ওজন কমাতে এই ডায়েট না মৃত্যুর হাতছানি!
কলকাতা টাইমস :
যারা ডায়েট করেন, তারা অনেকেই ফ্যাট এবং শর্করা জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে প্রোটিন ও ফল-সবজি বেশি খান। ইদানিং আবার এক প্রকারের ডায়েটের উদ্ভব হয়েছে যেখানে প্রোটিন ছাড়া প্রায় কিছুই খাওয়া হয় না।কিন্তু জানেন কি এক গবেষণা বলছে এ ধরণের লো-কার্ব বা কম শর্করার খাবার এক ধাপে কমিয়ে দে আপনার আয়ু, এমনকি ডেকে আন্তে পারে মৃত্যুও।
লো-কার্ব ডায়েট হলো সে ডায়েট যেখানে শর্করা খাওয়া হয় খুবই কম। এ ডায়েটে দ্রুত ওজন কমে এবং কিছু কিছু রোগের ঝুঁকি কমে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ২৫ বছরব্যাপী এক গবেষণার শেষে দেখা গেলো, মাঝারী মাত্রায় শর্করা খাওয়া এবং শর্করার পাশাপাশি বেশি পরিমাণে মাংস নয় বরং ফল ও শাক-সবজি খাওয়াটাই উপকারী। শর্করার পরিমাণ অতিরিক্ত কমিয়ে দিলে চার বছর পর্যন্ত আয়ু কমে যেতে পারে।
আরও পড়ুন : এই রাজার মেনুতে ছিল রোজ একটু বিষ আর সঙ্গে ৩৫ কেজি খাবার
ল্যান্সেট পাবলিক হেলথ জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন আমেরিকার ১৫ হাজার ৪০০ মানুষ। তারা কী কী খাবার খান এবং কী পরিমাণে খান এ ব্যাপারে তথ্য নেওয়া হয়। তারা শর্করা, ফ্যাট এবং প্রোটিন থেকে কী পরিমাণে ক্যালরি পান তা হিসেব করেন গবেষকরা। ২৫ বছর ধরে তাদের তথ্য নেওয়ার পর দেখা যায়, যারা দৈনিক ৫০-৫৫ শতাংশ ক্যালোরি কার্বোহাইড্রেট থেকে গ্রহণ করেন (মাঝারী মাত্রায় শর্করা খাওয়া) তাদের মৃত্যু ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় কম হয় অর্থাৎ আয়ু বেশি হয়।
তাদের খাওয়া এসব কার্বোহাইড্রেট মানে শুধুই রুটি জাতীয় খাবার নয়, ছিল সবজি, ফল এবং চিনি। তবে বেশিরভাগ ক্যালোরি আসে আলু, রুটি, ভাত, পাস্তা এবং সিরিয়াল (যেমন কর্নফ্লেকস) থেকে।
গবেষকরা দেখেন, ৫০ বছর বয়স থেকে এ ধরণের খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে গড়ে আরও ৩৩ বছর বাঁচা যায়। কিন্তু যারা শর্করা থেকে ৩০-৪০ শতাংশ বা তারও কম ক্যালরি পান, তাদের আয়ু ৪ থেকে ২ বছর কম হয়। আবার যাদের খাদ্যাভ্যাসের ৬৫ শতাংশ বা তার বেশি আসে শর্করা থেকে (অর্থাৎ তারা শর্করা বেশি খান) তাদের আয়ু আবার বছরখানেক কম হয়।
এরপর গবেষকরা দেখেন শর্করা কম খেলেও ক্ষতি হয় না, যদি বেশি প্রোটিনের বদলে বেশি ফল ও সবজি খাওয়া হয়। শর্করার বদলে গরু, ভেড়া, শুকরের মাংস, মুরগীর মাংস এবং পনীর খাওয়া হলে তাতে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু শর্করার বদলে ডাল এবং বাদাম বেশি খাওয়া হলে উপকারই হতে দেখা যায়।
গবেষকরা বলেন, পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে ফল, সবজি ও শর্করা কম খেয়ে প্রাণীজ আমিষ বেশি খাওয়ার কারণে শরীরে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ বাড়ে এবং আয়ু দ্রুত কমে যায়।