মনের হদিস না রাখলে ঘর বিপদ শরীরের, তাই …

কলকাতা টাইমস :
মনের হদিস কজনই বা রাখে ? একদম ঠিক কথা। কিন্তু জানেন কি এই মনের হদিশ না রাখলে ঘর বিপদ আপনার শরীরের। সেই কারণেই তো বেশি করে মনের খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ মন ভাল না থাকলে যে শরীরও ভাল থাকবে না। কিন্তু বন্ধু মনের খেয়াল রাখা যায় কিভাবে, সে সম্পর্কে কোনও ধারণা আছে কি?
জীবনে সুখ যেমন আসে, তেমনি আসে দুঃখেও। কিন্তু তাই বলে দুঃখকে গুরুত্ব দিলে চলবে না। কারণ একবার যদি দুঃখ মাথায় চেপে বসে, তাহলে মনের অবস্থা বেহাল হতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে শরীরে এসে বাসা বাঁধতে শুরু করে একাধিক মারণ রোগ। তাই তো যখনই দেখবেন মনের লাগাম হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখনই শরীরচর্চার দিকে নজর ফেরাতে শুরু করবেন। দেখবেন নিমেষে মন চাঙ্গা হয়ে উঠবে। কিন্তু শরীরচর্চার সঙ্গে মনের ভাল-মন্দের কি সম্পর্ক? আছে মশাই সম্পর্ক আছে!
একটি গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত শরীরচর্চা করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় যে ডিপ্রেশন বা অ্যাংজাইটির মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এই পরীক্ষায় দেখা গেছে সপ্তাহে ৫ দিন মাত্র ৩০ মিনিট করে শরীরচর্চা করলে মানের স্বাস্থ্যের উন্নতি এতটা মাত্রায় ঘটে যে মানসিক অবসাদের মতো বিষ শরীরকে শেষ করার সুযোগই পায় না। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক শারীরিক উপকারিতাও। যেমন…
১. হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে হার্টের পেশি এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। শুধু তাই নয়, শরীরচর্চা করাকালীন সারা শরীরে রক্তের প্রবাহে এতটাই উন্নতি ঘটে যে স্ট্রোকের আশঙ্কাও চোখে পরার মতো হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে আমাদের দেশের যুবসমাজের মধ্যে যেহারে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণাত বেড়েছে, তাতে নিয়মিত শরীরচর্চার প্রয়োজন যে আরও বাড়ছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: কর্মক্ষেত্রের প্রতিযোগিতা আজকাল এতটাই বেড়ে গেছে যে সেই চাপের কারণে শরীর যাচ্ছে ভেঙে। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতেত নিয়মিত শরীরচর্চার প্রয়োজন যে বাড়ছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ওজনও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
৩. ডায়াবেটিস রোগ দূরে থাকে: একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রকাশ করা রিপোর্টে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে আমাদের দেশ সারা বিশ্বের মধ্যে ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিমাণে হয়েছে। শুধু তাই নয়, যে হারে ভারতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে পরিস্থিতি যে আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই তো সময় থাকতে থাকতে সাবধান হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আর এক্ষেত্রে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবেন কিভাবে? খুব সহজ, নিয়মিত শরীরচর্চা করা শুরু করুন। দেখবেন ডায়াবেটিস রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। কারণ নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শকর্রার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে: একথা নিশ্চয় কারও অজানা নেই যে ওজন বৃদ্ধি মোটেও সুখের খবর নয়। কারণ শরীরে মেদের পরিমাণ যত বাড়তে থাকে, তত ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের রোগের মতো মারণ ব্যাধি ঘারে চেপে বসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমতে থাকে আয়ু। তাই তো ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করা মাস্ট!
৫. পিঠের ব্যথা কমে: টানা চেয়ারে বসে কাজ করতে করতে পিঠের হাল বেহাল? তাহলে তো বন্ধু আজ থেকেই অল্প বিস্তর শরীরচর্চা শুরু করতে হয়! কারণ বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত শরীরচর্চা করলে পেশীর কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটিও এতটা বেড়ে যায় যে পিঠের অস্বস্তি কমতে একেবারে সময়ই লাগে না।
৬. অস্টিওপরোসিসেসর মতো রোগ দূরে থাকে: নিয়মিত ওয়েট টের্নিং করার অভ্য়াস করলে হাড়ের স্বাস্থ্য়ের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা অস্টিওপরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।