সেই ‘সোনার রেলগাড়ি’ খুঁজে পেলেন গবেষকরা !
কিন্তু বিজ্ঞানীরা এর কোনো দিশা পাননি। পোলিশ মাইনিং একাডেমির প্রফেসর জানুজ মাদেজ জানান, এ ধরনের কোনো রেলগাড়ি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন ডজন ডজন সাংবাদিক এবং টেলিভিশন ক্রু। গত আগস্টে দুই গুপ্তধন শিকারি এ দাবি করেন। সেখানে কোনো ট্রেন থাকলে ভূ-চৌম্বক ক্ষেত্রের ফলাফল অন্যরকম হতো বলে জানান বিজ্ঞানী।
নাৎসিদের সেই কথিত ট্রেন নাকি পড়ে রয়েছে রোক্ল-ওয়ালব্রিজচ রেলওয়ে লাইনের ২২ মাইল দূর একটি স্থানে। মাদেজ এবং তার সহকর্মীদের দল এক মাস ধরে খুঁজে বেরিয়েছে সেই ট্রেন। মাইনিং একাডেমির বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ফিল্ড ডিটেক্টর, থারমাল ইমাজিং ক্যামেরা এবং রাডার ব্যবহার করেছেন। ধরে নেওয়া হয় যে, ট্রেন থাকলে সেখানে যাওয়ার পথ পাথরে বন্ধ হয়ে গেছে।
কিন্তু নাছোড়বান্দা দুই ট্রেজার হান্টার। পিয়োৎ কোপার ওবং আন্দ্রিয়াস রিচটার এক প্রেস কনফারেন্সে জানান, ট্রেনটি ওখানেই আছে। এর আরো অনেক বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।
তাদের জোর দাবি গোটা বিশ্বের সাংবাদিকদের আগ্রহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত কয়েক মাস ধরে অপেশাদার দুই অনুসন্ধানী মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে শহর চষে বেড়িয়েছেন। ইতিমধ্যে ডিসকভারি চ্যানেল মাইনিং একাডেমির বিজ্ঞানীদের সঙ্গে একটি চুক্তি করে ফেলেছে। নাৎসি বাহিনীর স্বর্ণের রেলগাড়ি নিয়ে তাদের তৈরি ডকুমেন্টরি কিনে নেবে তারা।
বহু কাল ধরে এ তথ্যটি প্রচলিত হয়ে আসছে যে, ওয়ালব্রিজচ-এর আশপাশে তিনটি স্বর্ণের ট্রেন কবর দেওয়া হয়। এ তথ্য কিংবদন্তিতে রূপ নিয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম পোল্যান্ডের খনির শহর এটি। জার্মানদের কাছে শহরটি ওয়াল্ডেনবার্গ নামে পরিচিত ছিল।
বলা হয়, ১৯৪৫ সালে জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ট্রেনগুলো রোক্ল শহর ত্যাগ করে। এগুলো স্বর্ণ, রত্ন এবং অস্ত্রে পরিপূর্ণ ছিল। ট্রেনগুলো পরে ‘স্বর্ণের রেলগাড়ি’ নামে পরিচিতি পায়। এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট কিছু নথিপত্রও রয়েছে। আছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য। হিটলারের কমান্ড সেন্টার ছিল আউল পর্বতে। এটা আদৌ ব্যবহৃত হয়েছিল কিনা তা পরিষ্কার নয়। এসবের অনেক কিছু বের করে আনছেন দুই ট্রেজার শিকারি। ওই পর্বত থেকে প্রচুর টানেল নির্মাণ করা হয়। সেই কাজে অসংখ্য বন্দীকে মেরে ফেলা হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হাজারো জার্মান সেখান থেকে সরে পড়েন। পোল্যান্ড যখন কমিইনিস্টদের নিয়ন্ত্রণে আসে তখন ১৯৪৫-এর দিকে গুটিকয়ের জার্মান ওয়ালব্রিচে ছিলেন। তারাই ওই ঘটনার সাক্ষী হন বলে গল্প প্রচলিত আছে।
তখনও সেখানে গুপ্তধন অনুসন্ধানীরা ঘুরে বেড়াতেন। এ কাজটি নিষিদ্ধ করা হয়। পর্বতের কাছাকাছি বহু টানেলের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বিস্ফোরকের মাধ্যমে পাথর ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মিলিটারিদের অধীনে থাকা এলাকাটি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত একরকম অবরুদ্ধ ছিল বলা যায়।
কোপার ও রিচটার ওই শহরেই অধিবাসী। তারা দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় ট্রেনগুলোর অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন বলে দাবি করেন। এ জন্যে তারা ওই সময়ের এক অধিবাসীর কথা উল্লেখ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালী মানুষটি বেঁচে আছেন।