেখা দিতে থাকে নানান রকম সমস্যা, যেমন- মাথার চুল খুব পাতলা হয়ে যাওয়া, টাক পড়ে যাওয়া ইত্যাদি।

আরও পড়ুন : বিনামূল্যে সুস্থ থাকার উপায় যা শুনলে অবাক হবেন

একেক জন মহিলার চুল পড়ার কারণ একেক রকম হতে পারে। কারোর হয়ত চুলের ত্বকের সমস্যার জন্যে চুল পড়তে পারে, কারোর চুলের সঠিক যত্নের অভাবে চুল পড়তে পারে অথবা কারোর হরমোনাল সমস্যার জন্যে চুল পড়ে যেতে পারে। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে এবং যত্ন নিলে চুল পড়া কমে যায় এবং অনেকাংশে একেবারেই বন্ধ করে ফেলা সম্ভব হয়!

আজকের ফিচার থেকে আপনি জেনে নিতে পারবেন পাঁচটি দারুণ উপাদান এবং তার ব্যবহারের নিয়ম যা আপনার মাথার ত্বকের যত্নে, চুল পড়া রোধে এবং নতুনভাবে চুল গজাতে সাহায্য করবে।

১. আমলকী : প্রাকৃতিক উপায়ে চুল পড়া বন্ধ করতে এবং নতুন চুল গজাতে চাইলে আমলকী ব্যবহার শুরু করুন। আমলকী তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। অনেক সময় এই ভিটামিন-সি এর অভাবেই চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যাটি হয়ে থাকে বলে, আমলকী অনেক বেশী উপকার করে থাকে। আমলকীতে ভিটামিন-সি ছাড়াও রয়েছে প্রদাহ-বিরোধী, এন্টি-অক্সিডেন্ট, এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং এক্সফলিয়েটিং উপাদান সমূহ। যা চুলের গোড়াকে স্বাস্থ্যবান এবং মজবুত রাখতে সাহায্য করে বলে, চুল পড়ার হার কমে যায় বহুলাংশে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:

এক চা চামচ আমলকীর রস এবং লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে নিন। এখন এই মিশ্রণটি আপনার চুলের গোড়ায় খুব ভালোভাবে ম্যাসাজ করে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে পুরো চুল ঢেকে রাখুন। এইভাবে সারারাত রেখে দেওয়ার পরে সকালে উঠে চুল ধুয়ে ফেলুন।

২. পেঁয়াজের রস : চুল এবং মাথার ত্বকের জন্য পেঁয়াজের রস একদম জাদুর মতো কাজ করে থাকে। পেঁয়াজের রসে রয়েছে বেশী পরিমাণে সালফার, যা রক্ত চলাচল এর প্রবাহ বাড়িয়ে থাকে। যার ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়, নতুন চুলগজাতে শুরু করে এবং চুলের ত্বকের প্রদাহ কমে যায়। এছাড়া, পেঁয়াজের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট মূলক উপাদান, যা চুল ও চুলের ত্বকে থাকা জীবাণু এবং উকুন মেরে ফেলতে সাহায্য করে। অনেকের মাথার ত্বকে ইনফেকশন হয় অথবা ফাংগাসের সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রেও পেঁয়াজের রস চমৎকার কাজে দিয়ে থাকে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:

একটি বড় সাইজের পেঁয়াজ নিয়ে একদম কুচি কুচি করে কাটুন এবং সেটা থেকে রস বের করুন। এখন এই রস সরাসরি চুলের গোড়ার খুব ভালোভাবে এবং মাথার ত্বকে খুব ধীরে ধীরে লাগান। পেয়ার রস লাগানো শেষে হয়ে গেলে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর পছন্দনীয় কোন শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৩. মেথি : মেথি শুধুমাত্র রান্নার জন্যে অথবা চুল মোলায়েম করারা জন্যেই নয়, চুল পড়া রোধে এবং নতুন গজাতেও সাহায্য করে। মেথিতে থাকে হরমোন এন্টিসিডেন্টস, প্রোটিন এবং নিকোটিনিক এসিড যা চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং চুলকে শক্ত করতে সাহায্য করে থাকে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:

এক কাপ জলে পরিমাণমতো মেথি বীজ সারারাতের জন্যে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে এই মেথি বীজ বেটে পেস্ট তৈরি করুণ। এখন এই পেস্ট আপনার সম্পুর্ণ চুলে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন এবং ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। মাসে একবার এইভাবে মেথির পেস্ট দিতে হবে চুলে।

৪. জবা ফুল : অতিরিক্ত চুল পড়ার ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজে দেয় হচ্ছে জবা ফুল! শুধুমাত্র চুল পড়ার রোধেই নয়, চুলের বৃদ্ধি বাড়াতেও জবা ফুল চমৎকার উপকারী একটি উপাদান। এছাড়া সুন্দর এই ফুলটি মাথার ত্বকের খুশকি, অকালে চুল পেকে যাওয়া রোধ করতে, চুল ঘন করতে এবং চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধে দারুনভাবে কাজ করে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:

দুই কাপ নারিকেল তেলের ভেতর দশটি জবা ফুল নিন। এরপর এটি জ্বাল দিতে থাকুন যতক্ষণ না ফুলগুলো একবারে শুকিয়ে আসে। এরপর ফুলগুলো থেকে তেল ঝড়িয়ে নিন। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে এই তেল সম্পূর্ণ চুলে যত্ন সহকারে লাগিয়ে নিন এবং সকালে উঠে চুল ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ বার এই তেল ব্যবহার করতে হবে।

৫. নারিকেলের দুধ : শুধুমাত্র নারিকেলে তেলই যে চুলের জন্যে উপকারী সেটা নয়, নারিকেলের দুধও চুলের জন্যে দারুণ উপকার করে থাকে। নারিকেলের দুধে থাকে অনেক বেশী পরিমাণে প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় স্নেহ পদার্থ যা চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে এবং চুল পড়া কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে থাকে। অন্যান্য সকল উপাদানের চাইতে নারিকেল এর দুধ চুল পড়া রোধে এবং নতুন চুল গজাতে অনেক দ্রুত কাজ করে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:

নারিকেলের দুধ বাজারে কিনতে পাওয়া গেলেও নারিকেল থেকে নিজের হাতে তৈরি করা নারিকেলের দুধ সবচেয়ে বেশী কার্যকরী হয়ে থাকে। বাসাতে নারিকেলের দুধ বানাতে চাইলে নারিকেল কুড়িয়ে নিয়ে একটি বড় পাত্রে পানিসহ জ্বাল দিতে হবে। পানিতে যখন বুদবুদ দেখা দেবে তখন সেটি নামিয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে খুব ভালোমতো ছেঁকে নিতে হবে। এখন এই দুধ সম্পুর্ণ মাথার চুলে খুব ভালোভাবে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট মতো রেখে দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।

Related Posts

Leave a Reply