ঠাকুর ঘরে রাখা ঠাকুরের ছবি বা মূর্তির উচ্চতাও কিন্তু ভাগ্য ফেরাতে বা ডোবাতে পারে !
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
শুধু সকাল-বিকাল পুজো করলেই সুফল পাওয়া যায় না । পুজো করতে হবে সব নিয়ম মেনে। তবেই না আপনার বাড়ি স্বর্গলোকের সন্ধান পাবে। এখন প্রশ্ন হল কত সাইজের মূর্তি বাড়িতে রাখা উচিত? এই প্রবন্ধটি পড়লে এই প্রশ্নের উত্তর তো পাবেনই, সেই সঙ্গে আরও এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন, যা মেনে চললে জীবন সুখ-শান্তিতে ভোরে উঠবে।
১. গণেশ এবং সবস্বতী দেবীর মূর্ত কেমন হতে হবে: শাস্ত্র মতে ঠাকুর ঘরে রাখা গণেশ এবং সরস্বতী দেবীর মূর্তি যেন কখনও দাঁড়ান অবস্থায় না হয়। তাঁদের মূর্তি হতে হবে বসা অবস্থায়। এমনটা না হলে কিন্তু বাড়িতে আশান্তির প্রকোপ বাড়তে থাকবে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সমস্যাও ধীরে ধীরে মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। তাই সুখ-সমৃদ্ধির সন্ধান পেতে এই বিষয়টি খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
২. মূর্তি বা ছবির উচ্চতা: বিশেষজ্ঞদের মতে বাড়িতে রাখা প্রতিটি ঠাকুরের মূর্তি বা ছবির উচ্চতা ১০ ইঞ্চির বেশি হওয়া উচিত নয়। কারণ এর বেশি উচ্চতার মূর্তি বাড়িতে রাখা বেজায় অশুভ। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয়ও মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। কী বিষয়? আমাদের মধ্যে অনেকেই ঠাকুর ঘরে একাধিক ঠাকুরের ছবি রেখে থাকেন। এমনটা করাও উচিত নয়। কারণ বেশি বেশি ঠাকুরের ছাবি রাখলে যে বেশি মাত্রায় আশীর্বাদ পাওয়া যায়, এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই কিন্তু!
৩. কোথায় রাখতে হবে ঠাকুরের মূর্তি: হিন্দু শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক গ্রন্থে এমনটা উল্লেখ পাওয়া যায় যে ঠাকুর ঘরে দেব-দেবীর ছবি রাখতে হবে মাটির থেকে বেশ কিছুটা উপরে। কতটা উপরে? এমনটা বিশ্বাস করা হয় মাটিতে বসার পর আমাদের বুকের কাছে যদি ভগবানের পা থাকে, তাহলে তা শুভ লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। তাই এমন উচ্চতাতেই ঠাকুরের মূর্তিকে রাখতে হবে। প্রসঙ্গত, ভুলেও মাটিতে ঠাকুরের ছবি বা মূর্তি রাখবেন না। কারণ এমনটা করা বেজায় অশুভ হিসেবে মানা হয়ে থাকে। আর যদি একান্তই এমনটা করতে হয়, তাহলে পরিষ্কার একটা কাপড় পেতে নিয়ে তার উপরে ঠাকুরের ছবি রাখা যেতে পারে।
৪. ঠাকুরের আসন: এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে ঠাকুরের আসন হয় কাঠের, নয়তো মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি করতে হবে। কারণ এমনটা করলে ভাগবান এক স্থানে থিতু হয়। ফলে আপনার উপর থেকে কখনও সর্বশক্তিমানের আশীর্বাদ সরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন, তা হল ভুলেও লোহার কিছু ব্যবহার করে ঠাকুরের আসন তৈরি করা চলবে না।
৫. ঠাকুর ঘরের রং: আপনার বাড়িতে যদি আলাদা একটি ঘরের ঘর থাকে। তাহলে সেই ঘরের দেওয়ালের রং কী হওয়া উচিত জানা আছে? বাস্তুশাস্ত্র মতে ঠাকুর ঘরের দেওয়ালের রং হতে হবে সাদা, হালকা হলুদ অথবা হলকা নীল। আর মেঝে হতে হবে সাদা, নয়তো হালকা হলুদ রক্ষের।
৬. মৃত মানুষদের ছবি: ভুলেও ঠাকুর ঘরে মৃত মানুষদের ছবি রাখা চলবে না। কারণ এমনটা করলে বাড়িতে নেগেটিভ শক্তির ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে নানা ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এখানেই শেষ নয়, বাস্তু মতে ঠাকুর ঘরে মহাভারতের কোনও ঘটনার ছবি এবং পাখি বা পশুর পোট্রেট রাখা চলবে না। কারণ এমনটা করা বেজায় অশুভ।
৭. দিক নির্দেশ: বাস্তুশাস্ত্র মতে ঠাকুর ছবি বা মূর্তি কখনও দক্ষিণ দিকে মুখ করে রাখা চলবে না। বরং রাখতে হবে পূর্ব দিকে মুখ করে। আর ঠাকুরের আসন রাখতে হবে বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে। এমনটা করলে পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকবে, সেই সঙ্গে কু-নজরের খারাপ প্রভাব থেকেও রক্ষা মিলবে।
৮. পুজোর ঘরে প্রবেশের নিয়ম: ভাল করে হাত-পা না ধুয়ে ঠাকুর ঘরে প্রবেশ করা চলবে না। কারণ এমনটা না করলে বাড়ির সবথেকে পবিত্রতম জায়গাটি আর পবিত্র থাকবে না। ফলে দেব-দেবীদের ক্ষমতা কমতে শুরু করবে। আর এমনটা হলে কতটা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে, তা নিশ্চয় আর আলাদা করে বলে দিতে হবে না!
৯. তামার পাত্র: ঠাকুর ঘরে গঙ্গা জল রাখার প্রয়োজন পরে সবারই। কিন্তু বেশিরভাগই গঙ্গা জল রেখে থাকেন প্লাস্টিকের পাত্রে, যা একেবারেই উচিত নয়। বরং গঙ্গা জল রাখতে হবে তামার পাত্রে। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে তামার পাত্র ছাড়া অন্য কিছুতে গঙ্গা জল রাখলে তার পবিত্রতা ক্ষুন্ন হয়, যা একেবারেই কাম্য নয়।