প্রেমের ভারে ব্রিজ ধসলো
কলকাতা টাইমস :
কি ঘর থেকে বের হচ্ছেন? তালা দিয়েছেন তো দরজায়। সাধারণত আমরা বাক্সে, লকারে, ঘরে দরজায় তালা ঝুলতে দেখতে পায়। কিন্তু আপনি যদি জার্মানির কোলন, অস্ট্রিয়ার সালৎসবুর্গ অথবা ফ্রান্সের প্যারিস – এ সব শহরে নদীর উপর যে বড় বড় ব্রিজ আছে, তার দিকে একটু নজর দিলেই দেখবেন অসংখ্য তালা চোখে পড়ছে৷ এগুলোকে বলে ‘প্যাডলক’৷ সহজ ভাষায় ‘প্রেম তালা’৷
এই তালার উদ্দেশ্য হলো সম্পর্কের অটুট বন্ধন৷ প্রেমিক বা প্রেমিকা তার সঙ্গীর সঙ্গে নিজের নামটা লিখে ঐ তালা ব্রিজে আটকে চাবিটা নদীতে ফেলে দেন৷ তাদের বিশ্বাস, এর ফলে সম্পর্ক ঐ তালার মতো দীর্ঘ সময় জোড়া লেগে থাকবে৷ প্যারিসকে বলা হয় প্রেমের নগরী৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই সেখানে প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিচরণ চোখে পড়ার মতো৷ এ কারণে ব্রিজে তালার সংখ্যাটাও তুলনামূলকভাবে অন্যান্য শহরের চেয়ে বেশি৷
গত জুন মাসে সেখানকার একটি ব্রিজ নাকি এ সমস্ত তালার ভারে ধসে পড়েছে৷ হেলে পড়েছে একপাশের রেলিং৷ তাই তাৎক্ষণিকভাবে পর্যটকদের জরুরিভিত্তিতে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেই ব্রিজের আশপাশ থেকে৷
তাই কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা করছেন৷ পর্যটক যুগলদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে যাতে তারা হুজুগে মেতে আর তালা না লাগান৷
প্যারিসের সিটি হলে কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে একটি আবেদন জানিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও শুরু হয়েছে প্রচার৷ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে #lovewithoutlocks লিখে তা পোস্ট করা শুরু হয়েছে ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি মাধ্যমে৷
এই প্রচারের মাধ্যমে পর্যটকদের তারা বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, এভাবে একটি করে তালা লাগানোর ফলাফলটা কতটা ভয়াবহ৷ এর পেছনে একটি সার্বিয়ান কাহিনি আছে৷ এক নববধূ তার বিয়ের দিন এক ব্রিজে গিয়ে তালা লাগিয়ে দেন৷ কেননা বিয়ের আগে ঐ ব্রিজের ওপরই প্রেমিকের সাথে প্রতিদিন দেখা করতেন তিনি৷ এরপর থেকে এর প্রচলন শুরু হয়৷
যদিও ইটালির লেখক ফেডেরিকো মচা এই প্রচলন তার লেখা উপন্যাস থেকে হয়েছে বলে দাবি করেছেন৷ বইটির নাম ‘আই ওয়ান্ট ইউ’৷ সেখানে এমন একটি দৃশ্য আছে বলে জানিয়েছেন তিনি৷