প্রতিদিন কতটা ক্যাপসিকাম খান? তাতেই এই ১০ উপকার
কলকাতা টাইমস :
ক্যাপসিকাম বা সুইট বেল পেপার, উদ্ভিদের সোলানাসিয়াই গোত্রের অন্তর্ভূক্ত যার মধ্যে লঙ্কা, গোলমরিচ ইত্যাদি রয়েছে। এগুলি নানান রকমের রং-এর হয়ে থাকে। যেখানে সবুজ আর বেগুনী ক্যাপ্সিকামগুলি সামান্য তেঁতো স্বাদের হয়ে থাকে, সেখানে লাল, হলুদ ও কমলা রং-এর গুলি মিষ্টি হয়। ক্যাপসিকাম সারা বিশ্ব জুড়ে বিখ্যাত এবং বিভিন্ন ধরণের রান্নায় এর ব্যবহার হয়। ভারতে এই সবজি বিভিন্ন নামে যেমন, ‘সিমলা মির্চ’, ‘ভোপালী মির্চ’, ‘পেড্ডা মিরাপ্পা’ ইত্যাদিতে পরিচিত।
ক্যাপ্সিকাম শুধুমাত্র আকর্ষনীয় ও সুস্বাদুই নয়, বরং এর মধ্যে নানারকম পরিপোষক উপাদান যেমন ভিটামিন-এ, সি এবং কে, ফাইবার, ক্যারাটোনয়েডস ইত্যাদি রয়েছে।
আমাদের শরীরের জন্য ক্যাপ্সিকামের ১০টি উপকার এখানে তালিকা করে দেওয়া হল, আসুন দেখে নেওয়া যাকঃ
১. বাত প্রতিরোধ করেঃ ক্যাপসিকাম বাতের মতো সমস্যার প্রতিরোধ করে। সিনকোনা নামক জড়িবুটির সাথে ক্যাপসিকাম খেলে, তা গেঁটে বাত ও রিউমেটিক আর্থারাইটিসের উপশমে খুব ভাল কাজ করে।
২. ক্যানসার প্রতিরোধ করেঃ ক্যাপ্সিকামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রদাহদূরকারী উপাদানগুলি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল অ্যান্টি-ক্যানসার এজেন্ট। এতে সালফার যৌগ ছাড়াও ক্যারোটেনয়েড লাইকোপেন পাওয়া যায় যা বিভিন্ন ধরণের ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
৩. আয়রনের অভাবের সাথে লড়তে সাহায্য করেঃ ক্যাপ্সিকাম ভিটামিন-সি এর একটি মূখ্য উৎস, যা আয়রনের শোষণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি রক্তাল্পতার মতো রোগও প্রতিরোধ করে।
৪. ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করেঃ এই সবজিটি ডায়াবেটিস নিয়িন্ত্রণ করতেও কার্যকর এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখে। ৫. ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ অন্যান্য ঝাল লঙ্কার মতোন নয়, ক্যাপ্সিকাম আমাদের হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপকে না বাড়িয়েই, বিপাক ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যার ফলাফল হয়, ওজন কমে যাওয়া।
৬. ত্বক এবং হাড়ের জন্য ভালঃ যেখানে ক্যাপসিকামে উপস্থিত ভিটামিন-সি কোলাজেন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা আমাদের দেহের ত্বক ও হাড়ের সন্ধিকে পরিপোষণ দেয়, সেখানে ভিটামিন-কে রক্ততঞ্চনে সাহায্য করে। এটা হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে, এর মাধ্যমেই কোষের ক্ষয় রক্ষায় সহায়ক হয়।
৭. চোখের জন্য সহায়কঃ ক্যাপসিকামে সমৃদ্ধ পরিমাণে ভিটামিন-এ রয়েছে, যা চোখের জন্য বিশেষত রাত্রিকালীন দৃষ্টির জন্য ভাল। আমরা যদি নিয়মিত ক্যাপ্সিকাম খাই তবে এতে উপস্থিত ক্যারোটেনয়েডের কারণে, বয়স জনিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাস বা ম্যাকিউলার ডিজেনারাইজেশনের সম্ভাবনা কমে যায়। বেল পেপারে উপস্থিত ভিটামিন-সি ও ক্যারোটিন, একে চোখের ছানির বিরুদ্ধে একটি খুব ভাল এজেন্টে পরিণত করে।
৮. হৃদযন্ত্রের জন্য ভালঃ একটি সুস্থ হৃদযন্ত্রের জন্য লাল ক্যাপ্সিকাম খুবই ভাল, উৎকৃষ্ট লাইকোপেন উপাদানের উপস্থিতির জন্য একে ধন্যবাদ; যেখানে সবুজগুলিতে ফাইবার রয়েছে যা কোলেস্টেরলকে কমায়। বেল পেপারে উপস্থিত ভিটামিন-বি ও ফোলেট, হোমোসিস্টেন যা কিনা হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর, সেটির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ক্যাপসিকামে উপস্থিত পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়িন্ত্রণে সাহায্য করে।
৯. হজমে সাহায্য করেঃ যারা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য ক্যাপ্সিকাম খুবই ভাল। এটি পাকস্থলীর আলসার বা ঘা সারাতেও সাহায্য করে।
১০. অনাক্রমতাকে উন্নত করেঃ ক্যাপ্সিকামে উপস্থিত ভিটামিন-সি আমাদের অনাক্রমতা বা ইমিউনিটিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বেল পেপারের সাদা ঝিল্লিতে পাওয়া ক্যাপ্সায়াসিন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং এর ফলে অনাক্রমতা উন্নত হয়।